Advertisement
০৩ মে ২০২৪

মেমনের দায়িত্বে কসাবের ফাঁসুড়ে

কাল সকালেই কি ফাঁসি? ভোর রাত পর্যন্ত জানে না নাগপুর সেন্ট্রাল জেল। তবে শেষ মুহূর্তে যদি নির্দেশে আসে? তাই কোনও ঝুঁকি না-নিয়ে প্রস্তুতি সেরে রাখছেন জেল কর্তৃপক্ষ। তৈরি মহারাষ্ট্র পুলিশ-প্রশাসনও। গোটা রাজ্য জুড়ে জারি হয়েছে কড়া সতর্কতা। বাতিল করে দেওয়া হয়েছে সব পুলিশকর্মীর ছুটি।

আজমল কসাব

আজমল কসাব

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৫ ০৪:২৭
Share: Save:

কাল সকালেই কি ফাঁসি? ভোর রাত পর্যন্ত জানে না নাগপুর সেন্ট্রাল জেল। তবে শেষ মুহূর্তে যদি নির্দেশে আসে? তাই কোনও ঝুঁকি না-নিয়ে প্রস্তুতি সেরে রাখছেন জেল কর্তৃপক্ষ। তৈরি মহারাষ্ট্র পুলিশ-প্রশাসনও। গোটা রাজ্য জুড়ে জারি হয়েছে কড়া সতর্কতা। বাতিল করে দেওয়া হয়েছে সব পুলিশকর্মীর ছুটি।

যদি আগামিকাল ইয়াকুব মেমনের ফাঁসি হয়, তবে সকাল সাতটা নাগাদই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ওই সময়টাই বেছে রেখেছেন জেল কর্তৃপক্ষ। যদিও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি সূত্রে আজ জানিয়েছে, সূর্যোদয়ের ঠিক পরেই অর্থাৎ ভোর পাঁচটা থেকে সাড়ে পাঁচটার মধ্যেই ফাঁসি হতে পারে। তবে সবটাই পরিস্থিতিসাপেক্ষ।

জেল সূত্রের খবর, আসামিকে ফাঁসির জন্য তৈরির করার কাজ শুরু হয় ফাঁসির জন্য নির্ধারিত সময়ের দু’ঘণ্টা আগে থেকে। প্রথমে স্নান। তার পর যদি সে কিছু খেতে চায় তার ব্যবস্থা। এ ব্যাপারে আসামির ইচ্ছা জেনে নেওয়া হয় আগের দিন রাতেই। সূত্রের খবর, নিজের শেষ দিনটিতে স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছে ইয়াকুব। সে ক্ষেত্রে তাকে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরিজনদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হবে। এর পর ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে আসামিকে এক ঘণ্টা নিজের মতো থাকতে দেওয়া হয়। তখন সে যদি কোনও ধর্মগুরুর সঙ্গে কথা বলতে চায়, সেই ব্যবস্থাও করা হয়।

ধনঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষেত্রে যেমন ছিলেন নাটা মল্লিক, ইয়াকুবের ক্ষেত্রে ফাঁসির গোটা পর্ব তদারকি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বাবু জল্লাদকে। আজমল কসাবের সময়েও দায়িত্বে ছিলেন এই বাবু। তাঁর তত্ত্বাবধানে চার জন ফাঁসুড়ের একটি দল গঠন করা হয়েছে। পাকা কলা ও ঘি মাখিয়ে তৈরি নরম সুতির দড়ি। আজ সকাল ও সন্ধ্যায়, ইয়াকুবের সমান ওজনের বালির বস্তা দিয়ে ফাঁসির রিহার্সালও হয়েছে। তবে আসল দড়ি টানার দায়িত্ব কাকে দেওয়া হবে, তা খোলসা করেনি মহারাষ্ট্র সরকার।

জেল সূত্র বলছে, ফাঁসি-পর্ব মিটতে সময় লাগে তিন থেকে পাঁচ মিনিট। তার নির্দিষ্ট সময় অপেক্ষা সেরে দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার কথা। তবে তার আগে পরিবারকে এই মর্মে লিখিত মুচলেকা দিতে হয় যে, দেহ নিয়ে তারা কোনও বিক্ষোভ দেখাবে না বা শোরগোল তুলবে না। কসাবের মৃতদেহের দাবিদার না-থাকায় মৌলবির উপস্থিতিতে জেলেই তাঁকে কবর দেওয়া হয়েছিল। ইয়াকুবের ভাই সুলেমন ও তার তুতো ভাই উসমান ইতিমধ্যেই নাগপুর সেন্ট্রাল জেলে পৌঁছে দেখা করেছেন ইয়াকুব মেননের সঙ্গে। পৌঁছেছেন ইয়াকুবের স্ত্রী ও মেয়েও। হোটেলে গিয়ে পরিবারের হাতে একটি গোপন চিঠিও তুলে দিয়ে আসা হয়েছে পুলিশের তরফে। তা-ও শেষ মুহূর্তের কোনও জটিলতায় যদি পরিবারের হাতে ইয়াকুবের দেহ তুলে দেওয়া না হয়, সে ক্ষেত্রে সৎকারের জন্য এক মৌলবির ব্যবস্থাও রেখেছেন নাগপুর সেন্ট্রাল জেল কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE