Advertisement
০৫ মে ২০২৪

পাকিস্তানের প্রতিনিধির করমর্দন ফিরিয়ে শুধুই নমস্কার, বার্তা দিল দিল্লি

নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ-এ আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে আজ থেকে কুলভূষণ যাদব মামলার শুনানি শুরু হয়েছে।

মুখোমুখি: করমর্দনের জন্য পাক অ্যাটর্নি জেনারেলের বাড়ানো হাত ফিরিয়ে দিলেন ভারতীয় কূটনীতিক দীপক মিত্তল। দ্য হেগ-এর আন্তর্জাতিক আদালতে কুলভূষণ মামলার শুনানি শুরুর আগে। ছবি: এএফপি

মুখোমুখি: করমর্দনের জন্য পাক অ্যাটর্নি জেনারেলের বাড়ানো হাত ফিরিয়ে দিলেন ভারতীয় কূটনীতিক দীপক মিত্তল। দ্য হেগ-এর আন্তর্জাতিক আদালতে কুলভূষণ মামলার শুনানি শুরুর আগে। ছবি: এএফপি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:২৯
Share: Save:

সৌজন্যের খাতিরে তখন ভারতীয় কূটনীতিকদের দিকে করমর্দনের জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিনিধি। কিন্তু পাল্টা হাত না মিলিয়ে দু’হাত জড়ো করেই সৌজন্য ফিরিয়ে দিলেন ভারতীয়েরা। বুঝিয়ে দিলেন, ‘নমস্কার’ই যথেষ্ট’!

নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ-এ আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে আজ থেকে কুলভূষণ যাদব মামলার শুনানি শুরু হয়েছে। শুনানি শুরুর আগে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের যুগ্মসচিব দীপক মিত্তল এবং নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত বেণু রাজামনিয়নের দিকে এগিয়ে যান পাকিস্তানের অ্যাটর্নি জেনারেল আনোয়ার মনসুর খান। মিত্তলের সঙ্গে করমর্দনের জন্য হাত বাড়িয়ে দিলেও বিদেশ মন্ত্রকের যুগ্মসচিব শুধু হাত জোর করে ‘নমস্কার’ করেই সৌজন্য দেখান। ফলে বাধ্য হয়ে প্রতি নমস্কার করতে হয় মনসুর খানকেও।

পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের টানাপড়েন চূড়ান্ত পর্যায়ে। ওই আবহে কুলভূষণ মামলার শুনানি যে তপ্ত হতে চলেছে, তার ইঙ্গিত মিলেছে প্রথম দিনেই। আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে ভারতের প্রতিনিধি প্রাক্তন সলিসিটর জেনারেল হরিশ সালভে সমালোচনায় বিদ্ধ করেছেন ইসলামাবাদকে। তিনি বলেন, ‘‘এটি একটি দুর্ভাগ্যজনক মামলা যেখানে এক জন নিরপরাধ ভারতীয়ের জীবন সঙ্কটে। পাকিস্তান যা বলছে, তা পুরোপুরি বানানো। কোনও তথ্য নেই। এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই যে, পাকিস্তান গোটা বিষয়টিকে মিথ্যা প্রচারের অস্ত্র করেছে। দেরি না করে ভারতীয় অফিসারদের সঙ্গে কুলভূষণের দেখা করার ছাড়পত্র দিতে হবে পাকিস্তানকে।’’

আরও পড়ুন: পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার চার দিন পরে হত জইশের শীর্ষ নেতা কামরান

ভারতে জঙ্গি হামলা নিয়ে এই বিষয়গুলো জানেন?

কুলভূষণের সঙ্গে কূটনীতিকদের যোগাযোগের (কনসুলার অ্যাকসেস) বিষয়টি নিয়ে এর আগে ১৩ বার আবেদন করেছে ভারত। কাজ হয়নি। আগামিকাল আন্তর্জাতিক আদালতেই পাকিস্তান যথারীতি তোপ দাগবে ভারতের বিরুদ্ধে। তার প্রস্তুতিও চলছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে পুরু কাঁচের দেওয়ালের ও-পার থেকে কুলভূষণকে তাঁর মা এবং স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে দিয়েছিল পাক প্রশাসন। কিন্তু তাঁর পরিবারকে চরম হেনস্থা করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। ভারতের অভিযোগ ছিল, আইএসআইয়ের শিখিয়ে দেওয়া কথা আউড়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন কুলভূষণ।

গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গত এপ্রিলে পাক সামরিক আদালত মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল কুলভূষণকে। ইসলামাবাদের অভিযোগ, ইরান থেকে গোপনে পাকিস্তানে ঢুকেছিলেন ওই ভারতীয়। তাঁকে ২০১৬-র মার্চে গ্রেফতার করা হয়েছিল। যদিও নয়াদিল্লির যুক্তি, ভারতীয় নৌবাহিনী থেকে অবসর নেওয়ার পর নিজের ব্যবসার প্রয়োজনে ইরানে গিয়েছিলেন কুলভূষণ। সেই সময় তাঁকে অপহরণ করা হয়। পাকিস্তানে ভারতীয় হাইকমিশনের পদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গেও দেখা করতে দেওয়া হয়নি কুলভূষণকে। তার প্রেক্ষিতে ভারত আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল। দিল্লির বক্তব্য, দূতাবাস ও হাইকমিশনের সম্পর্ক নিয়ে ১৯৬৩ সালে ভিয়েনা সম্মেলনে যে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল, তা ‘ইচ্ছাকৃত ভাবে’ লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE