মুম্বই হামলার ঘটনায় জঙ্গিদের গুলিতে মারা যান মহারাষ্ট্রের অ্যান্টিটেররিস্ট স্কোয়াড (এটিএস)-এর প্রধান হেমন্ত কারকারে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অকুতোভয় পুলিশ অফিসার কারকারে বীর হিসেবে গণ্য হন দেশবাসীর কাছে। আর সন্ত্রাসের মামলায় জামিনে মুক্ত ভোপাল কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সাধ্বী প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর বৃহস্পতিবার রাতে দলীয় কর্মীদের বলেছেন, ‘‘আমার অভিশাপেই মরতে হয়েছে কারকারেকে। আমি ওই পুলিশ অফিসারকে শাপ দেওয়ার এক মাসের মধ্যে তার শ্রাদ্ধে বসতে হয়েছে পরিবারকে!’’
বুধবার রাতে নরেন্দ্র মোদীর দল এই সাধ্বী প্রজ্ঞাকে ভোপালে প্রার্থী ঘোষণা করার পর থেকেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। খুন, সন্ত্রাস, দাঙ্গার চক্রান্তের মতো গুরুতর ধারায় অভিযুক্ত প্রজ্ঞা মালেগাঁও বিস্ফোরণ ও অজমের দরগার সামনে বিস্ফোরণ মামলায় প্রধান অভিযুক্ত, আপাতত জামিনে মুক্ত। এই প্রজ্ঞাকে গ্রেফতার করেছিলেন এটিএস প্রধান হেমন্ত কারকারে। প্রজ্ঞা কর্মিসভায় বলেন, ‘‘কারকারে আমাকে জেরা করত। বারংবার জিজ্ঞেস করত, কে এই সব হামলা চালিয়েছে? আমি বলতাম— আমি কী জানি, ভগবান জানে। সব কিছু তিনিই করান। কারকারে জবাবে বলেছিল, তা হলে প্রশ্নের জবাব জানতে আমাকে ভগবানের কাছে যেতে হবে নাকি? আমি বলেছিলাম, তাই যাবে। তুমি ভগবানের কাছেই যাবে। তুমি মরবে, ধ্বংস হয়ে যাবে। আমাকে কম হেনস্থা করেছে ও!’’ সাধ্বীর দাবি, তিনি এই ‘অভিসম্পাত’ দেওয়ার এক মাসের মধ্যেই গুলি খান কারকারে। তাঁকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ ও ‘হিন্দু-বিরোধী’ বলেছেন ৯ বছর জেলে কাটানো সাধ্বী।
সাধ্বীর প্রার্থী-পদ খারিজের দাবি জানিয়ে কালই আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন মালেগাঁও বিস্ফোরণে নিহত এক তরুণের বাবা। একই দাবি জানিয়ে নির্বাচন কমিশনেও আবেদন জমা পড়েছে। তার পরে হেমন্তের সম্পর্কে তাঁর এই উক্তিতে নিন্দার ঝড় উঠেছে। কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘একমাত্র বিজেপি নেতারাই ২৬/১১-র বীর শহিদকে বিশ্বাসঘাতক বলতে পারেন। সন্ত্রাসের থেকে মাতৃভূমিকে রক্ষার জন্য যে-সব জওয়ান প্রাণ দিয়েছেন, এমন উক্তি তাঁদের সকলের পক্ষে অপমান। ৫৬ ইঞ্চি ছাতির বড়াই করে যিনি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলেন, সেই নরেন্দ্র মোদীর উচিত দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়া ও সাধ্বীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া।’’