নজীব জঙ্গ ও মণীশ সিসৌদিয়া
জ্বর-ডেঙ্গি-চিকুনগুনিয়ায় কাবু দিল্লি। হাসপাতালগুলি উপচে পড়ছে রোগী। এখন পর্যন্ত মশাবাহিত এই দুই রোগের বলি হয়েছেন ৩০ জন। এমন সঙ্কটের সময়ে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল নেই রাজ্যে। বেঙ্গালুরুতে গিয়েছেন গলার অস্ত্রোপচারের জন্য। ফিনল্যান্ডে উপ-মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়া। দিল্লিতে নেই পরিবেশ ও খাদ্যমন্ত্রী ইমরান হুসেন। হজ করতে গিয়েছেন। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী গোপাল রাই দলের হয়ে প্রচারে ব্যস্ত ছত্তীসগঢ়ে। কার্যত অভিভাবকহীন রাজধানী! এই পরিস্থিতিতে উপ-রাজ্যপাল নজীব জঙ্গ আজ সিসৌদিয়াকে সফর কাটছাঁট করে ফিরে আসতে নির্দেশ দিয়েছেন।
সিসৌদিয়া ফিনল্যান্ডে গিয়েছেন ১২ তারিখ। সেখানে তিনি খোশ মেজাজে সময় কাটাচ্ছেন— এমন কিছু ছবিও সামনে এসেছে আজ। যা নিয়ে বিরোধীরা তুলোধোনা করছেন আপ সরকারকে। আপ শিবিরের অবশ্য বক্তব্য, উপ-রাজ্যপাল নিজেই তো দিল্লি বাইরে ছিলেন। তা ছাড়া, শিক্ষা দফতরের ভারও রয়েছে উপমুখ্যমন্ত্রীর সিসৌদিয়ার হাতে। তিনি ফিনল্যান্ডে গিয়েছেন শিক্ষা সংক্রান্ত বৈঠকে যোগ দিতে। ১৮ তারিখই তাঁর দেশে ফিরে আসার কথা। তাঁর সফর শেষ হওয়ার মুখে নজীবের এই নির্দেশের মধ্যে স্রেফ রাজনীতিই দেখেছেন আপ নেতারা।
কী বলছেন সিসৌদিয়া? বিরোধীদের আক্রমণের জবাবে এ দিন তিনি বলেছেন, ‘‘দিল্লির স্কুলে পড়াশোনার উন্নতি ঘটাতে বিদেশের স্কুলশিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে যাওয়াটা কোনও পাপ করা নয়।’’
বিরোধীরা অবশ্য রাজনৈতিক আক্রমণ করতে ছাড়ছে না। দিল্লির সঙ্কট নিয়ে আপ নেতৃত্ব উদাসীন, এই অভিযোগ তুলে আজ পথে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে কংগ্রেস। মুখ্যমন্ত্রী ও আপের অন্য মন্ত্রীদের অনুপস্থিতি নিয়ে ‘ভাগোড়া দিবস’ পালন করেছে। পাশাপাশি, দিল্লিতে আপ সরকার ও বিজেপি-শাসিত পুরসভাগুলির ব্যর্থতা নিয়ে একটি চার্জশিটও পেশ করেছে কংগ্রেস। কেজরীবাল এবং উপ-রাজ্যপাল নজীব জঙ্গকে বিঁধেছেন দিল্লি কংগ্রেসের সভাপতি অজয় মাকেন। তাঁর দাবি, কেজরীবাল ও সিসৌদিয়া অবিলম্বে দিল্লি ফিরুন। কেন্দ্র অবিলম্বে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকুক ডেঙ্গি-চিকুনগুনিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে।
পিছিয়ে নেই বিজেপিও। তাদের নেতা নলিন কোহলি আপের কড়া নিন্দা করে বলেছেন, ‘‘এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। দিল্লির মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হচ্ছে। দলের নাম করে নেতা-মন্ত্রীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। জনগণের অর্থ ধ্বংস করছেন। এটা মেনে নেওয়া যায় না।’’
কেন্দ্র এ দিন দিল্লি সরকারের কাছে ডেঙ্গি ও চিকনগুনিয়ায় মৃতদের মেডিক্যাল রিপোর্ট এবং মৃত্যু সংক্রান্ত রিপোর্ট চেয়েছে। দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনের সঙ্গে দেখা করে সব সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জে পি নড্ডা। কেউ যাতে বিনা চিকিৎসায় না ফেরেন, সে দিকে জোর দেন দু’জনেই। বৈঠকের পর জৈন জানান, ডেঙ্গি ও চিকুনগুনিয়ায় আক্রান্তদের জন্য দিল্লির সব হাসপাতালে কেন্দ্র ১০% বেড সংরক্ষণ করবে। এতে দিল্লিতে ওই রোগে আক্রান্তদের জন্য বাড়তি ১০০০ বেডের ব্যবস্থা করা যাবে হাসপাতালগুলিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy