Advertisement
০৫ মে ২০২৪

বিক্ষোভ এড়াতে বাড়ছে ছুটি, দাবি উপত্যকার

পুলওয়ামা কাণ্ডের পরে কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযানে মূলত জামাত-ই-ইসলামি গোষ্ঠীকে নিশানা করেছে প্রশাসন।

বিক্ষুব্ধ কাস্মীর।

বিক্ষুব্ধ কাস্মীর।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীনগর শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৯ ০৪:০৯
Share: Save:

কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদী জামাত-ই-ইসলামি গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ করেছে সরকার। কিন্তু সেই গোষ্ঠী পরিচালিত স্কুল, মসজিদ ও অনাথ আশ্রমকে নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে দু’বার বাড়ানো হয়েছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শীতের ছুটির মেয়াদ। উপত্যকার বাসিন্দাদের একাংশের মতে, জামাতের উপরে নিষেধাজ্ঞা ও সাম্প্রতিক ধরপাকড়ের ফলে ছাত্র বিক্ষোভ হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের। তাই ছুটি বাড়িয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হচ্ছে।

পুলওয়ামা কাণ্ডের পরে কাশ্মীরে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযানে মূলত জামাত-ই-ইসলামি গোষ্ঠীকে নিশানা করেছে প্রশাসন। ওই গোষ্ঠী থেকেই জঙ্গি সংগঠন হিজবুল মুজাহিদিনের জন্ম বলে দাবি প্রশাসনের। কিন্তু জামাতের উপরে নিষেধাজ্ঞার সমালোচনা করেছেন ওমর আবদুল্লা, মেহবুবা মুফতির মতো মূলস্রোতের নেতারা। তাঁদের মতে, কাশ্মীরি সমাজের সব ক্ষেত্রে জামাতের প্রভাব রয়েছে। তাই ওই সংগঠনকে নিষিদ্ধ করলে বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া হতে পারে। ওমর টুইটারে দাবি করেন, ‘‘জামাতের উপরে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলতে পারে। কিন্তু তাদের স্কুল, মসজিদের উপরে নিষেধাজ্ঞা এখনই তোলা প্রয়োজন। ওই স্কুলগুলিতে হাজার হাজার পড়ুয়া পড়াশোনা করে। অনেক শিক্ষক কাজ করেন। স্কুল বন্ধ হলে ওই তাঁদের কী হবে?’’ মেহবুবা মুফতির কথায়, ‘‘এই স্কুলগুলিতে গরিব পরিবারের অনেক পড়ুয়া রয়েছে। সরকার তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলছে।’’

আজ জম্মু-কাশ্মীর সরকারের মুখপাত্র রোহিত কনসাল জানান, জামাতের অফিস, সম্পত্তি সিল করা হচ্ছে। কিন্তু স্কুল, মসজিদ ও অনাথ আশ্রমকে নিষেধাজ্ঞার আওতার বাইরে রাখা হয়েছে।

উপত্যকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শীতের ছুটির মেয়াদ দু’বার বাড়িয়েছে প্রশাসন। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের অনেক অফিসারও ঘরোয়া আলোচনায় স্বীকার করেন, জামাতের উপরে নিষেধাজ্ঞার ফলে ছাত্র বিক্ষোভ হতে পারে। কারণ, ওই সংগঠনের নিয়ন্ত্রণে অনেকগুলি স্কুল রয়েছে। এক পুলিশ অফিসারের কথায়, ‘‘আমাদের অনেক অফিসারই জামাত পরিচালিত স্কুলের প্রাক্তনী।’’ উপত্যকার বাসিন্দাদের একাংশের মতে, সেই বিক্ষোভ এড়াতেই ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে। শ্রীনগরের বাসিন্দা ইহতিয়াক একটি কলেজের শিক্ষক। রাজধানীর স্কুলে পড়ে সন্তান। তাঁর বক্তব্য, ‘‘শিক্ষার বদলে এখন প্রশাসন অন্য বিষয়কে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। অন্য রাজ্যে কাশ্মীরি পড়ুয়াদের হেনস্থা আর জামাতের উপরে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামতে পারে ছাত্রেরা। সে জন্যই প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pulwama terror attack Kashmir
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE