জানাই ছিল, ঘুরেফিরে নির্দিষ্ট একটি দিকেই ঘুরে যাবে প্রসঙ্গ। তবু জম্মু-কাশ্মীরের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কী কী করছে, সে সব কথা জানাতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন তাঁরা। সবিস্তার তা জানানোর পরে প্রশ্নোত্তর পর্বে দেখা গেল জম্মু-কাশ্মীর নয়, সাংবাদিকরা সকলেই আগ্রহী ললিত মোদী ও সুষমা স্বরাজকে ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্কে কেন্দ্রের অবস্থান জানতে। কারণ, এই প্রসঙ্গ শোরগোল ফেলে দেওয়ার পরে আজই প্রথম সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন কেন্দ্রের দুই শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। সুষমা প্রসঙ্গ এড়িয়ে না গিয়ে জেটলি বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিলেন ওই সাংবাদিক বৈঠকেই।
এতেই কি উদ্বেগ বাড়ল পাশে বসা রাজনাথ সিংহের! সাংবাদিক বৈঠকের মূল উদ্দেশ্যটাই না মাঠে মারা যায়, বুঝি-বা এই চিন্তাতেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলে ফেললেন, ‘‘দেখবেন সুষমা-ললিত করতে গিয়ে জম্মু-কাশ্মীরের কথা ভুলে যাবেন না।’’
জম্মু-কাশ্মীরের মুফতি মহম্মদ সইদ সরকার বিচ্ছিন্নতাকামীদের প্রতি নরম— বারবারই এই অভিযোগ উঠছে বিজেপি-পিডিপির বিরুদ্ধে। এই সমালোচনার মুখেই রাজনাথ আজ দাবি করেন, ‘‘জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদী কাজকর্ম ২৫% কমেছে। প্রভূত উন্নতি হয়েছে রাজ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতির।’’ এ-হেন ‘সাফল্যের কথা’ পাছে ললিত-সুষমা বিতর্কে চাপা পড়ে যায়, সাদা চোখে দেখলে সে কারণেই সাংবাদিকদের উদ্দেশে রাজনাথের ওই সহাস্য পরামর্শ। তবে দলের ঘরোয়া আলোচনায় এর একটি অন্য ব্যাখ্যাও উঠে আসছে। কাশ্মীরের কথা না ভোলার পরামর্শ দিয়ে রাজনাথ হয়তো কৌশলে এটাই মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন, ওই প্রসঙ্গটি গৌন, আসল খবর সুষমা-ললিতই।
শুধু নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সাফল্য নয়, নরেন্দ্র মোদীর সরকার যে বন্যাবিধ্বস্ত এই রাজ্যের পুনর্গঠনে দায়বদ্ধ, সাংবাদিক বৈঠকে তা-ও তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী জেটলি। জম্মু-কাশ্মীরকে বাড়তি ২,৪৩৭ কোটি টাকা অতিরিক্ত অর্থ সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি। রাজনাথ বলেন ‘‘জম্মু-কাশ্মীরে বিদ্যুৎ, সড়ক, শিক্ষা, পর্যটন, স্বাস্থ্য— সামগ্রিক উন্নয়নে পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।’’ ওই পরিকল্পনা তৈরির জন্য নীতি আয়োগের সিইও সিন্ধুশ্রী খুল্লার ও কেন্দ্রীয় ব্যয়সচিব রতন ওয়াটাল খুব শীঘ্রই সে রাজ্যে যাবেন বলেও জানান রাজনাথ। যদিও সব শেষে রাজনাথই কৌশলে মনে করিয়ে দিলেন, দিনের খবর কোনটা!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy