Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Elephant

বানভাসিদের চাঁদায় খাবার পেল ক্ষুধার্ত হাতিরা

মাজুলির মানুষের নিজেদেরই খাদ্য ও আশ্রয়ের সঙ্কট চলছে। কিন্তু তার মধ্যেও রাতে দূর থেকে ভেসে আসা ক্ষুধার্ত হাতিদের চিৎকারে শালমারার মানুষ অধীর হয়ে পড়েন।

সেই হাতির দল। নিজস্ব চিত্র

সেই হাতির দল। নিজস্ব চিত্র

রাজীবাক্ষ রক্ষিত
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০২০ ০৬:০৩
Share: Save:

বানভাসি মাজুলি। বন্যায় ভেসেছে সকলের ঘরবাড়ি, জমি। কিন্তু ভাসাতে পারেনি মানবিকতা। তাই নিজেরা সব হারানোর পরেও সেখানকার গ্রামবাসীরা আটকে পড়া ক্ষুধার্ত হাতির পালের জন্যে চাঁদা তুলে জোগাড় করলেন খাদ্য! অসমে ২১ জেলায় প্রায় ১৬ লক্ষ ৫৫ হাজার বন্যা কবলিত। এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছেন ১০৮ জন। প্রতি বারের মতোই দ্বীপ জেলা মাজুলির প্রায় ৯০ শতাংশ জলের তলায়। কেউ অসুস্থ হলে হাসপাতালে যাওয়ার উপায় নেই।

মাজুলির মানুষের নিজেদেরই খাদ্য ও আশ্রয়ের সঙ্কট চলছে। কিন্তু তার মধ্যেও রাতে দূর থেকে ভেসে আসা ক্ষুধার্ত হাতিদের চিৎকারে শালমারার মানুষ অধীর হয়ে পড়েন। নৌকো নিয়ে খোঁজে নামেন হাতির পালের। দেখা যায়, কোনও মতো একটি আধ ডোবা বালিচরে আশ্রয় নিয়েছে শ’খানেক হাতি। তাদের খাওয়ার মতো কিছুই নেই সেখানে। তাই খিদের জ্বালায় ডাকছে তারা। দলে রয়েছে কয়েকটি হাতি শাবকও।

শালমারার মানুষ নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে চাঁদা জোগাড় শুরু করেন। এরপর ৩০০ কলাগাছ ও অন্য আনাজ, ১০ বস্তা নুন, কলা, চালতা, আখ, কাঁঠাল ইত্যাদি নৌকায় চাপানো হয়। গ্রামের মানুষ সেই চরে গিয়ে হাতিদের জন্যে খাবার নামিয়ে আসেন। কয়েক দফায়।

শালমারার গ্রামবাসীদের কাজে উৎসাহ পেয়ে পাশের জোগী গাঁও, দখিনপাট কুমারগাঁওয়ের মানুষও নৌকোয় কলাগাছ, ফল, নুন, আনাজ নিয়ে ওই চরে হাতিদের দিয়ে এসেছেন।

এখানকার মানুষের মূল পেশা নৌকা তৈরি করা ও মাটির পাত্র বানানো। কিছু ভাগ্যবান শহরে চাকরি পেয়েছেন বটে। কিন্তু অভাব এই সব গ্রামের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু প্রকৃতি ও পরিবেশের সংরক্ষণ তাঁদের শেখাতে হয় না। তা বৈষ্ণব সমাজের অঙ্গ।

গ্রামবাসীদের মরমি ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ দিয়ে বনমন্ত্রী পরিমল শুক্ল বৈদ্য জানান, এখানকার মানুষের কাছে হাতি ভগবানের রূপ। তাই আরোপিত সংরক্ষণের চেয়েও সামাজিক চেতনাবোধ উন্নত বলেই হাতি সংরক্ষণ অসমে সফল। হাতি করিডর মুক্ত করতে গোটা গ্রামের মানুষের অন্যত্র সরে যাওয়া, হাতির খাদ্যের জন্য জমির নির্দিষ্ট অংশে ফসল চাষ করার উদাহরণ এই রাজ্যে রয়েছে। তার মধ্যেও ফসল বাঁচাতে অবৈধ

বিদ্যুতের বেড়ায় তড়িদাহত হয়ে বা বিষক্রিয়ায় হাতি মৃত্যুর অবাঞ্ছিত ঘটনাও অবশ্য ঘটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Majuli Elephant
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE