Advertisement
০৬ মে ২০২৪

সংরক্ষণ সূত্রেই চিন্তা কংগ্রেসের

এক দিকে কংগ্রেস নেতৃত্ব। অন্য দিকে গুজরাতের তিন ‘তরুণ তুর্কি’— হার্দিক পটেল, অল্পেশ ঠাকোর, জিগনেশ মেবানি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:০৩
Share: Save:

বিজেপিকে প্যাঁচে ফেলতে দুই শিবিরই চায় এক বিন্দুতে আসতে। কিন্তু সেই বিন্দুতে পৌঁছনোর রাস্তা খুঁজতে দু’তরফই নাজেহাল।

এক দিকে কংগ্রেস নেতৃত্ব। অন্য দিকে গুজরাতের তিন ‘তরুণ তুর্কি’— হার্দিক পটেল, অল্পেশ ঠাকোর, জিগনেশ মেবানি। তিন নেতাই ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছেন, গুজরাতের ভোটে তাঁরা কংগ্রেসেরই পাশে থাকতে চান। কিন্তু বিনিময়ে চান সংরক্ষণের প্রশ্নে নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি। কংগ্রেসও বিজেপিকে হারাতে তাঁদের পাশে পেতে মরিয়া। কিন্তু কী ভাবে প্রত্যেককে আলাদা ভাবে সন্তুষ্ট করা যায়, সেই ধাঁধার উত্তর মিলছে না। হার্দিকের প্রতিশ্রুতি মেনে পাতিদারদের সংরক্ষণ দিলে চটে যাবেন ওবিসি নেতা অল্পেশ। আবার দলিত নেতা জিগনেশেরও দাবি রয়েছে।

হার্দিক-অল্পেশদের সমস্যা হল, তাঁরা যে ভাবে বিজেপি বিরোধী অবস্থান নিয়ে ফেলেছেন, এখন আর শিবির বদল সম্ভব নয়। কোনও পক্ষই না নিলে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আবার কংগ্রেসের থেকে প্রতিশ্রুতি আদায় না করলেও নিজেদের সম্প্রদায়ের কাছে মুখ
পোড়ে তাঁদের।

এই জট ছাড়াতে আজ সুরাতে হার্দিকের দাবি নিয়ে বৈঠকে বসেছেন কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল। গুজরাতে কংগ্রেসের ইস্তাহার তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মধুসূদন মিস্ত্রিকে। কিন্তু সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতিতে আইনি জটিলতার বিষয়টি মাথায় রেখে আইনজীবী সিব্বলকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, হার্দিক নিজে না গিয়ে দলের আইনজীবীদেরই বৈঠকে পাঠান।

জটটা কোথায়? হার্দিক চান, ওবিসি কোটায় পাতিদারদেরও জায়গা দেওয়া হোক। গুজরাতের ৬ কোটি জনসংখ্যার মধ্যে ওবিসি প্রায় ৪০ শতাংশ। তাঁদের জন্য চাকরি ও শিক্ষা ক্ষেত্রে ২৭ শতাংশ সংরক্ষণ রয়েছে। অল্পেশ ওই ওবিসি তালিকায় কোনও বদল করে পাতিদারদের ঢোকানোর বিরোধী। তিনিই পাতিদারদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে ওবিসি-দের পাল্টা লড়াইয়ের নেতা। এ দিকে পাতিদারদের জন্য পৃথক সংরক্ষণের বন্দোবস্তও সম্ভব নয়। কারণ, গুজরাতে চাকরি ও শিক্ষা ক্ষেত্রে এমনিতেই ওবিসি, তফসিলি জাতি-উপজাতি মিলিয়ে ৪৯ শতাংশ আসন সংরক্ষিত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তা ৫০%-র বেশি হতে পারে না।

কংগ্রেস তাই জাতিগত সংরক্ষণের বিষয়টি মাথায় রেখে আর্থিক ভাবে অনগ্রসর শ্রেণির জন্য ২০ শতাংশ সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিতে চাইছে। তাতে উঁচু জাতের পটেল হলেও আর্থিক অনগ্রসর পাতিদাররা সুবিধা পাবেন। কিন্তু সমস্যা হল, গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আনন্দীবেন
পটেলও একই ভাবে ১০ শতাংশ সংরক্ষণের অধ্যাদেশ এনেছিলেন। আদালতে তা খারিজ হয়ে যায়। কংগ্রেসের এই প্রতিশ্রুতিতে তাই হার্দিক রাজি নন। অগত্যা খোঁজ জারি সমাধানসূত্রের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE