Advertisement
১১ অক্টোবর ২০২৪

মন্ত্রিসভার রদবদলে নির্মলায় চমক মোদীর

নিজের দফতর লাগোয়া সাউথ ব্লকে সুষমা স্বরাজের পাশেই আর এক মহিলাকে নিয়ে এলেন মোদী। সকলকে চমকে দিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্বে আনলেন নির্মলা সীতারামনকে। বাণিজ্যের স্বাধীন দায়িত্বের প্রতিমন্ত্রী থেকে সোজা বিগ-ফোরে! ইন্দিরা গাঁধীও প্রতিরক্ষায় ছিলেন।

প্রতিরক্ষায়: রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথগ্রহণের পরে নির্মলা সীতারামন। রবিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

প্রতিরক্ষায়: রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথগ্রহণের পরে নির্মলা সীতারামন। রবিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:০৬
Share: Save:

চমক দেওয়ার ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেন নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী।

নিজের দফতর লাগোয়া সাউথ ব্লকে সুষমা স্বরাজের পাশেই আর এক মহিলাকে নিয়ে এলেন মোদী। সকলকে চমকে দিয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের দায়িত্বে আনলেন নির্মলা সীতারামনকে। বাণিজ্যের স্বাধীন দায়িত্বের প্রতিমন্ত্রী থেকে সোজা বিগ-ফোরে! ইন্দিরা গাঁধীও প্রতিরক্ষায় ছিলেন। তবে এই প্রথম কোনও মহিলা হলেন দেশের পূর্ণ সময়ের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। আর নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভার কমিটিতে দুই মহিলাও স্বাধীন ভারতে প্রথম।

আরও পড়ুন: এ যেন মূষিক প্রসব

রদবদলে নতুন মুখের ন’জনের মধ্যে চার আমলার মন্ত্রিসভায় পা রাখার খবর কাল রাতেই জানিয়েছিল সরকার। নেতা ছেড়ে বাবুদের উপর ভরসা রাখা নিয়ে বিতর্কের আড়ালে আসলে বিগ-ফোরের জট ছাড়াচ্ছিলেন মোদী। আজ বিদেশে পাড়ি দেওয়ার আগে মোদী-মন্ত্রিসভার রদবদলে দেখা গেল, সুরেশ প্রভুর ছেড়ে যাওয়া রেল পেলেন পীযূষ গয়াল। তাঁর সঙ্গে পদোন্নতি হলো ধর্মেন্দ্র প্রধান, মুখতার আব্বাস নকভি আর নির্মলার। মোদী বিমানে চাপার পরেই এল আসল চমক। এত দিন প্রতিরক্ষার দায়িত্বে থাকা অরুণ জেটলি যাকে বললেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত মাইল ফলক। সাড়া পড়েছে গোটা দুনিয়ায়।’’ আর নতুন দায়িত্ব পেয়ে নির্মলা বলছেন, ‘‘গুরুদায়িত্ব। আপ্রাণ চেষ্টা করব লক্ষ্যপূরণে।’’

এই চমকের পিছনেও মন্ত্রিসভার রদবদলে ছিল মোদীর ভোট-কৌশল। মনোহর পর্রীকরের পরে নির্মলার মতো একজন সৎ এবং একই সঙ্গে আরএসএস ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের ঘনিষ্ঠকে প্রতিরক্ষায় বসিয়েছেন। বাকি মন্ত্রক বণ্টনেও পাখির চোখ করেছেন ২০১৯-র ভোটযুদ্ধকেই। কাল থেকে বিস্তর বিতর্ক চলছে, প্রতিভা কম বলেই কি আমলাদের ভিড় জমাতে হল? দিনের শেষে দেখা গেল, হরদীপ সিংহ পুরী, রাজকুমার সিংহ, আলফোন্স কান্নানথানমের মতো প্রাক্তন আমলাদের দেওয়া হল শহর, আবাসন, বিদ্যুৎ, তথ্য-প্রযুক্তির মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রক। বন্দারু দত্তাত্রেয়, রাজীব প্রতাপ রুডি, কলরাজ মিশ্রের থেকে ইস্তফা আদায় করে নিয়ে শ্রম, দক্ষতা, ছোট-মাঝারি মন্ত্রকগুলোও তুলে দেওয়া হল নতুন মন্ত্রীদের হাতে। সকালে প্রাতরাশ বৈঠকে মোদী বলেই দিলেন, ‘‘এ বারে কাজ করে দেখান।’’

সবিস্তার দেখতে ক্লিক করুন।

ভোট তাড়নায় রাখলেন আঞ্চলিক ও জাতপাতের ভারসাম্যও। গোরক্ষপুরে যোগী-বিরোধী ব্রাহ্মণ নেতা শিবপ্রকাশ শুক্ল এলেন মন্ত্রিসভায়, কলরাজ মিশ্রের বদলে। এলেন বিহারের ব্রাহ্মণ নেতা অশ্বিনী চৌবে। ফগ্গনসিংহ কুলস্তের বদলে দলিত বীরেন্দ্র কুমার। রুডির বদলে রাজপুত রাজকুমার সিংহ। সঞ্জীব বালিয়ানের বদলে হরিয়ানা সীমান্তে পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের জাঠ নেতা সত্যপাল সিংহ। রাজপুত নেতা গজেন্দ্র শেখাওয়াত। কেরলের খ্রিস্টান আলফোন্স। নির্মলা কর্নাটকের। দক্ষিণের এই রাজ্য থেকেই এলেন অনন্তকুমার হেগড়ে।

রদবদলে হাত পড়ল না কোনও শরিক মন্ত্রীর দফতরে। তবে নতুন কেউ এলেনও না শরিকদের মধ্যে থেকে। আর তা নিয়েই শরিকদের সঙ্গে তিক্ততা বাড়ল বিজেপির। শপথ অনুষ্ঠানে আসেইনি জেডিইউ-শিবসেনা। তারা বলছে, সংখ্যার অহঙ্কার, তাই কাউকে ডাকেনি বিজেপি! যদিও বিজেপি বলছে, এখনও হতে পারে রদবদল। শুধু জেডিইউ কেন, এডিএমকের সঙ্কট মিটলেও হতে পারে আর এক দফা রদবদল। কংগ্রেস বলছে, এ সবই আসলে চমক। যে সব মন্ত্রক থেকে সরকারের আয় হয়, সে সব মন্ত্রীদেরই ইস্তফা দিতে হয়েছে খারাপ কাজের জন্য! এ তো প্রধানমন্ত্রীরই ব্যর্থতা। এখন চমকের আড়ালে নতুন মুখ দিয়ে কি বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরবে?

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE