Advertisement
০৬ মে ২০২৪

প্রক্সি ভোট নিয়ে চিন্তায় বিরোধীরা

কেন্দ্রীয় সরকারের আনুমানিক হিসেবে, অনাবাসী ভারতীয়ের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৬০ লক্ষ। পঞ্জাব, কেরল, গুজরাতের মতো রাজ্যগুলো থেকে বিদেশে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের সংখ্যা সব থেকে বেশি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৭ ০৩:১১
Share: Save:

নিউ ইয়র্ক হোক বা সিডনি— বিদেশ সফরে গেলে অনাবাসী ভারতীয়দের মন জয়ের চেষ্টায় কসুর করেন না নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু এ বার মোদী সরকার যে ভাবে অনাবাসী ভারতীয়দের ‘প্রক্সি’র মাধ্যমে ভোটের সুযোগ দিতে চাইছে, তার পিছনে বিজেপিরই রাজনৈতিক অভিসন্ধি দেখছে বিরোধীরা।

‘প্রক্সি ভোট’-এর ক্ষেত্রে ভোটারের কোনও আত্মীয় তাঁর হয়ে ভোট দিতে পারবেন। বুধবারই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই প্রস্তাবে নীতিগত ভাবে সায় দিয়েছে। এ বার জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ও নির্বাচনী বিধিতে সংশোধন করতে হবে মোদী সরকারকে। কিন্তু বিরোধীদের যুক্তি, অনাবাসী ভারতীয় মানেই তাঁরা ধনী বা উচ্চশিক্ষিত, এমন তো নয়। লক্ষ লক্ষ গরিব শ্রমিক আমেরিকা বা আরবের দেশগুলোতে কাজ করতে যান। ভয় দেখিয়ে, চাকরি কেড়ে নেওয়ার হুমকি দিয়ে বা টাকার লোভ দেখিয়ে তাঁদের ভোট কাড়া কঠিন নয়।

কেন্দ্রীয় সরকারের আনুমানিক হিসেবে, অনাবাসী ভারতীয়ের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৬০ লক্ষ। পঞ্জাব, কেরল, গুজরাতের মতো রাজ্যগুলো থেকে বিদেশে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের সংখ্যা সব থেকে বেশি। সেখানে অনাবাসীদের ভোট বিধানসভা ভোটে বা স্থানীয় নির্বাচনে খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারে। বিরোধীদের দাবি, সেই চেষ্টাই করছে বিজেপি। যাঁদের ভোট টাকার লোভ বা ভয় দেখিয়ে কাড়া যাবে না, তাঁদের মন জিততেই মোদী প্রতিটি বিদেশ সফরে গিয়ে অনাবাসী ভারতীয়দের সম্মেলনে নিজের ঢাক পেটাচ্ছেন।

আরও পড়ুন:মূলস্রোতে ফিরতে চান কেএলও প্রধান

কংগ্রেস নেতৃত্বের যুক্তি, ‘প্রক্সি ভোট’-এর ক্ষেত্রে কে কাকে ভোট দিচ্ছে, সেই গোপনীয়তা থাকে না। কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন যখন সব দলের মতামত জানতে চেয়েছিল, সে সময়ও তাঁরা এ বিষয়ে ঘোর আপত্তি জানিয়েছিলেন। সিপিএম নেতা সীতারাম ইয়েচুরিও বলেন, ‘‘কেরল থেকে পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলোতে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকদের পাসপোর্ট জমা রাখতে হয় সংস্থার মালিকদের কাছে। এঁদের ভোট কেড়ে নেওয়া খুবই সহজ। দেখেশুনে মনে হচ্ছে, বিজেপির প্রবাসী শাখাগুলো সক্রিয় হয়ে উঠেছে।’’

অনাবাসী ভারতীয়দের ভোটাধিকার দেওয়া হয় ২০১০-এ। কিন্তু এতদিন তাঁদের ভোট দিতে হলে এ দেশে আসতে হতো। সরকারি সূত্রের দাবি, অনাবাসী ভারতীয়দের জন্য ‘প্রক্সি ভোট’ বা ‘ই-ব্যালট’ অর্থাৎ ইন্টারনেট বা ই-মেলের মাধ্যমে ভোটাধিকার দেওয়ার প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনের। সুপ্রিম কোর্টও দ্রুত এই অধিকার দেওয়ার জন্য একাধিকবার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। কিন্তু কংগ্রেস ও সিপিএম নেতাদের যুক্তি, ই-ব্যালটেও তাঁদের আপত্তি রয়েছে। সেখানে কারচুপি হতে পারে।

তা হলে অনাবাসী ভারতীয়রা ভোট দেবেন কী ভাবে? কংগ্রেস ও সিপিএমের সুপারিশ, আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো দেশগুলো যেমন তাদের দেশে ভোটের সময় এখানকার দূতাবাসে ভোটগ্রহণ কেন্দ্র খোলে, তেমনই বিদেশে ভারতীয় দূতাবাসেও ভোটগ্রহণ কেন্দ্র খোলা হোক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE