মোদী সরকারের বাজেটে ছোট চাষিই কিন্তু প্রাধান্য পেল কৃষিক্ষেত্রে। সারে বাড়তি ভর্তুকি, কৃষিঋণের জন্য বাড়তি বরাদ্দ, এবং কৃষি প্রযুক্তিকে ছোট চাষির হাতের কাছে আনার কথা বললেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
গত পাঁচ বছরে কৃষি ও কৃষিসংক্রান্ত ক্ষেত্রে বার্ষিক গড় বৃদ্ধি ছিল ৩.৬ শতাংশ। মোদী সরকারের দাবি, এ বার ৪ শতাংশ বৃদ্ধি সম্ভব হবে। তবে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষির কাছে চাষকে লাভজনক করা ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে, সে কথাও স্বীকার করছেন অর্থমন্ত্রী। চাষির হাতে সহজে ঋণ পৌঁছতে গ্রামীণ এবং সমবায় ব্যাঙ্কগুলোকে চাঙ্গা করার জন্য বাজেট বরাদ্দ হয়েছে দুটি খাতে। দীর্ঘ মেয়াদি গ্রামীণ ঋণ তহবিলের জন্য রাখা হয়েছে ৫০০০ কোটি টাকা। সেই সঙ্গে গ্রামীণ সমবায়গুলি থেকে স্বল্পমেয়াদি ঋণের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে আরও ৫০০০ কোটি টাকা। বিশেষ করে ভূমিহীন কৃষককে ঋণ দিতে নাবার্ডের মাধ্যমে টাকা দেওয়া হবে পাঁচ লক্ষ ‘যৌথ কিষাণ সংঘকে।’ কৃষিঋণের জন্য মোট বরাদ্দ গত বছরের থেকে এক লক্ষ কোটি টাকা বেড়ে ২০১৪-১৫ সালে হয়েছে আট লক্ষ কোটি টাকা। সেচের জল নিশ্চিত করার জন্য ‘প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিচাঁই যোজনা’ শুরু করল কেন্দ্রীয় সরকার। এই খাতে বরাদ্দ হয়েছে ১০০০ কোটি টাকা।
যে বিষয়টি নিয়ে ছোট ও মাঝারি চাষিরা বার বার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তা হল সারের উপর ভর্তুকি। বার্ষিক ভর্তুকির পরিমাণ ইউপিএ সরকারের অন্তর্বর্তিকালীন বাজেটে প্রস্তাবিত ৬৭,৯৭০ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭২,৯৭০ কোটি টাকা করলেন জেটলি। চাষিদের উৎপাদনের সঙ্গে বিপণনেও উৎসাহ দিতে নাবার্ডকে ২০০ কোটি টাকার একটি নতুন তহবিল দেওয়া হচ্ছে। তা দিয়ে আগামী দু’বছরে দেশজুড়ে আরও অন্তত দু’হাজার ‘উৎপাদক-সংগঠন’ তৈরি করা হবে। এরা চাষিদের উৎপাদন বিপণন করবে। সেই সঙ্গে, রাজ্যগুলিকে উৎসাহ দেওয়া হবে কৃষি বাজার তৈরি করতে।
ফসল সংরক্ষণের জন্যও বাজেটে আলাদা করে নজর দেওয়া হয়েছে। শস্য ও সব্জির সংরক্ষণে গুদামের পরিকাঠামো তৈরি করার জন্য ৫০০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। খাদ্য সংরক্ষণ এবং প্রক্রিয়াকরণকে উৎসাহ দিতে সরকার প্রসেসিং এবং প্যাকেজিং-এর যন্ত্রপাতির উপর শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬ শতাংশ করছে।
কৃষি প্রযুক্তির উন্নতির জন্য ছ’টি নতুন প্রতিষ্ঠান খুলবে কেন্দ্র। এর মধ্যে দুটি উৎকৃষ্ট কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান হবে অসম এবং ঝাড়খণ্ডে (বরাদ্দ ১০০ কোটি টাকা)। দু’টি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (অন্ধ্র প্রদেশ এবং রাজস্থান) আর দু’টি উদ্যানবিদ্যা বিশ্ববিদ্যালয় (তেলঙ্গানা ও হরিয়ানা) খোলার জন্যও ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।
কৃষি বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, বাজেটে নেওয়া নতুন এই দিশায় কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন বাড়বে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy