Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
হাফিজের বিচার বিশ বাঁও জলে

বিশ্ব-পরিবারে ঠাঁই নেই পাকিস্তানের: জেটলি

গুজরাত ভোটের প্রচারে গিয়ে সুরাতের এক সভায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, ‘‘মুম্বই-কাণ্ডের (ন’বছর পূর্তির) দু’দিন আগে ওই জঙ্গিকে ওরা মুক্ত করেছে।

সংবাদ সংস্থা
মুম্বই শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:০০
Share: Save:

ন’বছর আগে আজকের তারিখেই পাক সন্ত্রাসে বিক্ষত হয়েছিল মুম্বই। মৃত্যু হয় ১৬৬ জনের। সেই ২৬/১১ হামলার মূল চক্রী হাফিজ সইদ এখনও বহাল তবিয়তে পাকিস্তানে। বস্তুত, ওই হামলায় জড়িত কোনও জঙ্গির বিচারের ব্যাপারে একেবারেই গা নেই পাকিস্তানের। উল্টে গত শুক্রবার জামাত-উদ-দাওয়ার প্রধান হাফিজ গৃহবন্দি-দশা থেকে মুক্তি পেয়েছেন লাহৌর আদালতের রায়ে। এ কেমন আইনের শাসন? এই প্রশ্নটিই আজ বারবার উঠে এল ভারতের বিভিন্ন নেতা-মন্ত্রীর মুখে।

গুজরাত ভোটের প্রচারে গিয়ে সুরাতের এক সভায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, ‘‘মুম্বই-কাণ্ডের (ন’বছর পূর্তির) দু’দিন আগে ওই জঙ্গিকে ওরা মুক্ত করেছে। দুনিয়া একসুরে বলছে, সন্ত্রাসকে সমর্থন করে যে দেশ, বিশ্ব-পরিবারে তার কোনও ঠাঁই নেই।’’ এরই সঙ্গে জেটলির হুঁশিয়ারি, ‘‘যে-ই লস্করের কম্যান্ডার হচ্ছে, সে বেশি দিন বেঁচে থাকছে না— গত মাস আটেক ধরেই দেখা যাচ্ছে এটা।’’ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেন রিজিজু মুম্বইয়ে বলেন, ‘‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ভারত জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে। প্রতিবেশী দেশটি সন্ত্রাসের আঁতুড় এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তারা আদৌ যথেষ্ট তৎপর নয়। এ নিয়ে দ্বিপাক্ষিক ভাবে চাপ দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চেও বিষয়টি তুলে ধরছে ভারত।’’ মুম্বইয়েই আর এক কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হংসরাজ আহির বলেন, ‘‘ভারতের বাহিনী যে ভাবে জঙ্গিদের নিকেশ করছে তাতে পাকিস্তান অস্বস্তিতে। হাফিজের আত্মীয় এক জঙ্গিকেও খতম করেছে ভারতীয় বাহিনী। তাই ফের সন্ত্রাসবাদী কাজকর্ম বাড়াতে হাফিজকে মুক্তি দিয়েছে পাকিস্তান।’’ মুক্তি পেয়েই হাফিজ কাশ্মীর ছিনিয়ে নিতে জেহাদ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলতে শুরু করেছে আগের মতো। এই প্রসঙ্গে হংসরাজ বলেন, ‘‘সন্ত্রাস আমাদের (শান্তিতে) বাঁচতে দিচ্ছে না। আমি স্পষ্ট করেই এটা বলতে পারি যে, পাকিস্তান কাশ্মীরের শত্রু। কাশ্মীরিরাও সেটা মানেন।’’

২০০৯ সালে হামলার মূল চক্রী হাফিজ ও জড়িত অন্য জঙ্গিদের বিচার শুরু হয়েছিল পাকিস্তানের এটিসি তথা সন্ত্রাস-বিরোধী আদালতে। আট বছর ধরে সেই বিচার ঝুলে থাকায় বিস্মিত পাক আইনজীবীরাও। তাঁদের অনেকে মনে করছেন, এটিসি-তে বিচার দ্রুত হওয়ার কথা। কিন্তু এই মামলায় এটিসি যেন দায়রা আদালতের মতো চলছে। পাক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোবিন আহমদ কাজি যেমন বলছেন, ‘‘একটা ফৌজদারি মামলার ফয়সালা করতে পাকিস্তান এত সময় নিচ্ছে দেখে অবাক হয়ে যাচ্ছি। ভারত যদি অকাট্য প্রমাণ না-ই দিতে পারে তবে দ্রুত বিচার চালিয়ে ‘বেনিফিট অব ডাউট’-এ অভিযুক্তদের বেকসুর ঘোষণা করে দিলেই হয়।’’ এরই সঙ্গে মোবিন যোগ করেন, ‘‘মনে হচ্ছে, মুম্বই হানার মামলায় অভিযুক্তদের জেলে রাখার ব্যপারে আন্তর্জাতিক চাপ রয়েছে পাকিস্তানের উপরে।’’ ভারতের বক্তব্য উল্টো। সন্ত্রাসবাদীদের মদত জোগায় বলেই তাদের বিচারে গা নেই পাকিস্তানের। চিনের মতো বন্ধু পেয়ে আমেরিকা বা আন্তর্জাতিক চাপকেও পরোয়া করছে না তারা। পাক মাটিতে হাফিজের অবাধ বিচরণ তারই প্রমাণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arun Jaitley Hafiz Saeed Pakistan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE