Advertisement
E-Paper

ইফতার দেননি মোদী, ‘অনিশ্চিত’ রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণেও

গোটা রাজধানী যখন ইফতার রাজনীতিতে মশগুল, সেই সময় প্রধানমন্ত্রী নিজে কোনও ইফতার এ বারেও দিচ্ছেন না। এমনকী, আগামিকাল রাষ্ট্রপতির ইফতারের আমন্ত্রণ থাকলেও সেখানেও তাঁর যাওয়াটা ‘অনিশ্চিত’ বলে জানাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০১৫ ১৯:৪৮

গোটা রাজধানী যখন ইফতার রাজনীতিতে মশগুল, সেই সময় প্রধানমন্ত্রী নিজে কোনও ইফতার এ বারেও দিচ্ছেন না। এমনকী, আগামিকাল রাষ্ট্রপতির ইফতারের আমন্ত্রণ থাকলেও সেখানেও তাঁর যাওয়াটা ‘অনিশ্চিত’ বলে জানাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়।

প্রায় সাড়ে তিন দশক আগে দিল্লিতে ইফতার পার্টির চল শুরু করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধী। প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় অটলবিহারী বাজপেয়ীও নিয়মিত ইফতার পার্টি দিতেন। এমনকী, হাল আমলেও শাহনওয়াজ হোসেন, নাজমা হেপতুল্লার মতো বিজেপি-র সংখ্যালঘু নেতারা দিল্লিতে ইফতার পার্টি দিয়ে আসতেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকে সেই চলও রাজধানীতে বন্ধ হয়েছে। শাহনওয়াজ এখন দিল্লি ছেড়ে পটনায় সেই পার্টি দিচ্ছেন। গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ও নরেন্দ্র মোদী কোনও ইফতার দিতেন না, কোথাও যোগদানও করতেন না। গত বছরও রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের দেওয়া ইফতার এড়িয়ে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই সময় তিনি মুম্বই ছিলেন। কিন্তু কাল তিনি পুরোদস্তুর দিল্লি থাকছেন। তবুও প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় জানাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর সেখানে যাওয়াটা এখনও ‘অনিশ্চিত’।

প্রধানমন্ত্রী সচিবলায় সূত্রের মতে, আগামিকাল সকালে নীতি আয়োগের পরিচালন পরিষদের বৈঠকে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। তারপর দুপুরে বিজ্ঞান ভবনে ‘দক্ষ ভারত’-এর অনুষ্ঠানে যাবেন। আর সন্ধে ৭টায় উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে একটি ‘বিশেষ’ বৈঠক ডেকেছেন নরেন্দ্র মোদী। আর ঠিক এই সময়টিতেই রাষ্ট্রপতি ইফতারের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন তাঁকে। রাষ্ট্রপতি ভবন সূত্রের মতে, প্রায় সাড়ে তিনশো বিশিষ্ট ব্যক্তিকে এই ইফতারে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তার মধ্যে উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, বিভিন্ন দলের নেতানেত্রী-সহ, মুসলিম দেশের রাষ্ট্রদূত, মন্ত্রিসভার সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালাম, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ, কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী, লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এইচ এল দাত্তুও আমন্ত্রিত এই ইফতার পার্টিতে।

এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী যদি এ বারেও রাষ্ট্রপতির ইফতার এড়িয়ে যান, তা হলে তা নিয়ে কটাক্ষ করতে ওত পেতে রয়েছে বিরোধীরা। ক’দিন আগে খবর প্রচার হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী ঈদের আগে কাশ্মীরে গিয়ে ইফতারে যোগ দেবেন। কিন্তু দলের জম্মু-কাশ্মীরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা রাম মাধব সে সত্যতা খণ্ডন করেছেন। কাল যদি শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির ইফতারে না যান, তা হলে বিরোধীদের হামলার আগেই জবাবের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে রাখতে শুরু করেছে বিজেপি। দলের এক নেতা বলেন, ইফতারের আয়োজন করা কারও সাংবিধানিক বা রাজনৈতিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। এটি নিতান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্র ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’। প্রধানমন্ত্রী ক’দিন আগেই ৩০ জন সংখ্যালঘুর সঙ্গে নিজের বাসভবনে বৈঠক করেন। কেন্দ্রের সংখ্যালঘু মন্ত্রকও এই সম্প্রদায়ের জন্য নিরন্তর কাজ করে চলেছে। ফলে এই নিয়ে অন্য কোনও অর্থ খোঁজা উচিত নয়। তবে দলের একাংশ চাইছে, যাবতীয় বিতর্ক এড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী এক বার ঘুরে আসতে পারেন।

বিজেপি নেতারা বলছেন, গতকাল সনিয়া গাঁধীও তো ইফতার দিয়ে বিরোধী জোটকে ঐক্যবদ্ধ করতে চেয়েছিলেন। তাতে কী লাভ হল? লালু-মুলায়ম-বামেরা কেউ গেলেন না। মমতাও নিজে আসেননি। ফলে সংখ্যালঘুদের তোষণের রাজনীতিতে সওয়ার হয়ে বিজেপি-র বিরুদ্ধে যে তাস সনিয়া খেলতে চেয়েছিলেন, সেটি তো ব্যর্থ হল। আক্ষরিক অর্থেই একটি ফ্লপ-শো হল। গত বছর যখন সনিয়া ইফতার পার্টি দিতে চেয়েছিলেন, সেই সময় কংগ্রেসের মধ্যে থেকেও বিরোধ ছিল। সেই সময় সদ্য লোকসভা নির্বাচনে হেরে এ কে অ্যান্টনি দলকে সতর্ক করেছিলেন, মানুষ কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষ নীতিকে সংখ্যালঘু তোষণ হিসেবেই দেখছে। তারপর মোদী যখন ইফতার দেওয়া বন্ধ করলেন, রাষ্ট্রপতি ভবনেও এড়িয়ে গেলেন, সেই সময় কৌশল বদলে সনিয়া ইফতার দেন। এ বারেও দিয়েছেন। এ বারে দেখার, মোদী কি তাঁর অবস্থান বদলে কাল রাষ্ট্রপতির ইফতারে যাচ্ছেন না কি নিজের পুরনো অবস্থানেই অনড় থাকছেন।

iftar narendra modi prime minister president pranab mukhopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy