Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Himachal Pradesh Disaster

হিমবাহসৃষ্ট হ্রদ ফেটে সিকিমের মতো হিমাচলেও যে কোনও দিন নেমে আসতে পারে বড় বিপর্যয়!

সিকিমের লোনকের মতোই হিমাচলে গেফাং গথ হ্রদকে বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করেছেন হিমবাহবিদরা। লোনকের মতোই এই হ্রদের আকৃতি ক্রমশ বাড়ছে। ফলে আরও বিপজ্জনক হচ্ছে বলে দাবি তাঁদের।

হিমবাহসৃষ্ট হ্রদ। প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

হিমবাহসৃষ্ট হ্রদ। প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৩ ১২:৩৩
Share: Save:

সিকিমের মতো বিপর্যয়ের মুখে পড়তে পারে হিমালয়ের রাজ্য হিমাচল প্রদেশও? অন্তত তেমনটাই দাবি করেছেন হিমবাহবিদরা। শুধু দাবি করাই নয়, এ বিষয়ে এ বছরের গোড়াতেই সতর্কবার্তা দিয়েছেন তাঁরা। এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে আমেরিকান জিওফিজিক্যাল ইউনিয়ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে তাঁদের সেই সতর্কবার্তা। গত ৪ অক্টোবর দক্ষিণ লোনক হ্রদ ফেটে ভয়ানক বিপর্যয় ঘটেছে সিকিমে। রাজ্য সরকারের হিসাব অনুযায়ী, এই বিপর্যয়ে এখনও পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ ১০৫ জন।

সিকিমে যে কোনও দিন বিপর্যয় নেমে আসতে পারে, এমন সতর্কবার্তা আগেই দিয়েছিল ইসরো এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটেড মাউন্টেন ডেভেলপমেন্ট (আইসিআইএমওডি)। সিকিমের মতো অরুণাচলের পরিস্থিতি যে হতে পারে, তাই আগেভাগেই সতর্কবার্তা দিয়েছেন হিমবাহবিদরা। যে কোনও দিন এবং যে কোনও মুহূর্তে এই বিপর্যয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা।

সিকিমের লোনকের মতোই হিমাচলে গেফাং গথ হ্রদকে বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করেছেন হিমবাহবিদরা। লোনকের মতোই এই হ্রদের আকৃতি ক্রমশ বাড়ছে। ফলে আরও বিপজ্জনক হচ্ছে বলে দাবি তাঁদের। হিমবাহ দ্রুত হারে গলতে থাকায় হ্রদের দেওয়ালেও চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে যে কোনও দিন সেই দেওয়াল ভেঙে হ্রদের জল নীচের দিকে নেমে এসে ভয়ানক তাণ্ডব ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

হিমবাহবিদ অনিল কুলকার্নি জানিয়েছেন, লোনকের মতোই একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে হিমাচলের গেফাং গথ হ্রদে। প্রসঙ্গত, পশ্চিম হিমালয় অঞ্চলের মধ্যে পড়ছে হিমাচল এবং উত্তরাখণ্ড। অন্য দিকে, পূর্ব হিমাচলয় অঞ্চলের মধ্যে পড়ছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, এই দুই হিমালয় অঞ্চলে যে সব হিমবাহসৃষ্ট হ্রদ রয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সেগুলি ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। সেই সঙ্গে ‘গ্লেসিয়াল লেক আউটবার্স্ট ফ্লাড’ (জিএলওএফ)-এর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে ক্রমশ। জিএলওএফ হয় তখনই, যখন হিমবাহ গলা জল জমে সৃষ্ট হ্রদগুলি অতিরিক্ত জল জমার কারণে বা ভূমিকম্পের মতো কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে ফেটে যায়। কুলকার্নির মতে, তাই সময়ে সময়ে এই পরিস্থিতির উপর নজরদারি চালানো প্রয়োজন।

কুলকার্নি আরও জানিয়েছেন, যত সময় এগোবে এই হ্রদের আকার ততই বড় হবে। হ্রদের যা আকার, তার দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে। যদি সময় মতো গেফাং হ্রদের জলের চাপ কমাতে কৃত্রিম উপায়ে সেই জল বার করে দেওয়া যায়, তা হলে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে হ্রদ ফেটে হড়পা বানের সৃষ্টি হলেও তার প্রভাব ততটা মারাত্মক না-ও হতে পারে। মাস দুয়েক আগেই বর্ষার মরসুমে ভয়ঙ্কর বিপর্যয়ের মুখে পড়েছিল পশ্চিম হিমালয়ের দুই রাজ্য হিমাচল এবং উত্তরাখণ্ড। প্রবল বৃষ্টি, বন্যা পরিস্থিতি এবং ধসের জেরে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিল এই দুই রাজ্য। মৃত্যুও হয়েছে বহু মানুষের। দুই রাজ্যে প্রকৃতির সেই ভয়ঙ্কর রূপ দেখেছে গোটা দেশ। সেই বিপর্যয়ের ক্ষত সারতে না সারতেই আরও একটি পাহাড়ি রাজ্যে আছড়ে পড়েছে বিপর্যয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Disaster himachal pradesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE