Advertisement
E-Paper

রাহুলই প্রতিপক্ষ, মানছেন প্রধানমন্ত্রী

আগামী লোকসভা ভোটে রাহুল গাঁধীকেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী বলে ধরছেন নরেন্দ্র মোদী। আর তাঁকে ঠেকাতে তিন বছর আগে থেকেই ঘুঁটি সাজানো শুরু করলেন মোদী-অমিত শাহ-অরুণ জেটলিরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৬ ০৩:২৯

আগামী লোকসভা ভোটে রাহুল গাঁধীকেই নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী বলে ধরছেন নরেন্দ্র মোদী। আর তাঁকে ঠেকাতে তিন বছর আগে থেকেই ঘুঁটি সাজানো শুরু করলেন মোদী-অমিত শাহ-অরুণ জেটলিরা।

কী ভাবে?

পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভো‌ট মিটে যাওয়ার পরেই মোদী বৈঠক করেছেন দলের সভাপতি অমিত শাহ ও সরকারে নিজের সেনাপতি অরুণ জেটলিকে নিয়ে। বিজেপি সূত্রের খবর, স্থির হয়েছে লোকসভা ভোটের আগে রাহুল যাতে কোনও ভাবে মাথা তুলে দাঁড়াতে না-পারেন, সে ভাবেই সাজানো হবে বিজেপির কৌশল। এর ফলে এক দিকে যেমন কংগ্রেসের মধ্যে রাহুল-বিরোধী সুরকে উৎসাহিত করে নেতৃত্ব নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি করার চেষ্টা হবে, পাশাপাশি আঞ্চলিক দলগুলি যাতে কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে বিকল্প জোট করার চেষ্টা করে, সে বিষয়ে আড়াল থেকে তাদের উৎসাহিত করা হবে। বিজেপি নেতৃত্ব মনে করছেন— মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতীশ কুমার, মুলায়ম সিংহ যাদবের মতো আঞ্চলিক নেতাদের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। তাই তাঁরা কংগ্রেসকে ছুঁতে চাইবেন না। কারণ কংগ্রেস জিতলে রাহুলের নামই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উঠে আসবে। তা ছাড়া মোদী-বিরোধী শক্তি ছত্রভঙ্গ হলেও বিজেপিরই লাভ।

রাহুলকে কংগ্রেসের সভাপতি করার বিষয়টি এক রকম স্থির হয়েই রয়েছে। সনিয়া শুধু উপযুক্ত সময় খুঁজছেন। কিন্তু বিষয়টি বিলম্বিত হলেই খুশি হবেন অমিত শাহেরা। বিজেপি চাইছে, সাম্প্রতিক নির্বাচনী বিপর্যয়ের পরে ফের কোনও মহল প্রিয়ঙ্কাকে নেতৃত্বে আনার বিষয়টি তুলুক। এমনকী গাঁধী পরিবারের বাইরের কাউকে নেতৃত্বে আনার বিষয়টিও খুঁচিয়ে তুলতে উৎসাহিত করছে বিজেপি। জেটলি যেমন সম্প্রতি বলেছেন, ‘‘কংগ্রেস কী এখনও শুধু পরিবারে আবদ্ধ থাকবে, না কি দলের অন্য তারকাদেরও এ বার সুযোগ দেওয়া হবে? এ ভাবে চললে পরের লোকসভা ভোটে তো বিরোধীদের নেতৃত্ব দেওয়ার অবস্থাতেও থাকবে না কংগ্রেস।’’ কংগ্রেসও বুঝছে রাহুলের নেতৃত্ব নিয়ে নানা মহল এই যে সংশয় প্রকাশ করছে, তার পিছনে বিজেপির কলকাঠি রয়েছে। সম্প্রতি দিল্লিতে সনিয়ার জনসভায় রবার্ট বঢরার পোস্টার পড়া নিয়ে চাঞ্চল্য দেখা যায়। স্থানীয় কংগ্রেস নেতারা এ ঘটনায় বিজেপির হাতই খুঁজে পেয়েছিল।

সিদ্ধান্ত হয়েছে, নতুন কৌশলের অঙ্গ হিসেবে বিভিন্ন ভোটমুখী রাজ্যে কংগ্রেসের বদলে আঞ্চলিক দলগুলিকেই প্রতিপক্ষ হিসেবে তুলে ধরবে বিজেপি। ভোটকৌশল বিশারদ প্রশান্ত কিশোর যেমন মানছেন, পঞ্জাবে অরবিন্দ কেজরীবালের দল এগিয়ে রয়েছে। সে রাজ্যে এমনিতেই বিজেপি-অকালির অবস্থা টলোমলো। কেজরীবালকে বিজেপি যত গুরুত্ব দেবে, তত সরকার-বিরোধী ভোট ভাগ হবে কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টির মধ্যে। উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, কর্নাটক, রাজস্থান ও ছত্তীসগঢ়ের আসন্ন ভোটেও বিজেপি এমন কৌশল নিতে চায়, যাতে কংগ্রেস কোণঠাসা হয়ে থাকে।

কংগ্রেসের নেতারা অবশ্য বলছেন, বিজেপি অলীক স্বপ্ন দেখছে। মণিশঙ্কর আইয়ারের বক্তব্য—আপাত দৃষ্টিতে কংগ্রেস কোনও রাজ্যে ক্ষমতা দখল করতে না-পারলেও বিজেপির থেকে ভাল ফল করেছে। পাঁচ রাজ্যে ৮২২টি আসনের ভোটে বিজেপি পেয়েছে ৬৫টি আসন। আর কংগ্রেস পেয়েছে ১৩৯টি আসন। অসমেও কংগ্রেসের ভোট বেড়েছে। বিজেপি নয়, কংগ্রেসই একমাত্র দল— গোটা দেশে যার উপস্থিতি রয়েছে। আর সে কারণেই কাল সনিয়া গাঁধী বলেছেন, ‘‘কোনও হারই চিরস্থায়ী নয়। নীতিতে অবিচল থাকতে হবে।’’

Lok sabha polls Narendra M Rahul Gandhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy