Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Lalu Prasad Yadav

নির্বাচনের আগে দলিত নেতা খুনে এফআইআর লালুপুত্র তেজস্বী ও তেজপ্রতাপের বিরুদ্ধে

রবিবার উত্তর-পূর্ব বিহারের পূর্ণিয়া জেলায় নিজের বাড়িতে খুন হন দলিত নেতা তথা লালুপ্রসাদ যাদবেরই রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেটি) প্রাক্তন সদস্য শক্তি মালিক।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
পটনা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২০ ১৪:২৯
Share: Save:

সামনে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে দলিত নেতার খুনে নাম জড়াল লালুপ্রসাদ যাদবের দুই ছেলে তেজস্বী ও তেজপ্রতাপ যাদবের। তাঁরাই ষড়যন্ত্র করে তাঁর স্বামীকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ নিহতের স্ত্রীর। তেজস্বী ও তেজপ্রতাপের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। সেই সুযোগে মাঠে নেমে পড়েছে বিজেপি। নিহত ও তাঁর পরিবারের জন্য ন্যায্য বিচারের দাবিতে সরব হয়েছে তারা।

রবিবার উত্তর-পূর্ব বিহারের পূর্ণিয়া জেলায় নিজের বাড়িতে খুন হন দলিত নেতা তথা লালুপ্রসাদ যাদবেরই রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (আরজেটি) প্রাক্তন সদস্য শক্তি মালিক। গতকাল সকাল ছ’টা নাগাদ মুখে গামছা বাঁধা একদল লোক বাড়িতে ঢুকে শক্তি মালিকের মাথা ও বুকে পর পর তিনটি গুলি চালায় বলে জানা গিয়েছে। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। তাঁর ঘর থেকে একটি দেশি পিস্তল এবং খালি কার্তুজ উদ্ধার করে পুলিশ। তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে নিহতের স্ত্রী তেজস্বী ও তেজপ্রতাপের নাম নেন বলে জানা গিয়েছে।

পূর্ণিয়ার সুপারিনটেন্ডেন্ট অব পুলিশ বিশাল শর্মা বলেন, ‘‘স্থানীয় খাজাঞ্চি হাট থানায় তেজস্বী যাদব, তেজপ্রতাপ যাদব এবং আরও চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন নিহতের স্ত্রী খুশবুদেবী। ষড়যন্ত্র কষে তাঁর স্বামীকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।’’

আরও পড়ুন: কর্নাটকে উপনির্বাচনের মুখে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির বাড়িতে সিবিআই হানা​

তেজস্বী এবং তেজপ্রতাপ ছাড়া আরও যাঁদের নাম করেছেন খুশবুদেবী, তাঁরা হলেন, অনিলকুমার সাধু, কালো পাসোয়ান, তাঁর স্ত্রী সুনীতাদেবী এবং মনোজ পাসোয়ান। এঁদের মধ্যে অনিলকুমার সাধু হলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানের জামাই। রাজ্যে আরজেডি-র তফসিলি বিভাগের সভাপতি তিনি। আসন সমঝোতা নিয়ে মতবিরোধের জেরে সম্প্রতি বিজেপি-জেডিইউ জোট ছেড়ে একাই বিহারে নির্বাচন লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন রামবিলাসের ছেলে চিরাগ পাসোয়ান। অনিলকুমার নিজেও একসময় লোক জনশক্তি পার্টির (এলজেপি) সদস্য ছিলেন।

নিহত শক্তি মালিক গত বছরই আরজেডি-তে যোগ দেন। দলের তফসিলি বিভাগের সচিব নিযুক্ত করা হয় তাঁকে। কিন্তু নির্বাচনী চিকিট পাওয়া নিয়ে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে মতবিরোধ দেখা দেয় তাঁর। তার পর সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো আপলোড করে তেজস্বী ও অনিলকুমারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনেছিলেন তিনি। নির্বাচনী টিকিটের বিনিময়ে তাঁর কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়েছিল বলে দাবি করেন। ওই ভিডিয়োটি সামনে আসার পরই দল থেকে বহিষ্কার করা হয় তাঁকে। এর পর নির্দল প্রার্থী হিসেবেই নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি।

নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলেই তেজস্বী এবং আরজেডি নেতারা মিলে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে ষড়ন্ত্র কষেন বলে অভিযোগ শক্তি মালিকের স্ত্রী খুশবুদেবীর। আরজেডি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে স্বামীর অভিযোগের ভিডিয়োগুলি পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে রাজ্যে বিজেপির মুখপাত্র নিখিল আনন্দের দাবি, ‘‘আরজেটি নেতাদের চরিত্রই এমন। সম্পত্তি বাড়াতে দলের টিকিট বিক্রি করেন ওঁরা। শক্তি মালিকের পরিবারকে ন্যায বিচার দিতেই হবে।’’

আরও পড়ুন: হাথরস স্টেশনে বসে বিবেকানন্দ, এগিয়ে এলেন স্টেশন মাস্টার...​

তবে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে আরজেডি। ওই এফআইআরটি সম্পূর্ণ ভবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিযোগ করেছে তারা। দলের মুখপাত্র মৃত্যুঞ্জয় তিওয়ারি বলেন, ‘‘তেজস্বী যাদব এবং তেজপ্রতাপের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন। রীতিমতো পরিকল্পনা করে এফআইআরটি সাজানো হয়েছে। এতে কোনও সত্যতা নেই। গোটা ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে।’’

তবে এই প্রথম নয়। বিহারে নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে, ততই একের পর এক রাজনীতিকের খুনের ঘটনা সামনে আসছে। সম্প্রতি পটনায় বিজেপি নেতা রাজেশকুমার ঝা-কে গুলি করে খুন করে একদল দুষ্কৃতী। তার আগে সংযুক্ত জনতা দলের নেতা (জেডিইউ) প্রিন্স সিংহ বজরঙ্গীকে লক্ষ্য করেও এলোপাথাড়ি গুলি চলে। তাতে প্রিন্স সিংহ বজরঙ্গী এবং তাঁর এক সঙ্গীর মৃত্যু হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE