Advertisement
০৩ মে ২০২৪

মোদী চান দ্বিগুণ, মমতা আড়াই পার

পশ্চিমবঙ্গ-সহ অনেক রাজ্যই অভিযোগ করে থাকে, কেন্দ্র নিজের ইচ্ছেমতো প্রকল্প তৈরি করে  চাপিয়ে দিচ্ছে। উল্টো দিকে রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ থেকেও বঞ্চনা করছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৮ ০৫:২৫
Share: Save:

চাষিদের আয় ২০২২-এর মধ্যে দ্বিগুণ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ইতিমধ্যেই সেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলেছে বলে মোদীকে জানিয়ে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ দিল্লি রওনা দেওয়ার ঠিক আগে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে এক চিঠি পাঠিয়েছেন তিনি। সেটির বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে চাষিদের আয় ইতিমধ্যেই আড়াই গুণেরও বেশি বেড়ে গিয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গ-সহ অনেক রাজ্যই অভিযোগ করে থাকে, কেন্দ্র নিজের ইচ্ছেমতো প্রকল্প তৈরি করে চাপিয়ে দিচ্ছে। উল্টো দিকে রাজ্যের প্রাপ্য অর্থ থেকেও বঞ্চনা করছে। সংসদ ভবনে বসে ফেডারাল ফ্রন্টের সলতে পাকানোর সময়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রাজ্যগুলির এই ক্ষোভকেও কাজে লাগালেন মমতা। এ দিন টিআরএস, টিডিপি থেকে শিবসেনা, যে দলের নেতাই মমতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন, তাঁদেরই ওই চিঠির কপি দিয়েছেন তিনি। মহারাষ্ট্রের ‘স্বাভিমানী পক্ষ’-এর সাংসদ রাজু শেট্টি দেখা করতে এলে তাঁকেও চিঠির কপি দেন মমতা।

এ চিঠি অবশ্য মোদীরই এক চিঠির জবাব। প্রধানমন্ত্রী গত ৯ মার্চ ২০২২-এর মধ্যে চাষিদের আয় দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন। জবাবি চিঠিতে মমতা জানিয়েছেন, তাঁর সরকার ২০১১ সালে ক্ষমতার আসার পরেই ছোট ও প্রান্তিক চাষিদের আর্থ-সামাজিক উন্নতির চেষ্টা করে চলেছে। কারণ তাঁরাই রাজ্যের ৯৫% জমি চাষ করেন। এতে চাষিদের আয় ২.৬ গুণ বেড়েছে। ২০১০-এ চাষিদের গড় বার্ষিক আয় ছিল ৯১ হাজার টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ২ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা। চাষিদের থেকে সরাসরি ন্যূনতম সহায়ক মূল্য তথা এমএসপি-তে ধান কেনা হচ্ছে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে টাকা চালে যাচ্ছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। আগামী খরিফ মরসুমে ৫২ লক্ষ মেট্রিক টন ধান কিনবে রাজ্য। চাষিদের ভাল ফসলের দাম পৌঁছে দিতে কৃষি পণ্য বাজার কমিটি আইনে দু’বার সংশোধনও হয়েছে।

এর আগে অনগ্রসর জেলা উন্নয়নের কেন্দ্রীয় প্রকল্পটি নিয়ে আপত্তি তুলে তা থেকে সরে দাঁড়িয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। রাজ্যের যুক্তি, কেন্দ্র নিজের প্রকল্প তৈরি করে তাতে রাজ্যকে খরচ করতে বলছে। অথচ রাজ্যের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে চিঠি লিখে আপত্তি জানান। তাঁর অভিযোগ, বাজেটে পেট্রল ও ডিজেলে মোট ৮ টাকা উৎপাদন শুল্ক কমিয়ে ৮ টাকা সড়ক ও পরিকাঠামো সেস বসানো হয়েছে। এতে আমজনতার কোনও সুরাহা হয়নি। অথচ কেন্দ্রীয় করে রাজ্যগুলির ভাগ কমে গিয়েছে। কারণ, উৎপাদন শুল্ক বাবদ আয় রাজ্যগুলির মধ্যে ভাগ করতে হলেও সেস বাবদ আয় পুরোটাই কেন্দ্র নিজের ঝুলিতে রাখে।

অমিতের মতে, কেন্দ্রের এই অস্বাস্থ্যকর পদক্ষেপ রাজ্যের আর্থিক স্বাস্থ্য নষ্ট করবে। এ’টি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোরও বিরোধী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE