Advertisement
E-Paper

বিরোধী হুঙ্কারে এ বার বাজেট অধিবেশন নিয়েও চিন্তা মোদীর

বিজেপি সূত্রের খবর, মন্ত্রিসভার শীর্ষ সদস্যদের কাছে ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কারণ, বাজেট অধিবেশন শুরু হয়ে যাবে মাসখানেক পরেই। এ দিকে, বিরোধীদের একজোট করে এখন সরকারকে পদে পদে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করছেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৪:১০

শীতের সংসদ যে ভাবে ধুয়েমুছে গেল, তাতে এ বার বাজেট অধিবেশন নিয়েও সিঁদুরে মেঘ দেখছেন নরেন্দ্র মোদী।

বিজেপি সূত্রের খবর, মন্ত্রিসভার শীর্ষ সদস্যদের কাছে ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কারণ, বাজেট অধিবেশন শুরু হয়ে যাবে মাসখানেক পরেই। এ দিকে, বিরোধীদের একজোট করে এখন সরকারকে পদে পদে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করছেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধী। সংসদ অধিবেশনেই তার প্রমাণ মিলেছে। মোদী শিবির মনে করছে, জানুয়ারির শেষ নাগাদ শুরু হওয়া বাজেট অধিবেশনেও আক্রমণের তীব্রতা বাড়বে বই কমবে না। কারণ, বাজেট অধিবেশনের পরেই উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। ভোটের আঁচ অবধারিত ভাবে সংসদেও ফেলতে চাইবে বিরোধীরা। আর তখন আরও আক্রমণাত্মক হবে রাহুল, মুলায়ম সিংহ, মায়াবতীর দল।

চিন্তা আরও আছে। নোট-বাতিলের ধাক্কায় রাজ্যগুলি মিলে পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) বিল আটকে দিয়েছে এ বারের অধিবেশনে। পরের অধিবেশনেও সেটি পাশ করানো না গেলে সঙ্কট তৈরি হবে। কারণ, সরকারের শীর্ষ মহলই এখন স্বীকার করে নিচ্ছে, নোট বাতিলের পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে লেগে যাবে আরও কয়েক মাস। তা ছাড়া, বাজেট অধিবেশনের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, বাজেটটি পাশ করানো। সচরাসচর বাজেট পাশে বিরোধীরা বাদ সাধেন না। কিন্তু এখন তাঁদের যা মনোভাব, তাতে বাজেট নিয়েও বিরোধীরা সরকারকে বেগ দেবেন বলে আশঙ্কা করছে মোদী শিবির। এই অবস্থায় দলের নেতাদের এখন থেকেই বিরোধীদের কাছে পৌঁছে যাওয়ার কৌশল নিতে বলছেন প্রধানমন্ত্রী।

এ বারের শীতকালীন অধিবেশনে লোকসভায় কাজ হয়েছে মাত্র ১৭ শতাংশ। আর রাজ্যসভায় ২১ শতাংশ। লোকসভায় ১১১ ঘণ্টা কাজ হওয়ার কথা থাকলেও হট্টগোলের জেরে নষ্ট হয়ে গিয়েছে ৯২ ঘণ্টাই। রাজ্যসভায় ১০৮ ঘণ্টার মধ্যে কাজ হতে পেরেছে মাত্র ২২ ঘণ্টা। নোট বাতিল নিয়ে দুই সভায় মাত্র ৮ ঘণ্টা আলোচনা হয়েছে, তা-ও অসমাপ্ত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিমান অবতরণ বিতর্ক নিয়ে বিরোধীরা আধ ঘণ্টা আলোচনা করতে পেরেছেন। কিন্তু অন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছোঁয়াই যায়নি। সংসদের গত বাদল অধিবেশনে মোদী সরকারই বড় মুখ করে বলেছিল, রাজ্যসভায় ১০০ শতাংশ ও লোকসভায় ১১১ শতাংশ কাজ হয়েছে। সেই লোকসভায়, বিজেপির বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা সত্ত্বেও এ বার কাজই চালাতে পারেনি সরকার পক্ষ।

সমাজ গবেষক অান্দ্রে বেতের মতে, ‘‘সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে সমন্বয় দরকার। সেটি না থাকলে কোনও কাজ হবে না।’’ সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি বলছেন, ‘‘এই সমন্বয় করার জন্যই খোদ প্রধানমন্ত্রী গিয়েছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের বাড়িতে। নিজের বাসভবনে সনিয়া গাঁধী ও মনমোহন সিংহকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন গত বছরের নভেম্বরে। তার পরে এক বছরের বেশি সময় কেটে গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত জিএসটি পাশ করাতে বিরোধীরা এগিয়ে এল না।’’ কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারির বক্তব্য, ‘‘সংসদ চালানোর দায় সরকারের। বাদল অধিবেশনে সংসদ পুরো চলার কৃতিত্ব তো সরকার নিয়েছিল। এ বার না চালানোর দায় কেন বিরোধীদের ঘাড়ে ঠেলছে? সরকারই হল্লা করে এ বার সংসদ চলতে দেয়নি। যখন বিরোধী ছিলেন, তখন (বর্তমান বিদেশমন্ত্রী) সুষমা স্বরাজ বলতেন, সংসদ অচল করাটাও বিরোধী দলের কৌশলের অঙ্গ।’’

এরই মধ্যে বিজেপির ‘বন্ধু’ নেতা নবীন পট্টনায়কের দল বিজেডির সাংসদ বৈজয়ন্ত ‘জয়’ পণ্ডা একটি ‘ব্যতিক্রমী’ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ঠিক করেছেন, হট্টগোলে নষ্ট হওয়া সময়ের অনুপাতে সাংসদ হিসেবে পাওয়া নিজের বেতন ফিরিয়ে দেবেন তিনি। টুইটারে জয় এই কথা লেখার পরে রবিবার রাত পর্যন্ত সেই টুইটটি প্রায় ২৪০০ বার ‘রিটুইট’ হয়েছে। ওড়িশার কেন্দ্রাপড়ার সাংসদ জয় জানিয়েছেন, সকলের পক্ষে হয়তো বেতন ফেরানো সম্ভব নয়। কিন্তু তিনি প্রতীকী প্রতিবাদ করতে চান। অন্যদেরও এই পথ অনুসরণের আবেদন জানিয়েছেন জয়। তাঁর প্রস্তাব, আরও কড়া হোন স্পিকার। কোনও সাংসদ ওয়েলে প্রথম বার নামলে তাঁকে সে দিনের মতো, দ্বিতীয় বার হলে সেই অধিবেশনের মতো বের করে দেওয়া হোক। তা হলেই সংস্কার আসবে সংসদে।

সে অবশ্য অনেক পরের কথা।

Narendra Modi Budget Session
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy