সাক্ষাৎ: সনিয়া ও রাহুল গাঁধীর সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার দিল্লির ১০ জনপথে। নিজস্ব চিত্র।
দিল্লিতে পা দিয়ে গতকালই জানিয়েছিলেন, শাড়ির খুঁটে কোনও ‘নাম’ নিয়ে আসেননি তিনি। আর আজ কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে বৈঠক করে রাষ্ট্রপতি পদের জন্য কোনও সুনির্দিষ্ট নাম নয়, ঐকমত্যের ধারণাটিকেই তুলে ধরলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে সুকৌশলে এই প্রসঙ্গে বল ঠেলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তথা শাসক জোটের কোর্টে।
আজ সনিয়ার সঙ্গে পৌনে এক ঘণ্টা বৈঠকের পরে দশ জনপথের সামনে দাঁড়িয়ে মমতা বলেন, ‘‘কোনও বিশেষ নাম নিয়ে আমরা আলোচনা করিনি। প্রধান বিরোধী দলনেত্রী হিসেবে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গেই প্রথমে কথা বললাম আজ। রাহুল গাঁধীও সেখানে ছিলেন।’’ গত কালই মমতা যখন দিল্লিগামী বিমানে, তখন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার পটনায় বসে জানিয়েছিলেন, প্রণব মুখোপাধ্যায় পুনর্নির্বাচিত হলে তিনি খুশি হবেন। আজ এই প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মমতা বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের চেষ্টা করা উচিত একটি নামে সর্বসম্মতি তৈরি করার। আমরা সর্বসম্মতির পক্ষে।’’ রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, মমতার ইঙ্গিত স্পষ্ট। আগে থাকতেই ঝুলি থেকে কোনও নাম বের না করে মমতা অপেক্ষা করতে চাইছেন, মোদী কার ন নাম প্রস্তাব করেন, সেটি দেখে নেওয়ার। সেই নামটি যদি পছন্দের হয়, তা হলে সর্বসম্মতির রাস্তায় হাঁটার জন্য সক্রিয় হবেন তিনি।
এই মুহূর্তে ভোটের অঙ্ক এমনই যে, বিজেপি তথা এনডিএ-র শরিকদের সমর্থন ছাড়া কোনও বিরোধী প্রার্থীর জিতে আসা কার্যত অসম্ভব। মমতা দেখতে চাইছেন, মোদী শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে কোন নাম সামনে আনেন। যদি সেই নাম প্রণবের হয়, তা হলে কংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধীরা সহজেই তা সমর্থন করবেন। কিন্তু বিজেপি-র প্রার্থী যদি মমতা তথা অন্যান্য বিরোধীদের অপছন্দের হন, তখন বিরোধীদের মধ্যে ঐকমত্যের চেষ্টা শুরু হবে। দ্বিতীয় বিকল্প অর্থাৎ বিরোধীদের মধ্যেও সর্বসম্মতি তৈরির বিষয়ে আজ সরব হয়েছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘বিরোধীরা সবাই মিলে বসে নিজেদের মধ্যে সর্বসম্মতির চেষ্টা করা হচ্ছে। সনিয়া সবার সঙ্গে কথা বলা শুরু করেছেন। আমিও খুব শীঘ্রই ওনার সঙ্গে ফের বসব। এই আলোচনার প্রক্রিয়াটি শেষ হলে একটি ঐকমত্য তৈরি সম্ভব হবে।’’ আগামী সপ্তাহে মমতা ফের দিল্লি আসবেন। সূত্রের খবর, ২৩ অথবা ২৪ মে বিরোধীদের একটি বৈঠক হওয়ার কথা। সবক’টি বিরোধী দল যাতে সেই বৈঠকে যোগ দেয়, তার চেষ্টা চলছে। ওই বৈঠকে রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর নাম নিয়ে সর্বসম্মতির চেষ্টা করা হবে।
আরও পড়ুন:বন্ধ থাকবে না এটিএম, ব্যাঙ্ক শাখাও নিরাপদ
গত বার একটি নামের কথা আগে থাকতে বলে যে তিক্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, এ বার আর সেই পথে হাঁটতে চান না মমতা। পাশাপাশি প্রণববাবুর পুনর্নির্বাচন চান তিনি। কিন্তু প্রণববাবু ইতিমধ্যেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, দ্বিতীয় বার রাষ্ট্রপতি পদের জন্য লড়বেন না তিনি। একমাত্র সর্বসম্মতির ভিত্তিতে যদি তাঁকে বাছা হয়, তবেই প্রণববাবুর দ্বিতীয় বার রাষ্ট্রপতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ রাত সাড়ে দশটা নাগাদ রাষ্ট্রপতি ভবনে প্রণববাবুর সঙ্গে দেখা করেন মমতা। তাঁদের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ কথা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy