রাহুল গাঁধী
দীর্ঘদিনের রেষারেষিতে রাশ টানছেন রাজ্য নেতারা। রাজ্যের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে জনসংযোগ যাত্রার প্রস্তুতি শুরু হচ্ছে। একেক রাজ্যে একেক নাম। আসল লক্ষ্য, কংগ্রেসের সঙ্গে মানুষের দূরত্ব কমানো। নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে প্রচারের অস্ত্রে শাণ দেওয়া হচ্ছে।
রবিবার সকালে রেডিয়োয় মোদীর ‘মন কি বাত’। দুপুরেই রাজধানীর রামলীলা ময়দানে মোদীকে নিশানা করে রাহুলের ‘জন আক্রোশ র্যালি’। আর সেই সভা থেকেই ২০১৯-এর লোকসভা ভোটযুদ্ধে নেমে পড়বে কংগ্রেস। রাহুলের সঙ্গেই বক্তা হিসেবে থাকছেন সনিয়া গাঁধী। মোদী যাঁকে ‘মৌন’ বলে কটাক্ষ করতেন, সেই মনমোহন সিংহ এখন রাহুলের বড় অস্ত্র। থাকছেন লোকসভা ও রাজ্যসভার কংগ্রেসের দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গে ও গুলাম নবি আজাদ। সূত্রের খবর, সভা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও।
রাহুলের অঙ্ক স্পষ্ট। গত চার বছরে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভকে হাতিয়ার করে এখন থেকেই মাঠে নামা। তাই জনসভার জন্য ডাক দিয়ে বলেছেন, ‘মোদী সরকারের চার বছরে যুবকদের রোজগার হয়নি। মহিলারা নিরাপত্তা পাননি। কৃষক পায়নি ফসলের সঠিক দাম। দলিত-সংখ্যালঘু তার অধিকার হারিয়েছে। এই নৈরাশ্য থেকে তৈরি ভয়াবহ, প্রচণ্ড আক্রোশকে প্রকাশ করতে সবাই ‘জন আক্রোশ র্যালি’তে আসুন।’
এআইসিসি-তে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত অশোক গহলৌত বলেন, ‘‘মনে করিয়ে দেওয়া দরকার, এটা প্রতিহিংসার আক্রোশ নয়। বরং হতাশা থেকে তৈরি হওয়া ক্ষোভ এবং তার প্রতিবাদ।’’ এর আগে কংগ্রেস কোথাও ‘যুব আক্রোশ র্যালি’, কোথাও ‘কিষাণ আক্রোশ র্যালি’-র ডাক দিয়েছে। নোট বাতিলের প্রতিবাদেও ‘আক্রোশ দিবস’ পালন করেছিল কংগ্রেস। গহলৌতের যুক্তি, ‘‘এখন আক্রোশটা সর্বস্তরে, গোটা জনসমাজে ছড়িয়ে গিয়েছে।
তাই রাহুল জন আক্রোশ র্যালির ডাক দিয়েছেন।’’
রাহুল যেমন এই জনসভাকে সামনে রেখে প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের চাঙ্গা করে মাঠে নামাতে চান, তেমনই এই সুযোগে প্রদেশ নেতারাও সংগঠন চাঙ্গা করতে চাইছেন। মেটানো হচ্ছে পুরনো গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশের নেতাদের মধ্যে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে, কে, কত লোক জড়ো করতে পারেন।
দিল্লির প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অজয় মাকেন যেমন ৪০ হাজারের বেশি বারকোড-যুক্ত পরিচয়পত্র বিলি করেছেন। রামলীলাতেই হিসেব হবে, দিল্লির কোন নেতা কত কর্মী এনেছেন। হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিংহ হুডা দু’দিন আগে হরিয়ানার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পুরনো বিবাদ ভুলে সেখানে ছিলেন আরেক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভজন লালের ছেলে কুলদীপ বিষ্ণোই। রাজস্থানে এ বছরই ভোট। রাজস্থানের সভাপতি সচিন পায়লটের চ্যালেঞ্জ, সবথেকে বেশি লোক যাবে তাঁর রাজ্য থেকেই। উত্তরপ্রদেশের প্রদেশ সভাপতি রাজ বব্বরও তৈরি।
মুম্বইয়ের সঞ্জয় নিরুপম আবার ১৮ কামরার ট্রেন বুক করে দিল্লি পৌঁছেছেন। ট্রেনের নাম দিয়েছেন ‘রাহুল গাঁধী সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেস’।
রাহুল ভোটের দামামা বাজানোর পরেই প্রদেশ নেতারা নিজের রাজ্যে ‘যাত্রা’ শুরু করবেন। গুজরাত, কর্নাটকে এই ‘যাত্রা’-র সাফল্য মিলছে। তাই হরিয়ানার হুডা শুরু করছেন ‘জন ক্রান্তি যাত্রা’। মধ্যপ্রদেশে শুরু হয়েছে ‘ন্যায় যাত্রা’। তেলঙ্গানার মতো রাজ্যেও একই রকম যাত্রায় নামছেন নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy