ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার। ছবি: সংগৃহীত।
পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে মুখ খুলে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একসঙ্গে নিশানা করলেন সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মানিক সরকার। তাঁর দাবি, বাংলায় পঞ্চায়েত ভোটের নামে যে ভাবে ‘প্রহসন’ হয়েছে এবং গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে, তাতে দেশ জুড়ে বিজেপি-বিরোধী ঐক্যে মমতার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে আরও বড়সড় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। নির্বাচনকে ঘিরে পশ্চিমবঙ্গ এবং ত্রিপুরা, দুই রাজ্যে বিজেপির দু’রকম ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
আজ আগরতলায় পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ভোটে ‘গণতন্ত্র হত্যা’-র অভিযোগে প্রতিবাদ মিছিল ও সভা করে সিপিএম। পঞ্চায়েত ভোটের ঘটনা নিয়ে সারা দেশেই প্রচার কর্মসূচি নিয়েছে তারা। তারই অঙ্গ হিসেবে আগরতলা প্যারাডাইস চৌমহনীতে এ দিন সভা ছিল। সেখানে মানিক বলেন, ‘‘মানুষকে নির্বিঘ্নে ভোট দেওয়ার পরিস্থিতি করে দিতে পারতেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা হলে পঞ্চায়েত ভোটের মাধ্যমে নিজের জনপ্রিয়তা যাচাই করে নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি বুঝতে পেরেছেন, তাঁর থেকে গ্রাম বাংলার মানুষ মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে। ফলে ভোট তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে যাবে।’’
মানিকের কটাক্ষ, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে দাবি করছেন, বিজেপির শাসনে দেশে সংবিধান এবং গণতন্ত্র আক্রান্ত। কিন্তু তিনিই তো পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ভোটে গণতন্ত্রকে হত্যা করলেন। নিজেও বামফ্রন্টের সময়ে ভোটে জয়ী হয়ে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন। তখন কিন্তু তিনি ভোটে কারচুপি হয়েছে বলে বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করেননি।’’ মমতার এই ভূমিকার প্রভাব লোকসভা ভোটের বিরোধী-জোটে পড়বে বলে জানান মানিক।
রাজ্যপাল বোস সাংবিধানিক এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে কাজ করেছেন বলে অভিযোগ তুলে তাঁর ভূমিকারও তীব্র সমালোচনা করেন মানিক। বলেন, ‘‘রাজ্যপাল নিজেও ভোটের মুখে হম্বিতম্বি করেছেন। রাজ্য সরকারকে পাশে রেখে (এড়িয়ে) রাজভবনে বিকল্প অভিযোগ কেন্দ্র খুলেছেন, যা সংবিধানের দিক থেকে ঠিক নয়। রাজ্যপাল মুখ্যসচিব ও ডিজি-কে ডেকে কথা বলতে পারতেন। তা না করে তিনি মানুষের অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দেশ দিয়ে গিয়েছেন। এটাও সংবিধান-বিরোধী।’’ বস্তুত, রাজ্যপালের ক্ষমতার বিষয়ে সি ভি আনন্দ বোস কতটা সচেতন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মানিক। তাঁর দাবি, জনতাকে বিভ্রান্ত করতে বোস বাহ্যিক ভাবে ভূমিকা নিতে চেষ্টা করেছেন। কার্যত তিনি কিছুই করেননি।
এর আগে ত্রিপুরায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি ৬৯ শতাংশ পঞ্চায়েতে বিনা ভোটে জয়ী হয়েছিল। তার পরে একাধিক বার বিজেপির বিরদ্ধে ভোটে কারচুপি এবং সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠেছিল। সেই প্রসঙ্গ টেনে বাংলার তুলনা করে মানিকের অভিযোগ, যে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র বাঁচানোর কথা বলে, তাদের আমলেই ত্রিপুরায় ভোটে কারচুপি হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy