প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর রেডিয়ো-বার্তা ‘মন কি বাত’ তখন সবে শুরু হয়েছে। রবিবার ঘড়িতে ঠিক বেলা ১১টা। দিল্লি-হরিয়ানা সীমানার সিংঘুতে টানা ৩০ দিন আন্দোলনে বসে থাকা কৃষকদের একটি দল বেরিয়ে পড়লেন থালা-বাটি-খুন্তি-টিনের ক্যানেস্তারা হাতে। বাজাতে থাকলেন প্রাণপণে। দাবি, প্রধানমন্ত্রীর ‘অনুপ্রেরণাতেই’ কেন্দ্রের কানে ‘কিসান কি বাত’ পৌঁছে দিতে এই পথ বেছে নিয়েছেন তাঁরা!
মুহূর্তে ফিরে এল আর এক রবিবারের স্মৃতি। সে দিন, ২২ মার্চ, বিকেল পাঁচটায় পাঁচ মিনিটের জন্য দেশের সবাইকে বাড়ির ছাদে, ব্যালকনিতে বা জানলায় এসে থালা, বাটি, শাঁখ, ঘণ্টা বাজাতে বলেছিলেন মোদী। কোভিডের বিরুদ্ধে ডাক্তার, নার্সের মতো যাঁরা একেবারে সামনে থেকে লড়ছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই ওই ‘থালি বাজাও’-এর ডাক দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিবাদী কৃষকদের দাবি, নিজেদের সমস্যার কথা সরকারের কানে পৌঁছে দিতে মোদীর দেখানো সেই রাস্তাই এ দিন বেছে নিয়েছেন তাঁরা।
বছরের শেষ ‘মন কি বাত’। তাই স্বাভাবিক ভাবেই নানা প্রসঙ্গ ঘুরেফিরে আসছিল প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতায়। ‘আত্মনির্ভর ভারতের’ মন্ত্রে নতুন বছরে সবাইকে দেশে তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহারের সঙ্কল্প করতে বললেন। বাদ গেল না সারা দেশে জঙ্গলে চিতার সংখ্যাবৃদ্ধির খুশির খবরও (যদিও আসলে বেড়েছে চিতাবাঘের সংখ্যা। চিতার নয়)। ঠিক তার আগে শিখ গুরুদের শ্রদ্ধা জানালেন প্রধানমন্ত্রী। স্মরণ করলেন গুরু গোবিন্দ সিংহ ও গুরু তেগ বাহাদুরকে। কিন্তু তাতেও চিঁড়ে ভিজল না। সিংঘু, টিকরি সীমানায় আন্দোলনে বসে থাকা পঞ্জাব, হরিয়ানার কৃষকেরা বরং আরও জোরে থালা পেটাতে শুরু করলেন।