Advertisement
০৩ মে ২০২৪

অসমে উচ্চ মাধ্যমিকে টেক্কা দিল ছাত্রীরাই

শুধু প্রথম স্থানই নয়, অসমে এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কার্যত সব বিভাগেই পাশের হারে ছেলেদের টেক্কা দিল মেয়েরা। অসম উচ্চতর মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানানো হয়েছে, নগাঁওয়ের প্রাণশ্রী কলিতা প্রথম হয়েছেন। বাণিজ্য শাখায় মানসপ্রতীম গোস্বামীর সঙ্গে যুগ্ম প্রথম হয়েছেন শ্বেতা অগ্রবাল। কলা বিভাগে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান ছাত্রীদের দখলে। তিনটি বিভাগ মিলিয়ে প্রথম দশ জনের তালিকায় ৭২ জনের মধ্যে ৪৫ জনই মেয়ে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ৩১ মে ২০১৫ ০৩:০০
Share: Save:

শুধু প্রথম স্থানই নয়, অসমে এ বারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় কার্যত সব বিভাগেই পাশের হারে ছেলেদের টেক্কা দিল মেয়েরা।

অসম উচ্চতর মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ সূত্রে জানানো হয়েছে, নগাঁওয়ের প্রাণশ্রী কলিতা প্রথম হয়েছেন। বাণিজ্য শাখায় মানসপ্রতীম গোস্বামীর সঙ্গে যুগ্ম প্রথম হয়েছেন শ্বেতা অগ্রবাল। কলা বিভাগে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান ছাত্রীদের দখলে। তিনটি বিভাগ মিলিয়ে প্রথম দশ জনের তালিকায় ৭২ জনের মধ্যে ৪৫ জনই মেয়ে। বিজ্ঞানে ৯৫.৫১ শতাংশ ছাত্রী পাশ করেছে। সেখানে ছাত্রদের পাশের হার ৮৯.৩৪ শতাংশ। বাণিজ্য শাখায় ৯০.০৮ শতাংশ ছাত্রী ও ৮৪.৩৭ ছাত্র পাশ করেছে। কলা বিভাগেও ছাত্রীদের পাশের হার ৮০.০৮ শতাংশ। সেখানে ছাত্রদের পাশের হার ৭৭.৩৯ শতাংশ।

সংসদ জানিয়েছে, বিজ্ঞান শাখায় ৪৯০ নম্বর পেয়ে প্রথম হয়েছেন নগাঁও রামানুজন জুনিয়র কলেজের ছাত্রী প্রাণশ্রী কলিতা। ৪৮৮ পেয়ে দ্বিতীয় ডিব্রুগড় সল্টব্রুক আকাদেমির কৌশিক রঞ্জন হাজরিকা। তৃতীয় হয়েছেন নলবাড়ি শংকরদেব আকাদেমির কংকন বর্মণ। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৬।

বাণিজ্য শাখায় যুগ্ম ভাবে প্রথম গুয়াহাটি কমার্স কলেজের মানসপ্রতীম গোস্বামী ও কে সি দাস কমার্স কলেজের ছাত্রী শ্বেতা অগ্রবাল। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৬৯। বাণিজ্য শাখায় দ্বিতীয় ও তৃতীয়
স্থান পেয়েছেন কে সি দাস কমার্স কলেজের অঙ্কিত কেডিয়া (৪৬৭) ও অঙ্কিত পাটোয়ারি (৪৬৫)।

কলা শাখায় প্রথম হয়েছেন লখিমপুর জিনিয়াস আকাদেমির গুঞ্জন দত্ত। তিনি পেয়েছেন ৪৭৩ নম্বর। দ্বিতীয় স্থানে ডিব্রুগড় সল্টব্রুক আকাদেমির জ্যোতি সোনোয়াল, তিতাবর প্রাগজ্যোতিকা জুনিয়র কলেজের সায়িদা জারিন রেহনাজ ও নগাঁও রামানুজন জুনিয়র কলেজের সাগরিকা শর্মা। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৭২। তৃতীয় স্থান দখল করেছেন গুয়াহাটির সেন্ট মেরিজের ছাত্রী মৌসানা নাইটিংগেল চৌধুরী ও ডিব্রুগড় সল্টব্রুক আকাদেমির সুবাসনা কাশ্যপ। তাঁদের প্রাপ্ত নম্বর ৪৬৯।

বাণিজ্যে প্রথম তিনটি স্থানই দখল করায় গুয়াহাটির কে সি দাস কমার্স কলেজে ছিল উচ্ছাসের বন্যা। একই ভাবে প্রথম দশের মধ্যে দু’টি স্থান পেয়ে ডিব্রুগড়ে সল্টব্রুক, নগাঁওয়ের রামানুজন কলেজের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষকরাও খুশি।

তবে, খারাপ ফলের ধারা এ বারও বজায় থাকল বড়োভূমিতে। কলা বিভাগে মাত্র ৩৮.১৫ শতাংশ ছাত্রছাত্রী চিরাং-এ পাশ করেছেন। বাণিজ্যে কোকরাঝাড়ে উত্তীর্ণের হার ৩৩.৯৩ শতাংশ। বিজ্ঞানে উদালগুড়ি জেলায় পাশের হার ৫২.০৫ শতাংশ।

ধেমাজি জেলায় পাশের হার ৯৩.৭৭ শতাংশ। বাণিজ্যে চমক দিয়েছে ডিমা হাসাও। বরাবর খারাপ ফল করা এই জেলায় এ বার বাণিজ্যে পাশের হার ৯৫.৩১ শতাংশ। বিজ্ঞানে দরং জেলায় পাশের হার ৯৪.১৯ শতাংশ। নলবাড়ি, লখিমপুর, শিবসাগর, যোরহাটে পাশের হার ৯০ শতাংশের বেশি।

কাছাড়ের শ্রেয়াংশ ভোরা ও সৌরভ অগ্রবাল বাণিজ্য শাখায় চতুর্থ ও দশম স্থান অধিকার করেছেন। চতুর্থ স্থানাধিকারী শ্রেয়াংশ জৈন কমার্স কলেজের ছাত্র। তাঁর হাত ধরে ১৯ বছর পুরনো কলেজটি প্রথম এই মর্যাদা পেল। সেটি এখনও অসম উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের স্বীকৃতি পায়নি। তাই শ্রেয়াংশকে পরীক্ষায় বসতে হয়েছিল ‘প্রাইভেট’ পরীক্ষার্থী হিসেবে। অধ্যক্ষ অমরনাথ সিংহ আশাবাদী, এ বার স্বীকৃতি পেতে দেরি হবে না।

রামানুজ গুপ্ত জুনিয়র কলেজের ছাত্র সৌরভ। প্রতি বছর একাধিক স্থান দখল করেন রামানুজের ছাত্ররা। এ বার সেই তালিকায় ঢুকল সৌরভের নাম।

দু’জনের মধ্যে মিলও রয়েছে প্রচুর। কেউ-ই বইয়ের পোকা নয়। দু’জনই নিজের ইচ্ছেয় বিজ্ঞানের বদলে বাণিজ্য শাখায় ভর্তি হন। এ বার দু’জনই পাঁচটি বিষয়ে করে লেটার পেয়েছেন। এমবিএ পড়তে চান শ্রেয়াংশ। সৌরভের লক্ষ্য চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট হওয়া। রামানুজ গুপ্ত জুনিয়র কলেজের ডিরেক্টর শ্রীমন্ত দত্ত কলেজের পড়ুয়াদের ফলাফলে খুশি।

ছাত্রদের টেক্কা দিয়ে করিমগঞ্জেও এগিয়ে গেল ছাত্রীরাই। উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় স্টিমারঘাট রোডের সঞ্চিতা দাস কলা বিভাগে রাজ্যে দশম স্থান অধিকার করলেন। ৬০০ নম্বরের মধ্যে তিনি পেয়েছেন ৫৪৮। করিমগঞ্জ জুনিয়র ফ্রন্টিয়ার কলেজের ছাত্রীর সাফল্যে খুশি কলেজ কর্তৃপক্ষ। সঞ্চিতা জানান, তিনি ইতিহাস নিয়ে স্নাতক পড়তে চান। তাঁর স্বপ্ন আইএএস অফিসার হওয়া।

করিমগঞ্জে বিজ্ঞান বিভাগে ৪৭৮ পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৪২৮ উত্তীর্ণ হয়েছেন। বাণিজ্যে ৩৩৫ জনের মধ্যে ২৯১ এবং কলা বিভাগে ৫ হাজার ৪৩৯ জনের মধ্যে ৩ হাজার ৭৬৪ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

assam HS result 2015 student college karimganj
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE