নোট বাতিল ছিল এক সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত। জাল নোট, সন্ত্রাসে আর্থিক মদত, কালো টাকা এবং কর ফাঁকি রোখার এক বৃহত্তর রণকৌশলেরই তা অঙ্গ। সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চে হলফনামা দিয়ে আজ এই কথা জানিয়েছে কেন্দ্র।
২০১৬ সালে ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সাংবিধানিক বৈধতার প্রশ্নটি নিয়ে শুনানি চলছে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে। বিচারপতি এস এ নাজ়িরের নেতৃত্বাধীন সেই বেঞ্চের কাছে দেওয়া হলফনামায় কেন্দ্র বলেছে, নোট বাতিল একটি অর্থনৈতিক নীতিগত সিদ্ধান্ত, যা সংসদের রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক আইন (১৯৩৪)-এর দেওয়া ক্ষমতা অনুযায়ী নেওয়া হয়েছিল। পরে সংসদে আইন এনে তাতে সিলমোহরও দেওয়া হয়। কেন্দ্রের বক্তব্য, অর্থনৈতিক নীতিতে পরিবর্তন আনার ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই পদক্ষেপ রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের কেন্দ্রীয় বোর্ডের সুনির্দিষ্ট সুপারিশের ভিত্তিতেই করা হয়েছিল। ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সেই সুপারিশ কার্যকর করার জন্য রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক একটি খসড়া প্রকল্প প্রস্তাব করেছিল। কেন্দ্রীয় সরকার তা খতিয়ে দেখার পরেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে ওই সিদ্ধান্ত কার্যকর করে। তবে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির কথা মাথায় রেখে বাস, ট্রেন বা বিমানের টিকিট কাটা, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা বা এলপিজি সিলিন্ডারের দাম মেটানোর মতো ক্ষেত্রে বাতিল নোটকেও ছাড় দেওয়া হয়েছিল।
কেন্দ্রের বক্তব্য, জাল নোট, কালো টাকা বা সরকার-বিরোধী কাজকর্মে আর্থিক মদত বন্ধ করার পাশাপাশি সংগঠিত ক্ষেত্রের প্রসার, ডিজিটাল লেনদেন, যোগাযোগ ও করের আওতা বাড়ানো, ব্যবসার খরচ কমানো, আরও বেশি মানুষকে ব্যাঙ্কের পরিষেবার আওতায় নিয়ে আসা এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রের দীর্ঘদিনের ত্রুটিবিচ্যুতি দূর করার মতো বিষয়গুলিকে সরকারের অর্থনৈতিক নীতিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। পরের শুনানি ২৪ নভেম্বর।