সরকারি বিজ্ঞাপনে প্রধানমন্ত্রীর ছবি যেতে পারে, কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর ছবি যাবে না, এই রায়ে সংশোধন চাইতে এসে সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্নের মুখে পড়তে হল পশ্চিমবঙ্গ-সহ চার রাজ্যকে। বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ও বিচারপতি পিনাকীচন্দ্র ঘোষের প্রশ্ন, ‘‘দেড় বছর আগে যখন মূল মামলার শুনানি চলছিল, তখন আপনারা কোথায় ছিলেন?’’
গত মে মাসে সুপ্রিম কোর্ট রায় দেয়, সরকারি বিজ্ঞাপনে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বা ভারতের প্রধান বিচারপতি ছাড়া আর কারও ছবি ব্যবহার করা যাবে না। মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল বা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও বাদ। ফলে, বাতিল হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি-সহ সরকারি বিজ্ঞাপনও। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে জনস্বার্থের মামলা করে অভিযোগ তোলা হয়েছিল, আমজনতার করের টাকায় সরকারি বিজ্ঞাপন দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলা হয়। তার প্রেক্ষিতেই ওই রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
এই রায়ে আপত্তি তুলে সুপ্রিম কোর্টে ‘রিভিউ পিটিশন’ জমা দেয় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তামিলনাড়ুর জয়ললিতার সরকার, অসম ও কর্নাটকের তরফেও একই আবেদন করা হয়। আজ সেই মামলার শুনানিতেই বিচারপতি গগৈ বলেন, ‘‘মূল মামলার শুনানির সময় এ বিষয়ে সব রাজ্যের মতামত চাওয়া হয়েছিল। তখনও সব রাজ্যকে নোটিস পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বিহার ছাড়া আর কোনও রাজ্য হাজির হয়নি।’’ পশ্চিমবঙ্গের তরফে দুই আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা ও কপিল সিব্বল রাজ্যগুলির আর্জি খতিয়ে দেখতে অনুরোধ জানান। বিচারপতি গগৈ জানান, চারটি রাজ্য আদালতে এলেও বাকি সব রাজ্যেরই মতামত জানা দরকার। সব রাজ্যকে নোটিস পাঠানো হয়েছে। আগামী ১৩ অক্টোবর গোটা দিন ধরে এই মামলার শুনানি হবে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের আইনজীবী কবীরশঙ্কর বসু জানান, কেন্দ্রে যেমন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত সরকারের প্রধান, রাজ্যে তেমনই নির্বাচিত সরকারের প্রধান মুখ্যমন্ত্রী। সে দিক থেকে তাঁদের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। ওই রায় তাই পক্ষপাতদুষ্ট। একই ভাবে প্রধান বিচারপতির প্রশাসনিক ক্ষমতা বেশি থাকলেও, বিচারব্যবস্থার দিক থেকে সুপ্রিম কোর্টের অন্য বিচারপতিদের সঙ্গে তাঁর কোনও পার্থক্য নেই। আদালত এ বিষয়ে একটি কমিটিও তৈরি করে। সেটিও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ব্যবহার না করার বিষয়ে সুপারিশ করেনি বলে তাঁর যুক্তি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy