Advertisement
১০ মে ২০২৪

কেন্দ্রের চাপে ইস্তফা দিতে নারাজ রাজখোয়া

Arunachal governor Rajkhowa reportedly asked to step downকেন্দ্র থেকে চাপ এলেও ইস্তফা দেবেন না বলে জানালেন অরুণাচলপ্রদেশের রাজ্যপাল জ্যোতিপ্রসাদ রাজখোয়া। গত বছর ডিসেম্বরে তিনি স্পিকার বা রাজ্য সরকারের কথা না শুনে বিধানসভা অধিবেশন এগিয়ে আনেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:২৯
Share: Save:

কেন্দ্র থেকে চাপ এলেও ইস্তফা দেবেন না বলে জানালেন অরুণাচলপ্রদেশের রাজ্যপাল জ্যোতিপ্রসাদ রাজখোয়া।

গত বছর ডিসেম্বরে তিনি স্পিকার বা রাজ্য সরকারের কথা না শুনে বিধানসভা অধিবেশন এগিয়ে আনেন। সেখানে কংগ্রেসের ২১ জন বিদ্রোহী বিধায়ক, বিজেপির ১১ জন বিধায়ক ও দুই নির্দল বিধায়ক মিলে স্পিকার নাবাম রিবিয়াকে অপসারণ করেন এবং কংগ্রেসের নেতৃত্ব থেকে তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী নাবাম টুকিকে সরিয়ে কালিখো পুলকে নতুন নেতা নির্বাচিত করা হয়। পরে রাষ্ট্রপতি শাসনের পর্ব পার করে পুল মুখ্যমন্ত্রী হন। কিন্তু গত মাসে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যপালের নির্দেশে ডাকা বিধানসভা অধিবেশন বেআইনি বলে ঘোষণা করে আগের অবস্থা ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেয়। রাজ্যে কংগ্রেস ফের ক্ষমতায় ফেরে। সেই সময় অসুস্থতার জন্য লম্বা ছুটিতে ছিলেন রাজখোয়া। সম্প্রতি তিনি ফিরেছেন।

রাজভবন সূত্রে খবর, কেন্দ্রের তরফে এক প্রতিমন্ত্রী ও রাজ্যের এক মন্ত্রী রাজখোয়াকে ইস্তফা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। কিন্তু রাজখোয়া জানিয়েছেন ইচ্ছা হলে রাষ্ট্রপতি তাঁকে সরাতে পারেন। কিন্তু তিনি কোনও ভুল করেননি, ইস্তফাও দেবেন না।

রাজখোয়া সাংবাদিকদের বলেন, “যদি কেন্দ্র কোনও কারণে না চায় আমি রাজ্যপাল থাকি, তবে তারা সেই কারণ দেখাক। কিন্তু কোনও কারণ ছাড়া এ ভাবে আমায় ইস্তফার জন্য চাপ দেওয়া অন্যায়। রাষ্ট্রপতি চাইলে আমি সরে যেতে বাধ্য। সেই পথে নির্দেশ আসলে নিশ্চয় মানতাম। কিন্তু এ ভাবে বেসরকারি ব্যক্তি বা রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে ইস্তফার জন্য চাপ দেওয়া অন্যায়।”

রাজখোয়া জানান, প্রথমে গুয়াহাটি থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি ফোনে তাঁকে ইস্তফা দিতে বলে। পরে এক প্রতিমন্ত্রী ও রাজ্যের মন্ত্রী পরামর্শ দেন, স্বাস্থ্যজনিত কারণে তাঁর ইস্তফা দেওয়া উচিত। রাজখোয়ার ক্ষোভ, “স্বাস্থ্যের কারণে রাজ্যপালের ৬ মাস ছুটি নেওয়ারও নজির আছে। আমি চিকিৎসার পরে সুস্থ। রাজ্যের মানুষও আমাকে ও আমার কাজ পছন্দ করেন।” চাপ আসার পরে রাজখোয়া সোজা রাজনাথ সিংহের কাছে গিয়ে জানতে চেয়েছিলেন, কেন্দ্র তাঁকে ইস্তফা দিতে নির্দেশ দিয়েছে কি না। রাজখোয়ার কথায়, “রাজনাথজি জানান তেমন কোনও কথা হয়নি। পরে আমি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজিজুর কাছেও এ নিয়ে জানতে চাই। প্রথমে তিনি বলেন তেমন কিছু তাঁর জানা নেই। পরে ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় রিজিজু ঘটনার সত্যতা মেনে নিয়ে আমাকে ইস্তফা দিতে বলেন। জানান, আমার জন্য কোনও একটি উচ্চ পদ তৈরি করা হবে। কিন্তু তাঁকেও জানিয়েছি যে আমি পদত্যাগ করব না।”

কংগ্রেস বরাবরই রাজখোয়াকে অপছন্দ করে। এ বার বিজেপিও কেন্দ্র থেকে তাঁকে সরাতে চাপ দিচ্ছে। কিন্তু রাজখোয়া সাফ জানান, “আমাকে যত বড়ই পদ দেওয়া হোক, অপরাধ না জেনে আমি পদত্যাগ করব না।”

পরিস্থিতি যে দিকে যাচ্ছে, অসমের প্রাক্তন আইএএস, ৭১ বছর বয়সী রাজখোয়াকে সরানোর জন্য রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে আর্জি জানাতে পারে কেন্দ্র। গত বছর মে মাসে রাজ্যপালের দায়িত্ব নেওয়া রাজখোয়ার নিয়মমতো ২০২০ সাল পর্যন্ত অরুণাচলের রাজ্যপাল থাকতে পারেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Governor Arunachal Pradesh Resignation Rajkhowa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE