Advertisement
০৪ মে ২০২৪
বিহার পরীক্ষা কেলেঙ্কারি

ক্ষুব্ধ নীতীশ, তদন্ত ডিজি-র হাতে

বিহারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে তদন্তের ভার সরাসরি রাজ্য পুলিশের ডিজির হাতে তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। বিহারের উচ্চমাধ্যমিকে মেধা তালিকার শীর্ষে থাকা দুই পড়ুয়া রুবি রায় ও সৌরভ শ্রেষ্ঠর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় শুরু হয় বিতর্ক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পটনা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০১৬ ০২:৪৫
Share: Save:

বিহারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে তদন্তের ভার সরাসরি রাজ্য পুলিশের ডিজির হাতে তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার।

বিহারের উচ্চমাধ্যমিকে মেধা তালিকার শীর্ষে থাকা দুই পড়ুয়া রুবি রায় ও সৌরভ শ্রেষ্ঠর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় শুরু হয় বিতর্ক। বৈশালীর ভগবানপুরে আরজেডি নেতা বাচ্চাপ্রসাদের বিষুণ রায় কলেজের পড়ুয়ারা কোন পথে বার বার মেধা তালিকার শীর্ষে পৌঁছে যাচ্ছে প্রশ্ন ওঠে তা নিয়েও। পরে ওই কলেজের অনুমোদন সাময়িক ভাবে সাসপেন্ড করে বিহার বিদ্যালয় শিক্ষা সমিতি। শুরু হয় তদন্ত।

কিন্তু আজ সকাল থেকে তদন্তের পদ্ধতি নিয়েও বিতর্ক বাধে। কারণ, বিষয়টি নিয়ে বিহার বিদ্যালয় শিক্ষা সমিতি এবং রাজ্য শিক্ষা দফতর দু’টি বিচারবিভাগীয় কমিটি তৈরি করার কথা ঘোষণা করে। আজ সকাল থেকেই বিহার বিদ্যালয় পরীক্ষা সমিতির দফতরে বৈঠক শুরু হয়। সেই বৈঠকে লালকেশ্বর প্রসাদ সিংহ-সহ কর্তারা হাজির ছিলেন। অন্য দিকে, রাজ্য শিক্ষা দফতরও তার তদন্ত কমিটি তৈরির কাজ শুরু করে দেয়। তিন সদস্যের সেই কমিটিতে রাখা হয় বিহার শিক্ষা পরিকাঠামো উন্নয়ন কর্পোরেশনের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সঞ্জীবন সিংহ, মধ্যশিক্ষার ডিরেক্টর রাজীব রঞ্জন এবং জনশিক্ষা প্রসারের ডিরেক্টর বিনোদানন্দ ঝাকে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, দু’টি বিচারবিভাগীয় কমিটি একই ঘটনার তদন্ত করতে পারে না।

মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর, সকালে বিষয়টি জেনেই চটে যান নীতীশ। এরপরেই মুখ্যসচিব অঞ্জনীকুমার সিংহের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলপ্রকাশ নিয়ে যা হয়েছে তাতে বিহারের যথেষ্ট বদনাম হয়েছে। বিদ্যালয় পরীক্ষা সমিতির দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। সে কারণে তাঁরা তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার পরেও ব্যবস্থা নিতে অনেক দেরি হবে। এ ছাড়া একই দফতরের মধ্যে সমন্বয় না থাকার বিষয়টিও সামনে এসেছে। মুখ্যসচিবকে দু’টি কমিটি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। মুখ্যসচিবের মৌখিক নির্দেশে কোনও তরফই বিকেল পর্যন্ত সক্রিয় হয়নি। এর পরেই বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার সকলকে ডেকে পাঠান।

বিহার বিদ্যালয় পরীক্ষা সমিতির বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন নয়। এমনকী অভিযুক্ত বিষুণ রায় কলেজের বিরুদ্ধেও এর আগে বারবার অভিযোগ উঠেছে। কয়েক বার ফল স্থগিত করা হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অভিযোগ, বিদ্যালয় পরীক্ষা সমিতিতে একটি বড় চক্র সক্রিয় রয়েছে। সেই চক্রের মাধ্যমেই ফলপ্রকাশ নিয়ন্ত্রণ হয়। লালকেশ্বর সিংহের বিরুদ্ধেও বারবার অভিযোগ হয়েছে। তবে তাতে কাজ হয়নি।

বৈঠক থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের ‘সব ঠিক আছে’ বলে গাড়িতে উঠে পড়েন বিহার বিদ্যালয় শিক্ষা সমিতির চেয়ারম্যান লালকেশ্বর প্রসাদ সিংহ। শিক্ষামন্ত্রী অশোক চৌধুরীও কোনও মন্তব্য করতে চাননি। কিন্তু জেডিইউ সূত্রে খবর, লালকেশ্বরের কাজকর্ম নিয়ে যারপরনাই ক্ষুব্ধ নীতীশ। এ দিনের বৈঠকে তিনি লালকেশ্বরকে জানান, বিদ্যালয় শিক্ষা সমিতির গা ছাড়া মনোভাবের জন্যই উচ্চমাধ্যমিক নিয়ে এই বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Exam scam Nitish Kumar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE