ভোটের সময় দ্রুত উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। আর সেই কাজ করতে গিয়ে প্রতিদিন বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। বাধার অন্যতম কারণ রাজ্যে পর্যাপ্ত আইএএস অফিসারের অভাব। সরকারি হিসেবে, রাজ্যে একশোরও বেশি আইএএস অফিসারের ঘাটতি রয়েছে। পরিস্থিতি এমনই যে ১৫ জন প্রবীণ আইএএস অফিসারের হাতে রয়েছে তিনটি বা তার বেশি সংখ্যক দফতরের ভার। ফলে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
পুরো বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ নীতীশ। কাজে গতি আনার জন্য বারবার চাপ দেওয়াতেও কাজ হচ্ছে না। বাধ্য হয়েই এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। খুব শীঘ্রই দিল্লি যাবেন নীতীশ। তখন বিষয়টি নিয়ে আলোচনাও করবেন বলেও সচিবালয়ের কর্তাদের জানিয়েছেন তিনি। গত ২৪ জুন দিল্লি গিয়ে মুখ্যসচিব অঞ্জনীকুমার সিংহ বিষয়টি কেন্দ্রের গোচরেও এনেছেন।
কেন্দ্রীয় সরকারের পার্সোনেল, জন-অভিযোগ ও পেনসন দফতরের ২০১৫-১৬ সালের বার্ষিক রিপোর্ট অনুযায়ী বিহারের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৩৪২ জন আইএএস অফিসার। কিন্তু বাস্তবে বিহারে রয়েছেন ২১৭ জন আইএএস অফিসার। তার মধ্যে আবার ৪০ জন কেন্দ্রীয় ডেপুটেশনে রয়েছেন। ফলে কার্যকর সংখ্যাটি হল ১৭৭। এর মধ্যে সাত জন মুখ্যসচিব পদমর্যাদার অফিসার রাজ্যে রয়েছেন। আগামী তিন মাসের মধ্যে অবসর নেবেন এঁদের চার জন। এ ছাড়াও, অতিরিক্ত মুখ্যসচিব সুধীর কুমার রাকেশ চাকরির মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর আগেই স্বেচ্ছাবসর নিচ্ছেন। দশ জন বিশেষ সচিবের মধ্যে তিন জন এ বছরেই অবসর নেবেন।
প্রধান সচিব পদমর্যাদার ২৭ জন আইএএস অফিসারের কাঁধে রয়েছে দুই বা বেশি দফতরের দায়িত্ব। ১৯৮৫ সালের আইএএস অরুণকুমার সিংহ জলসম্পদ দফতরের প্রধান সচিব। একই সঙ্গে সংসদীয় দফতর এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দফতরের দায়িত্ব রয়েছে তাঁর হাতে। এ ছাড়াও তিনি এসসিএডিএ-র রিজিওনাল ডেভলপমেন্ট কমিশনার ও চেয়ারম্যানের পদও সামালাচ্ছেন। রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব ১৯৮৭ ব্যাচের আইএএস আমির সুভানি পাঁচটি দফতরের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। সাধারণ প্রশাসন, সংখ্যালঘু উন্নয়ন, জন অভিযোগ দফতর রয়েছে তাঁর হাতে। এ ছাড়া বিহার প্রশাসনিক সুধার মিশনের তিনি নির্দেশকও। এ ছাড়াও আর কে মহাজন, সুধীর কুমার, সুজাতা চতুর্বেদী, ব্রজেশ মেহরোত্রা, অমৃতলাল মিনা, দীপক প্রসাদ, চৈতন্য প্রসাদ, এস সিদ্ধার্থদের চারটি করে গুরুত্বপূর্ণ দফতর রয়েছে।
সচিব পদমর্যাদার অফিসারদের অবস্থাও তথৈবচ। ভারপ্রাপ্ত এক সচিবের কথায়, ‘‘দিনের পর দিন একেবারে আলাদা ধরনের দফতরের দায়িত্বে কাজ করা রীতিমতো সমস্যার। এর ফলে উন্নয়নের কাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করেও অগ্রাধিকারের ভিত্তি সব সময় মান্য করা সম্ভব
হয় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy