চব্বিশ ঘণ্টা আগে সংসদে দলিত-বিতর্কের সময়ে ঘুমোনোর অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সেই বিতর্ক ঝেড়ে ফেলতেই যেন নরেন্দ্র মোদীর রাজ্যে গিয়ে সপাটে ব্যাট চালালেন রাহুল গাঁধী! উনায় নির্যাতিত দলিত যুবকদের বাড়ি গিয়ে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস তো দিলেনই, সেই সঙ্গে দিয়ে এলেন নিজের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরটাও। বললেন, সভ্য সমাজে এমন সব ঘটনা ঘটছে দেখে লজ্জা করছে। হায়দরাবাদ কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দলিত গবেষক রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যার স্মৃতিও উস্কে দিলেন। এক কথায় কংগ্রেস সহ-সভাপতি বুঝিয়ে দিলেন, দলিত-নির্যাতনের প্রশ্নে বিজেপিকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়ছেন না তিনি।
শুধু উনা-কাণ্ডে নির্যাতিতদের পাশেই নয়, প্রতিবাদে আত্মহত্যার চেষ্টা করা যুবকদের সঙ্গেও রাজকোটের হাসপাতালে গিয়ে দেখা করেছেন রাহুল। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে বলেছেন, ‘‘গোটা রাজ্যের এগারো জন যুবক আত্মহত্যার চেষ্টা করে এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মানে একটাই— সারা গুজরাতেই দুর্বল মানুষ নির্যাতিত হচ্ছেন। তাঁদের যে জাতই হোক, যাঁদের টাকা নেই, তাঁরাই অত্যাচারিত হচ্ছেন!’’
উনায় নির্যাতিতদের এক আত্মীয় জানিয়েছেন, আজ সকালে প্রায় ৪০ মিনিট তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন রাহুল। সঙ্গে ছিলেন দলীয় নেত্রী কুমারী শৈলজা এবং গুরুদাস কামাত। জিতু সার্বইয়া নামে ওই পরিবারের এক সদস্যের কথায়, ‘‘রাহুল আমাদের বাড়িতে বসে চা খেয়েছেন। গ্রামে আমাদের কী রকম অসাম্যের শিকার হতে হয়, সব শুনেছেন মন দিয়ে। উনি বলেছেন, সব রকম সাহায্য করবেন যাতে আমরা বিচার পাই।’’ আর সাংবাদিকদের রাহুল বলেছেন, ‘‘ওঁদের (নির্যাতিতদের) বাবা-মায়েরা বলেছেন, তাঁরা কোনও উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না। প্রতিদিন মারধর করা হচ্ছে, সন্ত্রস্ত করে রাখা হচ্ছে!’’
উনায় নির্যাতিতদের পাশাপাশি ট্যানারিতে কাজ করার ‘দায়ে’ আক্রান্ত কয়েকটি পরিবারের সঙ্গেও কথা বলেন রাহুল। মোদীর পাশাপাশি তিনি একহাত নেন সঙ্ঘকেও। রাহুল বলেন, ‘‘মোদীজি গুজরাত মডেলের কথা বলছেন। আর সেই গুজরাতে যে ওঁদের মতাদর্শের বিরুদ্ধে কথা বলছে, তাকেই অত্যাচারিত হতে হচ্ছে! এক দিকে গাঁধীজি, সর্দার পটেল, নেহরুজি, বাবাসাহেব অম্বেডকর। অন্য দিকে আরএসএস এবং নরেন্দ্র মোদীজি! শুধু গুজরাতে নয়, এই মতাদর্শকে আমরা সারা দেশেই হারিয়ে দেব।’’
শাসক ও প্রধান বিরোধী দলের আশ্বাস সত্ত্বেও যদিও আজ
বিক্ষিপ্ত গণ্ডগোল হয়েছে গুজরাতের বিভিন্ন এলাকায়। গতকাল গভীর রাতেই অশান্তির খবর এসেছিল রাজকোট ও মেহসানা থেকে। আজ সকালে মিছিল বেরোয় লিম্বডি ও সুরাতে। রাজকোটের একটি
সরকারি বাসস্ট্যান্ডে বিক্ষোভকারীরা ভাঙচুর চালায়। সুরাত ও
আমদাবাদে বেশ কিছুক্ষণ রেল অবরোধও চলেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy