Advertisement
১১ মে ২০২৪

ভিডিও কনফারেন্সে জেল হাজত বাড়ল ইন্দ্রাণীদের

সশরীরে আদালতে হাজির করানোর বদলে শিনা বরা মামলার তিন অভিযুক্তকে ভিডিও কনফারেন্সে বিচারকের সঙ্গে কথা বলালো মুম্বই পুলিশ। ১৪ দিনের জেল হেফাজত ফুরনোর পরে ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়, তাঁর প্রাক্তন স্বামী সঞ্জীব খন্না এবং চালক শ্যাম রাইকে এ দিন বান্দ্রা আদালতে তোলার কথা ছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:৩৫
Share: Save:

সশরীরে আদালতে হাজির করানোর বদলে শিনা বরা মামলার তিন অভিযুক্তকে ভিডিও কনফারেন্সে বিচারকের সঙ্গে কথা বলালো মুম্বই পুলিশ।

১৪ দিনের জেল হেফাজত ফুরনোর পরে ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়, তাঁর প্রাক্তন স্বামী সঞ্জীব খন্না এবং চালক শ্যাম রাইকে এ দিন বান্দ্রা আদালতে তোলার কথা ছিল। কিন্তু মুম্বই পুলিশ ওই তিন জনকে আনেনি আদালতে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাঁদের কথা বলিয়ে দেওয়া হয় বিচারকের সঙ্গে। নিরাপত্তার কারণেই এই সিদ্ধান্ত বলে মুম্বই পুলিশ সূত্রের খবর। বিচারকের ব্যক্তিগত চেম্বারে ভিডিও কনফারেন্স হওয়ার সময়ে পুলিশের দু’-একজন অফিসার ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আইনজীবীদেরও নয়। পরে সরকারি আইনজীবী ও অভিযুক্তদের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে বিচারক তিন জনকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

দু’সপ্তাহ আগে ইন্দ্রাণীরা যখন প্রথম বার জেল হেফাজতে যান, তখন মামলার তদন্তভার ছিল মুম্বই পুলিশের হাতে। কিন্তু এর মধ্যে মহারাষ্ট্র সরকার মামলাটি সিবিআইয়ের হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সোমবার নিজের দফতরে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাড়নবীস নিজেই সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘শিনা বরা খুনের মামলার সঙ্গে আর্থিক কেলেঙ্কারিও জড়িত বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে। সেই কেলেঙ্কারি বহু দূর পর্যন্ত বিস্তৃত। তাই এই মামলার তদন্ত মুম্বই পুলিশের চেয়ে সিবিআই অনেক ভাল করতে পারবে।’’ দিন দুই আগেই মুম্বই থেকে এ ব্যাপারে চিঠি পাঠানো হয়েছে দিল্লিতে। তবে এই চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার এখনও করেনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

সিবিআই সূত্রের খবর, কোনও রাজ্য সরকার যদি তাদের কোনও মামলা সিবিআইয়ের হাতে তুলে দিতে চায়, তা হলে লিখিত আবেদন করে তা জানাতে হয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র এর পরে তা পাঠায় মিনিস্ট্রি অব পার্সো়নেলের কাছে। সেখান থেকে ওই প্রস্তাব পাঠানো হয় সিবিআইয়ের অধিকর্তা-র কাছে। মামলা নেবে কি নেবে না, তার সিদ্ধান্ত নেয় সিবিআই। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত শিনা মামলার চিঠি সিবিআই অধিকর্তার কাছে় পৌঁছয়নি। সিবিআই অধিকর্তা যদি মামলা নিতে রাজি হন, তা হলে তা সিবিআইয়ের তরফ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে জানানো হবে। সেখান থেকে মহারাষ্ট্র সরকারকে লেখা হবে সে কথা। সেই চিঠি পেয়ে মহারাষ্ট্র সরকার দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এস্টাব্লিশমেন্ট আইনের (সিবিআই এই আইন অনুযায়ী মামলা ও তদন্তের কাজ চালায়) পাঁচ নম্বর ধারা অনুযায়ী একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করবে। তার পরে সিবিআই কাগজপত্র বুঝে নিয়ে তদন্তের কাজ শুরু করবে। ইন্দ্রাণীদের এ বারের জেল হেফাজত শেষের আগেই তা ঘটবে কি না, তা নিয়েই এখন যাবতীয় জল্পনা।

একটি নতুন ধন্দ তৈরি হয়েছে, শিনার দেহাংশ নিয়ে। পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১২ সালের ২৪ এপ্রিল শিনা খুন হয়ে যাওয়ার পরে তাঁর দেহ রায়গড় এলাকার পেন-এর জঙ্গলে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল। এ বছরের অগস্ট মাসে শিনা মামলা মাথা চাড়া দেওয়ার পরে সেপ্টেম্বর মাসে সেই পেন-এর জঙ্গলে আবার মাটি খুঁড়ে কিছু হাড়গোড় পায় পুলিশ। সেগুলি পাঠানো হয় নায়ার হাসপাতালে। সেই হাড় থেকে পাওয়া ডিএনএ-র সঙ্গে ইন্দ্রাণীর ডিএনএ মিলে যায়। কিন্তু ২০১২ সালে অজ্ঞাতপরিচয় দেহটি উদ্ধার হওয়ার পরে তার শরীরের যে অংশ জে জে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল, সেগুলি নতুন করে মিলিয়ে দেখার কথা ওঠে। সেই মোতাবেক জে জে হাসপাতাল থেকে ২০১২ সালে পাওয়া যে হাড়, পোড়া চামড়া, দাঁত ও চুল পাঠানো হয় নায়ার হাসপাতালে, সেগুলো কিন্তু নতুন করে পাওয়া হাড়ের সঙ্গে মিলছে না। কেন? প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, জে জে হাসপাতাল ভুল করে অন্য হাড়গোড় পাঠিয়ে দিয়ে থাকবে। নতুন করে দেহাংশ পাঠানোর জন্য জে জে হাসপাতালের কাছে নির্দেশ গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE