Advertisement
E-Paper

মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ভুবন পাহাড়ে ধস

মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ধুয়েমুছে গেল ভুবন পাহাড়ের একাংশ। বেশ ক’টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জলের তোড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে পাহাড়ের বুকে থাকা বাড়িঘর। এ পর্যন্ত দুই মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। খোঁজ মিলছে না দুই শিশুর।

উত্তম সাহা

শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:২২
বিপর্যয়ের পরে ভুবন পাহাড়ে। বুধবার।—নিজস্ব চিত্র।

বিপর্যয়ের পরে ভুবন পাহাড়ে। বুধবার।—নিজস্ব চিত্র।

মেঘভাঙা বৃষ্টিতে ধুয়েমুছে গেল ভুবন পাহাড়ের একাংশ। বেশ ক’টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জলের তোড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে পাহাড়ের বুকে থাকা বাড়িঘর। এ পর্যন্ত দুই মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। খোঁজ মিলছে না দুই শিশুর।

গত কাল রাত দুটো নাগাদ ঘটনাটি ঘটে। তার আগে ঘণ্টা তিনেক ধরে টানা বৃষ্টি হচ্ছিল। কখনও জোরে, কখনও মাঝারি। সঙ্গে বজ্রগর্জন। এর পরই কাছাড় জেলার শৈবতীর্থ, ভুবন পাহাড়ের বৃষ্টি-ধারার তোড় মুহূর্তে নদীর আকার নিয়ে সব ভাসিয়ে নীচে নেমে আসে।

পাঁচশো ফুট উঁচু পাহাড়ের চারদিকে শুধু বিপর্যয়ের চিহ্ন। কয়েক হাজার গাছ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মন্দিরগাত্রে থাকা বিষ্ণুমন্দিরের একাংশ। ভুবন পাহাড়ের বহুচর্চিত সেই সুড়ঙ্গমুখও বন্ধ। তবে শৃঙ্গে থাকা ভুবন মন্দিরের কোনও ক্ষতি হয়নি। শুধু মন্দিরের নীচে কোথায় পুকুর ছিল, তা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কোথাও তার চিহ্নমাত্র নেই।

কাছাড়ের জেলাশাসক এস বিশ্বনাথন জানিয়েছেন, ‘‘জাতীয় ও রাজ্য পর্যায়ের দুর্যোগ প্রতিরোধ বাহিনী সকাল থেকে তল্লাশিতে নেমেছে। মা-মেয়ের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। একই পরিবারের আরও দুই শিশুর খোঁজ মিলছে না।’’ মৃতরা হলেন লুমিলা লামোরাং (৪৫) ও তাঁর মেয়ে ওয়ারলিস লামোরাং (২২)। নিখোঁজ তিন বছরের অনিশা এবং দু’বছরের দিওয়ার। জেলাশাসকের আশা, আগামীকালের মধ্যে ভুবন পাহাড় এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। পাহাড়ে ওঠার রাস্তা তৈরির কাজও চলছে।

ভুবন পাহাড়ের পানিচৌকি-খাসিয়াপুঞ্জিতে লামোরাং-দের বাড়ি। চৌকিখাল নামের ঝর্ণা সেখান থেকে বেশ কিছু দূরে। তাই স্ত্রী-কন্যাদের নিয়ে নিশ্চিন্তেই ঘুমোচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ ঝর্ণা বাঁক না কেটে সোজা তাদের বাড়ির উপর দিয়ে তীব্র বেগে বয়ে আসে। সঙ্গে বড় বড় পাথরের চাঁই। গৃহকর্তা দীপর লামোরাং ও তাঁর জামাতা তিয়াস সাদপ জলস্রোতের সঙ্গে লড়াই করে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হলেও অন্য চারজন ভেসে যান। আজ সকালে বাড়ি থেকে অনেক দূরে মা-মেয়ের দেহ উদ্ধার করা হয়। পাহাড়ের তলদেশে থাকা গ্রামগুলিতেও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। অত্যাধিক জলধারায় খেতের ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছে। রাস্তায় আজ বিকেলেও এক-দেড় ফুট ভুবনতলের বাসিন্দা অশোককুমার সাহু পাহাড় থেকে নেমে জানান, ১০-১২ জায়গায় পাহাড় ধসে পড়েছে। ধস নেমেছে বিখ্যাত নীলমণ্ডপের গুহামুখেও। পাহাড়ি পথে দূরবিন টিলা, হাটু ভাঙানি, উনিছড়া, পানিচৌকিকে আলাদা করে চেনা মুশকিল। মতিনগরের উত্তমকুমার সাহু জানান, মণিপুরি বস্তি, গঙ্গারপুর, মোতিনগরেও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। লোকসানের বহর দুই-তিন গ্রাম পঞ্চায়েত জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। এনডিআরএফ কর্তা অরবিন্দ কুমার মিনার কথায়, ‘‘বিপর্যয়ের মাত্রা এতটাই বেশি যে উদ্ধারের কাজ ঠিক ভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না। গাড়ি নিয়ে উপরে ওঠা মুশকিল। হেঁটে যাওয়ার রাস্তাও বোঝা যাচ্ছে না।’’ খাসিপুঞ্জির মুরুব্বি (হেডম্যান) মর্নিংমাসিমপি খাসি বলেন, ‘‘এমন জল কখনও দেখিনি।’’

Silchar washed away
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy