পুলওয়ামার আত্মঘাতী বোমা আদিল আহমেদ দার। -ফাইল ছবি।
স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে এক দিন তাকে ঘিরে ধরে পুলিশ। প্রচণ্ড মারধর করে। তার পর নাকখত দেওয়ায়। নাকখত দিতে দিতেই তাকে ঘোরানো হয় পুলিশের জিপের চার পাশে। বছর তিনেক আগের ওই ঘটনাই ক্ষেপিয়ে তুলেছিল পুলওয়ামার আত্মঘাতী জঙ্গি জইশ জঙ্গি আদিল আহমেদ দারকে। দাবি করেছেন আদিলের বাবা, মা।
তাঁদের বক্তব্য, ‘‘আদিল ছোটবেলায় এমন ছিল না। স্কুলে যেত, আসত। মোটামুটি শান্ত স্বভাবেরই ছেলে ছিল আদিল। কিন্তু ওই ঘটনাই তাকে রাগিয়ে দিয়েছিল।’’
পুলওয়ামার ঘটনাস্থল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে কাকাপোরায় আদিলের বাড়ি। তার স্কুল ছিল হাঁটা পথে বড়জোর ২ কিলোমিটার দূরে। আদিলের বাবা গুলাম হাসান দার বাড়ি বাড়ি ঘুরে ফেরি করেন হরেক রকমের জিনিস। সংবাদসংস্থা রয়টার্সকে শুক্রবার আদিলের বাবা বলেছেন, ‘‘একটা ঘটনার কথা মনে পড়ছে। ও (আদিল) স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিল। পথে পুলিশ ওকে ধরে। অনেক ক্ষণ আটকে রাখে। প্রচণ্ড মারধর করে। নাকখত দেওয়ায়। নাকখত দিতে দিতে ওকে পুলিশের জিপের চার পাশে ঘোরানো হয়। এতে ও খুব অপমান বোধ করেছিল। মাঝেমধ্যেই ওই ঘটনার কথা বলত আমাদের। পুলিশ ওর সঙ্গে কেন এমন ব্যবহার করল, তা নিয়ে বার বারই প্রশ্ন করত আমাদের।’’
গুলাম জানিয়েছেন, তিন বছর আগেকার ওই ঘটনার পর থেকেই অনেক বদলে গিয়েছিল আদিল। তার স্বভাবটাও খুব রুক্ষ হয়ে গিয়েছিল। গুলাম বলেছেন, ‘‘মনে হত, ও জঙ্গিদের দলে ভিড়ে যেতে চাইছে।’’
সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলা সম্পর্কে এগুলি জানেন?
আরও পড়ুন- স্বামীর সঙ্গে কথা বলছিলেন ফোনে, আচমকা ভেসে এল বিকট শব্দ, তার পর সব চুপ
আরও পড়ুন- পুলওয়ামায় বিস্ফোরণে দেহ ছিটকে পড়ে ৮০ মিটার দূরে! গাড়িতে আরডিএক্স ছিল ৬০ কেজি
কেন পুলিশ তাকে ধরে মারধর করেছিল? গুলাম জানিয়েছেন, স্কুলের বন্ধুদের সঙ্গে আদিল পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুড়েছিল। গুলামের কথায়, ‘‘কাজটা যে ও খুব বুঝেসুজে করেছিল, তা মনে হয় না। কিন্তু তার জন্য ওর কপালে যা জুটেছিল, তা ওকে খুব চটিয়ে দিয়েছিল। মাঝেমধ্যেই বলত, জঙ্গিদের দলে ভিড়ে যাবে।’’
আদিলের মা ফাহমিদা বলেছেন, ‘‘ওই ঘটনায় ও খুব রেগে গিয়েছিল। সব সময় চাইত বদলা নিতে। আমি সব সময় চাইতাম ও জঙ্গিদের সঙ্গ ছেড়ে বেরিয়ে আসুক। বোঝাতাম। আমি ওকে অনেক বার বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু পারিনি।’’
স্কুলছুট হয়েই আদিল নাম লিখিয়েছিল জইশ-ই-মহম্মদে। সেখানে তার আরও দু’টি নাম ছিল। ‘আদিল আহমেদ গাড়ি তাকরানেওয়ালা’ ও ‘ভাকাস কম্যান্ডো অফ গান্ডিবাগ’।
পরিবারের লোকজন ও গ্রামের পড়শিরা শুক্রবার অন্ত্যেষ্টি করেছেন আদিলের, দেহ ছাড়াই। তবে কাকাপোরার সেই গ্রামে যাতে বাইরের লোকজন যেতে না পারেন, ফের অশান্তির আবহ তৈরি না হয়, সে জন্য কাকাপোরার কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেই নিরাপত্তাব্যবস্থাকে আটোসাঁটো রাখা হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy