Advertisement
১১ মে ২০২৪

ইঞ্জিনিয়ারকে হুমকি, অভিযুক্ত পরিষদ কর্তা

পূর্ত বিভাগের মাইবাং ডিভিশনের ইঞ্জিনিয়ার ইন্দ্রজিৎ বরাকে পিস্তল দেখিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের পূর্ত বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইএম নিরঞ্জন হোজাইয়ের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হাফলং শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৬ ০১:২৯
Share: Save:

পূর্ত বিভাগের মাইবাং ডিভিশনের ইঞ্জিনিয়ার ইন্দ্রজিৎ বরাকে পিস্তল দেখিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের পূর্ত বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইএম নিরঞ্জন হোজাইয়ের বিরুদ্ধে। ইন্দ্রজিভবাবুর অভিযোগ, গত শুক্রবার সকালে ইএম নিরঞ্জন হোজাই তাঁকে নিজের বাড়িতে ডেকেছিলেন। সেখানেই ইন্দ্রজিৎবাবুকে পিস্তল দেখিয়ে হুমকি দেওয়া হয়। লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। স্নানঘরে আটকে রাখারও চেষ্টা করা হয়। গত কাল তিনি হাফলং থানায় নিরঞ্জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

গত কাল রাতেই উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের সিইএম দেবলাল গারলোসা, ইএম কুলেন্দ্র দাওলাগোপু, পূর্ত বিভাগের সুপারেন্টেনডিং ইঞ্জিনিয়ার ইমরান আলি ও অতিরিক্ত মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার এন বরার সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠক করেন নিরঞ্জনবাবু। তাঁর বিরুদ্ধে ইন্দ্রজিৎবাবুর অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন। নিরঞ্জনবাবু পাল্টা অভিযোগ তুলে জানান, দীর্ঘ দিন ধরে ইন্দ্রজিৎবাবুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির নালিশ মিলছে। পূর্ত বিভাগের বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ থেকে ৫ শতাংশ টাকা সরিয়ে রাখতেন ইন্দ্রজিৎবাবু। ঠিকাদারদের বকেয়া মেটানোর জন্যও ‘কাটমানি’ নিতেন।

নিরঞ্জনবাবুর বক্তব্য, ওই সব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি মাইবাং ডিভিশনের পূর্ত ইঞ্জিনিয়ারকে তাঁর সরকারি আবাসনে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। দুর্নীতির দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমুলক পদক্ষেপ করারও কথা বলেছিলেন। নিরঞ্জনবাবুর অভিযোগ, এর পরই ইন্দ্রজিৎবাবু তাঁর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলেছেন।

ইন্দ্রজিৎবাবুর বিরুদ্ধে সরকারি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে হাফলং থানায় মামলা রুজু করেছেন নিরঞ্জনবাবু। তাঁর অভিযোগ, স্বশাসিত পরিষদে কংগ্রেসের আমলে ২০১৩-১৪ সালে লোয়ার হাফলংয়ের কাছে ২ কিলোমিটার রাস্তা ‘পাইলট প্রোজেক্ট’ হিসেবে ধরে বিদেশি প্রযুক্তি মেনে তৈরি করা হয়। তার দায়িত্বে ছিলেন ইন্দ্রজিৎবাবু। দুর্নীতির জন্য সেই রাস্তা তৈরির কাজ এখনও শেষ হয়নি। নিরঞ্জনবাবুর দাবি, হাফলং-জাটিঙ্গা ৭ কিলোমিটার ২-লেনের রাস্তা নির্মাণের দায়িত্বেও রয়েছেন ইন্দ্রজিৎবাবু। ২৬ কোটি টাকা খরচে ওই ৭ কিলোমিটার রাস্তা
তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ার আগেই নির্মাণকারী ঠিকাদার সংস্থাকে ১৪ কোটি টাকা বিল মিটিয়ে দিয়েছেন ইন্দ্রজিৎবাবু। অভিযোগ, তার বিনিময়ে মোটা অঙ্কের টাকাও পেয়েছেন।

ওই সব অভিযোগের জেরে পূর্ত বিভাগের মাহুর ডিভিশনের ইঞ্জিনিয়ার গৌতম রায়কে মাইবং ডিভিশনের ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানান নিরঞ্জনবাবু। তিনি জানিয়েছেন, দুর্নীতির অভিযোগে ইন্দ্রজিৎবাবুর বিরুদ্ধে নগাঁও আদালতে একটি মামলা এখনও বিচারাধীন। নিরঞ্জনবাবু দাবি করেছেন, ডিমা হাসাও জেলায় সরকারি টাকা লোপাট করে ইন্দ্রজিৎবাবু যে সব সম্পত্তির মালিক হয়েছেন তা তদন্ত করে বের করা হবে। তারপর আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করবে স্বশাসিত পরিষদ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

PWD EM Threat engineer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE