Advertisement
১১ মে ২০২৪
Delhi Riots

দিল্লি-সংঘর্ষের তদন্তই আসলে ‘ষড়যন্ত্র’, অভিযোগ

অনলাইন আলোচনাসভায় সমাজকর্মী হর্ষ মান্দের, যোগেন্দ্র যাদব, অপূর্বানন্দ এবং ছাত্র নেতা উমর খালিদ, কওয়লপ্রীতদের অভিযোগ, দিল্লির গোষ্ঠী সংঘর্ষের তদন্ত যে-ভাবে ও যে-দিকে এগিয়েছে, তাতে স্পষ্ট যে, কাদের দোষী ঠাওর করা হবে, তা ঠিক করা আছে গোড়া থেকেই।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৪৩
Share: Save:

ফেব্রুয়ারিতে দিল্লির বুকে হওয়া গোষ্ঠী সংঘর্ষের নেপথ্যের ষড়যন্ত্র খুঁজে বার করতে তদন্ত? না কি সেই তদন্ত আদপে সিএএ-এনআরসির প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র? গত কয়েক মাসে, বিশেষত লকডাউনের পর থেকে, দিল্লি পুলিশের ধরপাকড় যে ভাবে চলেছে, তাতে এই প্রশ্ন উঠছে বলেই অভিযোগ একাধিক ছাত্র সংগঠন ও বহু সমাজকর্মীর। এ বার ওই বিষয়ে আদালতের নজরদারিতে নিরপেক্ষ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করলেন তাঁরা।

আজ অনলাইন আলোচনাসভায় সমাজকর্মী হর্ষ মান্দের, যোগেন্দ্র যাদব, অপূর্বানন্দ এবং ছাত্র নেতা উমর খালিদ, কওয়লপ্রীতদের অভিযোগ, দিল্লির গোষ্ঠী সংঘর্ষের তদন্ত যে-ভাবে ও যে-দিকে এগিয়েছে, তাতে স্পষ্ট যে, কাদের দোষী ঠাওর করা হবে, তা ঠিক করা আছে গোড়া থেকেই। ‘উঁচু তলার’ নির্দেশ মেনে শুধু সেই অনুযায়ী প্রমাণ ‘সাজিয়ে যাচ্ছে’ দিল্লি পুলিশ, নিশানা করা হচ্ছে ‘আক্রান্তদেরই’। সেই সঙ্গে, আগামী দিনে সরকার বিরোধী প্রতিবাদের সম্ভাবনা নির্মূল করতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে বেছে-বেছে জেরা এবং গ্রেফতার করা হচ্ছে ছাত্র প্রতিনিধি ও নেতাদের।

হর্ষ থেকে উমর- সকলেরই বক্তব্য, দিল্লির গোষ্ঠী সংঘর্ষের আগে প্রায় নাগাড়ে দু’মাস বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র যে প্ররোচনামূলক কথাবার্তা বলে গিয়েছেন, তদন্তের আওতায় তা আনতে নারাজ দিল্লি পুলিশ। যোগেন্দ্রের দাবি, ২৭ জানুয়ারি মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের ‘গোলি মারো’ স্লোগানের পরে যথাক্রমে ২৯ জানুয়ারি এবং ১ ফেব্রুয়ারি গুলি চলেছে জামিয়া ইসলামিয়ার সামনের রাস্তা ও শাহিনবাগের প্রতিবাদ মঞ্চের কাছে। অথচ ওই স্লোগানকে এক বারও উসকানি বলে মনে করা হয়নি।

আরও পড়ুন: রান্নার গ্যাসে নামমাত্র ভর্তুকি, নিশানায় কেন্দ্র

আরও পড়ুন: ‘সিংঘমের দাপটে নয়, মন জিতুন ভালবাসায়’

অপূর্বানন্দের মতে, বহু ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, শাসক দল কিংবা তাদের ঘনিষ্ঠরা যে সমস্ত অভিযোগ সংবাদমাধ্যমে বা সমাজমাধ্যমে জানিয়েছেন, পরে তার ভিত্তিতেই বিভিন্ন জনকে গ্রেফতার করেছে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনস্থ পুলিশ। তাঁদের প্রশ্ন, তবে কি তদন্তের আগেই অপরাধী চিহ্নিত করে পরে প্রমাণ ‘সাজাচ্ছে’ পুলিশ? উমরই যেমন বলেছেন, তাঁর বক্তব্যের একটি ৩০-৪০ সেকেন্ডের ক্লিপ ২ থেকে ৪ মার্চ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে বিজেপির আইটি সেল। ৬ মার্চ তাঁর নামে এফআইআর দায়ের করা হয় অবিকল ওই অভিযোগের ভিত্তিতে!

দিল্লি পুলিশের সামনে এ দিন এগারো দফা প্রশ্নও তুলে ধরেন তাঁরা। তার মধ্যে রয়েছে, তদন্ত শুরুর আগেই কিছু ‘দোষী’ সংগঠন ও ব্যক্তির নাম অমিত শাহ বলেছিলেন কী ভাবে? কী করেই বা পরে অভিযুক্ত হলেন তারাই! কেন সংঘর্ষে প্ররোচনার বিষয়ে কপিল কিংবা অনুরাগের বয়ান খতিয়ে দেখেনি পুলিশ? সংঘর্ষের যে সমস্ত ভিডিয়ো প্রমাণ মজুত, সেগুলি দেখা হচ্ছে না কেন? সিএএ-এনআরসি বিরোধী শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে শামিল পড়ুয়াদের সন্ত্রাসবিরোধী আইনে (ইউএপিএ) গ্রেফতার কেন? ২৩-২৬ ফেব্রুয়ারি উত্তর-পূর্ব দিল্লিতে ওই সংঘর্ষের সময়ে পুলিশের ভূমিকা কী ছিল, তার নিরপেক্ষ তদন্ত কোথায়?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Delhi Riots CAA NRC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE