বাংলাদেশকে তিস্তার জল দেওয়ার ব্যাপারে এখনও সায় দেয়নি নবান্ন। কিন্তু বাংলাদেশকে আরও বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে রাজি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শেখ হাসিনার সরকারের কাছে এই বার্তা পৌঁছে দিতে রাজ্যের দুই বিদ্যুৎ সংস্থার কয়েক জন কর্তা শীঘ্রই ঢাকা যাচ্ছেন।
বাংলাদেশের চাহিদা অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গ যে আরও বিদ্যুৎ রফতানি করতে তৈরি, তা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে চিঠি দিচ্ছেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বিদ্যুৎকর্তারা সেই চিঠি নিয়েই আগমী সপ্তাহে ঢাকা যাবেন। কলকাতায় ‘ইনফোকম’-এর মঞ্চে এ কথা জানান শোভনদেববাবু।
এ-পার বাংলা থেকে ও-পারে বিদ্যুৎ যাচ্ছে বেশ কিছু দিন ধরে। তাদের যে আরও বিদ্যুৎ দরকার, ঢাকার তরফে আগেই সেটা জানানো হয়েছে। বিদ্যুৎমন্ত্রী জানান, একটি বণিকসভার আমন্ত্রণে এক মন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা সম্প্রতি কলকাতায় এসেছিলেন। শোভনদেববাবুকে তাঁরাই জানান, ভারত থেকে আরও বিদ্যুৎ চান তাঁরা। আর সে-ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। এখন পশ্চিমবঙ্গ থেকে প্রতিদিন ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ রফতানি হয় বাংলাদেশে। কেন্দ্রীয় সংস্থা পাওয়ার ট্রেডিং কর্পোরেশনের মাধ্যমে ২০১৩ সাল থেকে ওই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও বিদ্যুৎ-ঘাটতিতে ভুগছে ও-পার বাংলা। সেই ঘাটতি মেটাতে আগামী দিনে দু’হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন। যার একটা বড় অংশ ভারত থেকে নেওয়া হতে পারে। এ নিয়ে দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক স্তরে আলোচনাও শুরু হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের আরও বেশি বিদ্যুৎ রফতানির সুযোগ রয়েছে বলে মনে করছেন রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা।
রাজ্যের চাহিদা মিটিয়েও পশ্চিমবঙ্গে বিদ্যুৎ উদ্বৃত্ত। তার উপরে সাগরদিঘিতে নতুন দু’টি ইউনিটে শীঘ্রই বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু
হওয়ার কথা। এ ছাড়া কাটোয়ায় এনটিপিসি-র ১৩২০ মেগাওয়াটের তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প এবং পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে এক হাজার মেগাওয়াটের একটি পাম্প স্টোরেজ বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হবে অচিরেই।
ইতিমধ্যেই তার অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ওই সব প্রকল্প থেকেও জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রিডে বিদ্যুৎ বিক্রির পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার। সে-ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বাজার পশ্চিমবঙ্গের কাছে বিশেষ ভাবে গুরুত্ব পাবে।
শোভনদেববাবু জানান, বাড়তি বিদ্যুৎ রফতানির সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে যে-কোনও ধরনের বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণেও সাহায্য করতে পারে পশ্চিমবঙ্গ। এ রাজ্যের ইঞ্জিনিয়ারদের সেই অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা রয়েছে। রাজ্য থেকে যে-প্রতিনিধিদল ঢাকায় যাবে, তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন, সংবহন পরিকাঠামো, গ্রামীণ বিদ্যুদয়ন ইত্যাদি বিষয়েও আলোচনা করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy