ফলের বাগান তৈরি করে হনুমান-আতঙ্ক প্রতিরোধের পথে পা বাড়ল ত্রিপুরার বন দফতর। যে ধরনের ফল-মূল খেয়ে হনুমান বা বাঁদর বেঁচে থাকে, ত্রিপুরার বিলোনিয়ার তৃষ্ণা অভয়ারণ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে সে রকম ফলের বাগান তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে তারা। অভয়ারণ্যের আধিকারিক কুশ রায় বলেন, তৃষ্ণা সংলগ্ন জয়নগর, রাজনগর, প্রকাশনগর সহ কাকড়াবন, সোনামুড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বাঁদর এবং হনুমানের উৎপাত ক্রমশই বাড়ছে। খাদ্যের খোঁজে জনবসতিতে চলে আসছে তারা। গ্রামে এসে ফলের বাগান ও সব্জির খেত নষ্ট করছে। আক্রান্ত হচ্ছেন গ্রামবাসী ও এই সব বন্যপ্রাণীরাও। বন্যপ্রাণীরা যাতে বনেই থাকে, লোকালয়ে না যায় তার জন্য এই পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে বলে কুশবাবু জানান।
ত্রিপুরা বন দফতরের চিফ ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন অতুলকুমার গুপ্তর কথায়, হনুমান ও বাঁদরের উৎপাত থেকে জনবসতিকে রক্ষা করার উদ্দেশেই বন দফতর ফলের বাগান তৈরির ব্যাপারে প্রথম উদ্যোগী হয় তেলিয়ামুড়ায়। বনাঞ্চলে ফলের বাগান তৈরি করে বাঁদরের হাত থেকে বাঁচার এই প্রকল্পটি যথেষ্ট ফলপ্রসূ হয়েছে। সে কারণেই রাজ্যের যে সব অঞ্চলে হনুমান ও বাঁদরের উৎপাত বাড়ছে সেখানে মানুষের সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি বনেই তাদের খাবারের সংস্থান করার পরিকল্পনা করেছে বন দফতর।
দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ বা হিমাচল প্রদেশে হনুমান ও বাঁদরের যে পরিমাণ উৎপাত রয়েছে, ত্রিপুরায় সেই মাত্রায় বাঁদর বা হনুমানের উৎপাত না থাকলেও, এ রাজ্যেও হনুমান ও বাঁদর যে ভাল সংখ্যায় বাড়ছে তা স্বীকার করছেন দফতরের কর্তারা। বাঁদরের উৎপাত এ রাজ্যে বাড়ার আরও কারণ উল্লেখ করে অতুলবাবু বলেন, ‘‘বনাঞ্চলে মানুষের গতিবিধি বেড়েছে। হনুমান ও বাঁদর যেখানে ঘোরাফেরা করে, সেখানে মানুষের বসতি গড়ে উঠছে। বন্যপ্রাণীদের খাবারে হাত পড়ে যাচ্ছে। বন সংলগ্ন এলাকায় বসতি গড়ে ওঠায় মানুষের উপর হনুমানের আক্রমণও আনুপাতিক হারে বাড়ছে। বহু ব্যক্তি সংস্কারগত কারণে হনুমান ও বাঁদরকে খাওয়াতে ভালবাসেন। এই অভ্যাস হনুমান বা বাঁদরদের জনবসতিতে আসতেও প্রলোভিত করছে বলে তিনি মনে করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy