সীতারাম ইয়েচুরি
সিপিএমের অন্তর্দ্বন্দ্ব না কি সুকুমার রায়ের হযবরল!
প্রকাশ কারাট বলছেন, তাঁর সঙ্গে ছাত্রজীবনের ‘বন্ধু’ সীতারাম ইয়েচুরির কোনও ঝগড়াই নেই। সবটাই মিডিয়ার বানানো! কলকাতায় কেন্দ্রীয় কমিটিতে পশ্চিমবঙ্গ বনাম কেরলের কমরেডদের যুদ্ধের পরে কারাট যুক্তি দিচ্ছেন, এটা কেরল বনাম বাংলার কোনও লড়াই নয়।
ইয়েচুরির রাজনৈতিক লাইন কেন্দ্রীয় কমিটিতে ভোটাভুটিতে পরাস্ত হওয়ার পরেই তিনি ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন। এত দিন সবাই জানতেন, কারাট-শিবির ইয়েচুরিকে গদি থেকে সরাতে তৎপর। এখন ইয়েচুরি ইস্তফা দিতে চাওয়ায় কারাটই তাঁকে বলছেন, তার কোনও দরকার নেই। প্রকাশ্যেও তিনি দাবি করেছেন, কেউ ইস্তফা দিতে চাননি। এটা কারও ব্যক্তিগত হার নয়। অথচ ইয়েচুরি নিজেই বলছেন, তিনি ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন! কলকাতায় কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে শুধু নয়। তার আগে দিল্লির পলিটব্যুরোর বৈঠকেও। সেই খবর আনন্দবাজারে বেরোনোর পরে অবশ্য খারিজ করে পরে বিবৃতি দিয়েছিল সিপিএমের বাংলা মুখপত্র।
সব মিলিয়ে এপ্রিলে হায়দরাবাদ পার্টি কংগ্রেসের আগে সিপিএমের অন্দরমহল এখন জমজমাট! কারাট আজ এক নিবন্ধে লিখেছেন, ‘সংবাদমাধ্যম দেখায়, এটা কেরল বনাম বাংলার গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব। আরও এগিয়ে গিয়ে কেউ বলে, এটা দুই ব্যক্তির দ্বন্দ্ব। এ ক্ষেত্রে, বর্তমান ও প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদকের দ্বন্দ্ব। পুরোটাই ভিত্তিহীন!’ কারাটের যুক্তি, রাজনৈতিক লাইন নিয়ে সিপিএমের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র মেনে বিতর্ক হয়েছে। এমনটাই নিয়ম। যা শুনে অন্য দলের নেতারা কটাক্ষ করছেন— তার মানে এই ঝগড়া ভবিষ্যতেও চলবে!
সিপিএম সূত্র বলছে, আসলে কারাট-শিবির চাইছে, ইয়েচুরিকে দিয়েই তাঁদের রাজনৈতিক লাইনে সিলমোহর বসিয়ে নিতে। সিপিএমের রীতি হল, কোনও ব্যক্তির রাজনৈতিক লাইন হেরে গেলে তাঁকেও সরতে হয়। কিন্তু ইচ্ছাকৃত ভাবেই ত্রিপুরার ভোটের যুক্তি দিয়ে এখনই ইয়েচুরিকে সরতে দেওয়া হচ্ছে না। এপ্রিলের পার্টি কংগ্রেসের পরে ইয়েচুরি সত্যিই যদি না থাকেন, তা হলে কারাট-ঘনিষ্ঠ কেউ যে সাধারণ সম্পাদকের গদিতে বসবেন, তাতে সংশয় নেই।
কারাট বলছেন, রাজনৈতিক লাইন মানে শুধুই লোকসভা ভোটের রণকৌশল নয়। তবে ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির বিজেপি-বিরোধী জোটে সিপিএমের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। পার্টি কংগ্রেসে তার জবাব মিলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy