Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
জারি তরজা

ভোটের কেন্দ্রে বিহার-প্যাকেজই

আগামী ভোটে বিহার রাজনীতি যে ‘বিহার প্যাকেজ’-কে ঘিরেই ঘুরপাক খাবে তা ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এক দিকে, মোদীর বিহার-প্যাকেজকে নস্যাত্ করতে উঠেপড়ে লেগেছেন নীতীশ কুমার। অন্য দিকে, ভোটের আগে এই লক্ষ-কোটি টাকার প্যাকেজ ঘিরে নীতীশের ‘হতাশা’-কে জনসমক্ষে প্রতিষ্ঠিত করতে তত্পর বিজেপিও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পটনা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৫ ০৩:৩৯
Share: Save:

আগামী ভোটে বিহার রাজনীতি যে ‘বিহার প্যাকেজ’-কে ঘিরেই ঘুরপাক খাবে তা ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এক দিকে, মোদীর বিহার-প্যাকেজকে নস্যাত্ করতে উঠেপড়ে লেগেছেন নীতীশ কুমার। অন্য দিকে, ভোটের আগে এই লক্ষ-কোটি টাকার প্যাকেজ ঘিরে নীতীশের ‘হতাশা’-কে জনসমক্ষে প্রতিষ্ঠিত করতে তত্পর বিজেপিও।

আরায় প্যাকেজ ঘোষণা করার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সহরসার জনসভায় বলেছিলেন, ‘‘এ বার দেখবেন সাংবাদিক সম্মেলন করে উনি (নীতীশের নাম নেননি মোদী) বলবেন এ সবই তো পুরনো প্রকল্প।’’ আজ কার্যত তাই করলেন মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। ৭ নম্বর সার্কুলার রোডে, নিজের বাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে নীতীশ কুমার আজ বললেন, ‘‘বিহারে যে সব প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন তার বেশির ভাগটাই পুরনো। তিনি ভুলে গিয়েছেন বিহার গণিতজ্ঞদের জন্মভূমি। আর এ বার বিহারবাসী মিথ্যা প্রতিশ্রুতিতে ভুলবেন না।’’ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া এক লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজের মধ্যে এক লক্ষ আট হাজার কোটি টাকা পুরনো প্রকল্পের বরাদ্দ টাকা।’’ বাকি টাকার বরাদ্দ নিয়েও তাঁরা ‘রিসার্চ’ করছেন বলে জানিয়েছেন নীতীশ। এক এক করে সমস্ত কিছু তাঁরা প্রকাশ করবেন বলে জানিয়েছেন। মোদীর ‘অচ্ছে দিন’-কে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘কিছু লোকের ভাল দিন এসেছে। দেশের বাকি মানুষের অবস্থা ভাল না।’’

যেন তৈরিই ছিল দিল্লি। সরাসরি নীতীশকে দ্বৈরথে আহ্বান করেছেন প্রাক্তন দল সভাপতি তথা মোদী মন্ত্রিসভার সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ী। নীতীশকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে গডকড়ী বলেন, ‘‘সরকার এই প্যাকেজের যাবতীয় ঘোষণা নিয়ে আমনে-সামনে বিতর্ক করতে প্রস্তুত।’’ একটি ন’পাতার তালিকা দিয়ে গডকড়ী বলেন, ‘‘প্যাকেজের কয়েকটি প্রকল্প আগে ঘোষণা হলেও সেগুলির কাজ শুরু হয়নি। টাকাও বরাদ্দ হয়নি। নীতীশ সরকার তার জন্য জমিও দেয়নি।’’

নীতীশের দাবি, জাতীয় সড়ক সংক্রান্ত ৪১টি প্রকল্পের মধ্যে ৩৭টি ২০০৫ সালে ঘোষিত হয়েছে। বিদ্যুৎ কারখানার যে কথা প্রধানমন্ত্রী বলেছেন তা বেসরকারি ক্ষেত্রের বিনিয়োগ বলে জানিয়েছেন নীতীশ। তিনি বলেন, ‘‘কৃষিক্ষেত্রে আমরা গত পাঁচ বছরে ৬৫০৫ কোটি টাকা খরচ করেছি। আগামী পাঁচ বছরে ১১৭১০ কোটি টাকা খরচ করার পরিকল্পনা রয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র সরকার ৩০৯৪ কোটি টাকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে। কী ভাবে কী হবে!’’

গডকড়ী বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর দাবির কোনও ভিত্তি নেই। আসলে নীতীশ কুমার ইউপিএ জমানা থেকে শুধুমাত্র ৫০ হাজার কোটি টাকা চেয়ে আসছেন রাজ্যের জন্য। আজ ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করে দেওয়ার পর তিনি হতাশ হয়ে পড়েছেন।’’ রাজ্যের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সুশীলকুমার মোদী বলেন, ‘‘আগের ইউপিএ সরকার বিহারের জন্য কত টাকা বরাদ্দ করেছিল, সেটা নীতীশ কুমার স্পষ্ট করে বলুন।’’ তাঁর মতে এই লক্ষ-কোটি টাকার প্যাকেজ চালু করার ইচ্ছা বা ক্ষমতা, নীতীশের কোনওটাই নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE