Advertisement
E-Paper

হাইকোর্টে চাকরির নামে প্রতারণা

হোক না চৌকিদারের চাকরি। হাইকোর্ট বলে কথা— যেখানে ন্যায়-অন্যায়ের বিচার হয়। তা-ই সেখানে চাকরির আশ্বাস পেয়ে উচ্চ আদালতের পিওন মুন্না বর্মনের হাতে ২ লক্ষ টাকা দিতে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন শিবপূজন ধোবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৬

হোক না চৌকিদারের চাকরি। হাইকোর্ট বলে কথা— যেখানে ন্যায়-অন্যায়ের বিচার হয়। তা-ই সেখানে চাকরির আশ্বাস পেয়ে উচ্চ আদালতের পিওন মুন্না বর্মনের হাতে ২ লক্ষ টাকা দিতে রাজি হয়ে গিয়েছিলেন শিবপূজন ধোবি।

একই এলাকায় বাড়ি দু’জনের। কাছাড় জেলার ময়নাগড়ে। সন্দেহের কারণ নেই। তার উপর মুন্না অনেক দিন ধরে হাইকোর্টে পিয়নের চাকরি করছেন। তাই কথাবার্তা পাকা করে নেন শিবপূজন। প্রথমে ১ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। নিযুক্তিপত্র হাতে পেয়ে বাকি টাকা।

স্টাম্প পেপারে সই করে ১ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়। কথার খেলাপ করেননি এলাকার যুবক মুন্না। কয়েক দিন আগে শিবপূজনের হাতে নিযুক্তিপত্র ধরিয়ে দেন। ১ নভেম্বর চাকরিতে যোগ দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে তাতে।

নিযুক্তিপত্র হাতে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা শিবপূজন ধোবি। এখন মুন্নাকে বাকি ১ লক্ষ টাকা মিটিয়ে দিতে হবে। তার আগে গ্রামের কয়েকজনের পরামর্শে তিনি নিযুক্তিপত্রের যথার্থতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চাইলেন। কিন্তু লেখাপড়া জানা যাকেই ৩-পাতার নিযুক্তিপত্রটি দেখান, তাঁরাই সংশয় প্রকাশ করেন। প্রথমত, নিযুক্তিপত্রে নিয়োগকর্তা দেখানো হয়েছে ডিরেক্টর এইচআরই। আদালতে এমন কোনও পদ নেই। দ্বিতীয়ত, ডিরেক্টর বলে উল্লেখ রয়েছে বটে, কিন্তু সেখানে কারও সই নেই। এ ছাড়া বেতন কাঠামো, চাকরির বিবরণ বলে যে সব লেখা রয়েছে, কোনও নিযুক্তিপত্রে সেগুলি থাকতে পারে না বলেই মন্তব্য করেন সবাই।

ফাঁদে পা দেওয়ার ব্যাপারটা বুঝে যান শিবপূজন। যোগাযোগ করেন হাইকোর্টের আইনজীবী প্রদীপ দত্তরায়ের সঙ্গে। প্রদীপবাবু আজ জানিয়েছেন, অন্য কোনও বিভাগের চাকরি হলে একে তিনি অন্যান্য মামলার মতই দেখতেন। কিন্তু এর সঙ্গে হাইকোর্টের মর্যাদা, সাধারণ মানুষের আইন-আদালতের প্রতি আস্থার ব্যাপার জড়িয়ে রয়েছে। তাই তিনি পুলিশে এজাহার বা প্রক্রিয়া মেনে নিম্ন আদালতে মামলার পরামর্শ না দিয়ে সোজা প্রধান বিচারপতির নজরে নেবেন বিষয়টি। সোমবার সমস্ত তথ্য-সহ চিঠি লিখবেন গৌহাটি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে।

এ দিকে মুন্না বর্মনকে টেলিফোনে ধরা হলে তিনি বলেন, ‘‘শিবপূজনের চাকরির জন্যই চেষ্টা করে চলেছি।’’ নিযুক্তিপত্র এবং লেনদেনের কথায় কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

এই ঘটনায় প্রদীপবাবুর অনুমান, জাল নিযুক্তিপত্রের একটি চক্র গড়ে উঠেছে হাইকোর্টে। তাঁর কথায়, ‘‘এখনই পুরো চক্রের মূলোৎপাটন করা না গেলে হাইকোর্টের নামে প্রতারিত হবেন বেকার যুবকরা।’’

Fraud case High court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy