Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

কূটনৈতিক সাফল্য ভারতের, পাকিস্তানকে এড়িয়ে ইরানে বন্দর

দীর্ঘ দিনের কূটনৈতিক দৌত্য সাফল্যের মুখ দেখল সোমবার। ভারত ও ইরানের মধ্যে নতুন বন্দর তৈরির ব্যাপারে চূড়ান্ত স্বাক্ষর হল। ইরানের ছাবাহারে ওই বন্দর তৈরি হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৬ ১৫:৪৭
Share: Save:

দীর্ঘ দিনের কূটনৈতিক দৌত্য সাফল্যের মুখ দেখল সোমবার। ভারত ও ইরানের মধ্যে নতুন বন্দর তৈরির ব্যাপারে চূড়ান্ত স্বাক্ষর হল। ইরানের ছাবাহারে ওই বন্দর তৈরি হবে।

ঐতিহাসিক এই চুক্তির পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ‘‘ভারত এবং ইরান নতুন বন্ধু নয়, আমাদের দোস্তি ইতিহাসের মতোই প্রাচীন।’’ পাশাপাশি, ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, ‘‘ইরান ও ভারতের পারস্পরিক সহযোগিতার এক বড় প্রতীক হয়ে উঠতে চলেছে ছাবাহার।’’ ইরানের দক্ষিণ উপকূলে এই ছাবাহার। এটাই প্রথম বিদেশি বন্দর যেখানে ভারত বিনিয়োগ করেছে। প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার এখানে বিনিয়োগ করার কথা।

আফগানিস্তানের পুনর্গঠনে বিপুলসাহায্য করছে ভারত। কিন্তু, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহ করার জন্য পাকিস্তান তাদের ভূখণ্ড বা আকাশসীমা ভারতকে ব্যবহার করতে দেয় না। ইরানের মধ্যে দিয়ে আফগানিস্তানে পণ্য পাঠাতে হয় ভারতকে। দীর্ঘ দিন ধরে ভারত চাইছিল পাকিস্তানের মধ্য দিয়ে বা পাকিস্তানকে এড়িয়ে আফগানিস্তান অবধি একটা পথ বানাতে। যে পথকে বাণিজ্যিক ভাবেই ব্যবহার করবে ভারত। শুধু আফগানিস্তান নয়, ওই পথে মধ্য এশিয়ার সঙ্গেও বাণিজ্য বাড়াতে চাইছে ভারত। শুধু ছাবাহার বন্দর নয়, ভারতীয় উদ্যোগে সেখান থেকে ৫০০ কিলোমিটার রেললাইন বসানোর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। সেই রেললাইন যাবে জাহেরান পর্যন্ত।

এ ছাড়াও এ দিনের চুক্তির অন্য তাত্পর্য রয়েছে। তার মূল কারণ গোয়াদর। পাকিস্তানের গোয়াদরে বন্দর বানিয়ে ভারতকে পশ্চিম দিক থেকেও ঘিরতে চাইছে চিন। চিনের টাকায় তৈরি হওয়া গোয়াদর বন্দর থেকে ছাবাহারের দূরত্ব মাত্র ৭২ কিলোমিটার। পাক-চিন অর্থনৈতিক করিডর গঠন এবং গোয়াদরে চিনা বন্দর তৈরির তোড়জোড় যখন থেকে শুরু হয়েছিল, তার কিছু দিন পর থেকেই ইরানের ছাবাহারে নিজেদের উপস্থিতি সুনিশ্চিত করার বিষয়ে এগোতে শুরু করেছিল নয়াদিল্লি। কিন্তু, খুব ধীরে এগোচ্ছিল সে প্রক্রিয়া। ইরানের বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচি রুখতে আমেরিকা তথা আন্তর্জাতিক মহল সে দেশের উপর বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা জারি করায়, ভারত-ইরান যৌথ বন্দর প্রকল্পের অগ্রগতি কিছুটা ধাক্কা খেয়েছিল। কিন্তু, ইরানের পাশ থেকে সেই দুর্দিনেও সরে আসেনি ভারত। আন্তর্জাতিক মহলের চাপ অগ্রাহ্য করে ইরানের কাছ থেকে খনিজ তেল কেনা অব্যহত রাখে ভারত। পরে ইরান পরমাণু কর্মসূচিতে রাশ টেনেছে। তাদের উপর থেকে অনেক আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়েছে। ফলে ইরানের সঙ্গে সমঝোতা বাড়ানো ভারতের পক্ষে এখন অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pakistan India Chabahar port Afganistan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE