জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) নিয়ে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে স্মারকপত্র পাঠাল আসাম নাগরিক মঞ্চ। সারা রাজ্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিলচরেও আজ ওই কর্মসূচি পালন করা হয়।
নাগরিক মঞ্চের দাবি, ২০১৪ সালের ভোটার তালিকার ভিত্তিতে এনআরসি সংশোধন করতে হবে। ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে এ দেশে আসা সবাইকে নাগরিকত্ব প্রদান, চা জনগোষ্ঠী এবং ভিন রাজ্য থেকে এসে অসমে স্থায়ী ভাবে বসবাসকারীদের নাম এনআরসিতে রাখতে হবে। ওই সব দাবি আদায়ে ইতিমধ্যেই ‘বরাক ভ্যালি হিউম্যান রাইটস প্রোটেকশন সোসাইটি’ সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেছে। নাগরিক মঞ্চের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানানো হয়েছে, আদালতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত এনআরসি-র কাজকর্ম স্থগিত রাখতে তাঁরা যেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
এ দিন শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে নাগরিক মঞ্চের সদস্যরা ক্ষুদিরাম মূর্তির পাদদেশে ভিড় জমান। সেখানে একঘণ্টা ধর্নার পর অতিরিক্ত জেলাশাসক এম কে দাসের হাতে স্মারকপত্রগুলি তুলে দেওয়া হয়। আসাম নাগরিক মঞ্চের কার্যবাহী সভাপতি নীলাদ্রি রায়, অবসরপ্রাপ্ত জেলাশাসক সন্তোষ গুপ্ত ওই কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন।
নীলাদ্রিবাবু বলেন, ‘‘এনআরসি নিয়ে যে যাঁর মতো কথা বলে চলেছেন। সমস্যার মূলে কেউ যাচ্ছেন না।’’ তাঁর বক্তব্য, রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের হলফনামার ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট এনআরসি সংশোধনের নির্দেশ দিয়েছে। এখন কোনও ধরনের সংশোধন-সংযোজনে সুপ্রিম কোর্টের নতুন নির্দেশ প্রয়োজন। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার হলফনামা দিয়ে সর্বোচ্চ আদালতকে তাঁদের বক্তব্য জানাতে পারে। কিন্তু কেউ সে পথে এগোচ্ছে না। অন্য কয়েকটি সংগঠনও এনআরসি নিয়ে আন্দোলন করছে, কিন্তু সুপ্রিম কোর্টে নিজেদের বক্তব্য জানানোর কথা তাঁরাও ভাবছে না।
‘বরাক ভ্যালি হিউম্যান রাইটস প্রোটেকশন সোসাইটি’-র মামলার প্রসঙ্গে তিনি জানান, বৃহস্পতিবার তাঁদের রিট পিটিশন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির এজলাসে উঠবে। কবে, কোন বেঞ্চে ওই মামলার শুনানি শুরু হবে— প্রধান বিচারপতি সে দিন তা জানিয়ে দেবেন। অন্য দিকে, তিনটি অসমিয়া সংগঠনের যে মামলাগুলির ভিত্তিতে এনআরসি সংশোধনের কাজ চলছে, তাতে পক্ষভুক্ত হওয়ার জন্য সোসাইটি যে আর্জি পেশ করেছে, সুপ্রিম কোর্টে তা নিয়ে শুনানি হবে ১৪ জুলাই।
এনআরসি-র দুশ্চিন্তায় রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় আত্মহত্যার প্রবণতা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন নীলাদ্রিবাবুরা। আত্মঘাতী হওয়ার পথে না এগিয়ে আন্দোলনে সামিল হতে তাঁরা আহ্বান জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy