Advertisement
০৫ মে ২০২৪

নিষেধাজ্ঞার আর্জি ফের ওড়াল কোর্ট

বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী-সহ যে সব রাজনৈতিক নেতা এই ছবির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন, তাঁদের ভূমিকারও কড়া নিন্দা করেছে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের তিন সদস্যের বেঞ্চ।

পদ্মাবতী ছবির একটি দৃশ্য।

পদ্মাবতী ছবির একটি দৃশ্য।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৪৩
Share: Save:

পরপর তিন বার! দেশে ও বিদেশে পদ্মাবতী ছবিটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার আর্জি আজ ফের খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট।

সেই সঙ্গে, বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী-সহ যে সব রাজনৈতিক নেতা এই ছবির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন, তাঁদের ভূমিকারও কড়া নিন্দা করেছে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের তিন সদস্যের বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টের মতে, দায়িত্বশীল পদে থেকে এই ধরনের মন্তব্য করাটা আদৌ কাম্য নয়। এটা কার্যত ‘সেন্ট্রাল বোর্ড অব ফিল্ম সার্টিফিকেশন’-কে প্রভাবিত করা। ছবির পরিচালক ও নির্মাতাকে গ্রেফতার চেয়ে আইনজীবী এম এল শর্মা যে আবেদন করেছিলেন সেটিও শীর্ষ আদালত খারিজ করে দিয়েছে ‘গুরুত্বহীন’ আখ্যা দিয়ে।

ছবিটিকে রোখার চেষ্টা আদালতে ধাক্কা খাওয়ার পরেই আজ প্রথম বার পদ্মাবতী-প্রশ্নে মুখ খোলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। সুপ্রিম কোর্টের সুরেই ছবিটির ভবিষ্যৎ সেন্সর বোর্ডের উপরেই ছেড়ে দিয়েই আইন বাঁচিয়ে বলেন, ‘‘সেন্সর বোর্ড নিশ্চয়ই সব দিক খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্ত নেবে।’’ একই সঙ্গে অমিত বুঝিয়ে দেন, গুজরাত ভোটের আগে অন্তত বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে নিষেধাজ্ঞা উঠছে না।

তাঁর বক্তব্য, কোথাও বলা হয়নি পাকাপাকি নিষেধাজ্ঞা জারি করা হল। বলা হয়েছে, বিতর্ক না মেটা পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা থাকবে।

একসুর নীতীশ কুমারও। ছবিটি নিয়ে অনেক মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে প্রকাশ্য অবস্থান নিয়েছেন, আজ তার কড়া সমালোচনা করেন তিনি। কিন্তু এরই সঙ্গে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, ‘‘বিতর্ক না মেটা পর্যন্ত বিহারেও ওই ছবি দেখানো হবে না।’’ বিহারে বেশ কিছু এলাকায় রাজপুত ভোট নির্ণায়ক শক্তি। লোকসভা ভোটের আগে সেই ভোটব্যাঙ্ককে চটাতে নারাজ, হালে বিজেপি জোটে ফেরা নীতীশ।

বিরোধীদের দাবি, এই সবই আসলে গুজরাত ভোটের আগে মেরুকরণের কৌশল। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপাণী রাজ্যের রাজপুত ভোট টানতেই পদ্মাবতীর উপরে তড়িঘড়ি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তবে এতেও পুরো তুষ্ট নন গুজরাতের রাজপুত সমাজের একাংশ। গাঁধীনগরে তাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন এই অভিযোগ তুলে যে, এই নিষেধাজ্ঞা রূপাণীর গিমিক। ভোট হয়ে গেলেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবেন।

রাজনীতির ফাঁসে বাগ্‌স্বাধীনতার তবে কী হবে? জবাবে জোড়া যুক্তি সামনে রেখেছেন অমিত। এক, কাউকে রোখা হচ্ছে না। পরিচালক সঞ্জয় লীলা ভন্সালী নিজেই জানিয়েছেন, দেশে সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত, বিদেশেও ছবি মুক্তি পাবে না। তাঁর বক্তব্য শুনবে সংসদীয় কমিটিও। দুই, মানুষের আবেগ। অমিতের কথায়, ‘‘মানুষের আবেগে যাতে আঘাত না লাগে সেই বিষয়টিও দেখা দরকার। ইতিহাসের কোনও বিষয় নিয়ে ছবি তৈরি হলে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের সত্যতাও যাচাই করা দরকার। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞেরা এ সব দেখে মতামত দেবেন।’’ সুপ্রিম কোর্টের অবস্থান জেনে অমিত আজ মুখ খুললেও প্রধানমন্ত্রী কিন্তু নীরবই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE