১৯ ঘণ্টা কঠোর পরিশ্রম। বিনিময়ে শুধু দু’বেলা কোনওক্রমে খিদে মেটানোর মতো খাবার। রাত কাটানো আরও ভয়ঙ্কর। ছোট্ট একটি চালাঘরে গাদাগাদি করে ৫০-৫২ জন। বাইরে থেকে তালাবন্ধ। ভিতরের এক কোণে একটি গর্ত। টয়লেটের ব্যবস্থা সেটাই। বাইরে প্রহরায় চার রক্ষী। কাজে ফাঁকি বা পালানোর চেষ্টা করলেই জুটত চাবুক দিয়ে নির্মম প্রহার। মহিলাদের যৌন অত্যাচার।
মধ্যযুগীয় দাসপ্রথাকেও কার্যত হার মানানো হাড় হিম করা নির্যাতনের এই ঘটনা কর্নাটকের হাসান এলাকার। ৫২ জন আদিবাসী ও দলিতকে উদ্ধারের পর পুলিশ প্রশাসনের কর্তাদেরও কার্যত চোখ কপালে উঠেছে। উদ্ধার ৫২ জনের মধ্যে ১৬ জন মহিলা এবং চার জন শিশুও রয়েছে। বেশিরভাগই কর্নাটকের বাসিন্দা হলেও কয়েক জনের বাড়ি সংলগ্ন রাজ্য তেলঙ্গানা এবং অন্ধ্রপ্রদেশে। সবচেয়ে প্রবীণ বৃদ্ধার বয়স ৬২ বছর। আর সবচেয়ে ছোট বছর ছয়েকের দুই শিশু। কেউ তিন বছর, কেউ বা তার কম সময় ধরে নির্যাতনের শিকার।
ঘটনা সামনে এসেছে নাটকীয় ভাবে। ওই শেডে বন্দি এক শ্রমিক কোনওক্রমে রক্ষীদের নজর এড়িয়ে ১২ ফুট উঁচু পাঁচিল টপকে পালান। থানায় গিয়ে আর্জি জানান সাহায্যের। রবিবার পুলিশ ওই খামারবাড়িতে অভিযান চালায়। উদ্ধার হয় ওই ৫২ জন। তারপরই গোটা ঘটনা জানতে পারে পুলিশ। ভারতীয় দন্ডবিধির ৩২৩, ৩২৪ (বেআইনি ভাবে বন্দি করে রাখা), ৩৪৪ (চুরি) এবং ৩৫৬ ধারার (যৌন নির্যাতন) পাশাপাশি দাস প্রথা অবলুপ্তি আইন, তফসিলি জাতি ও উপজাতি সুরক্ষা আইনে মামলা দায়ের হয়েছে। এক পুলিশকর্তার মন্তব্য, ‘‘আমাদের আশঙ্কা, ওই এলাকায় আরও কোনও জায়গায় এরকম দাসপ্রথা চলতে পারে।’’ সেই কারণেই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।