Advertisement
০৭ মে ২০২৪

দূষণ রুখতে রাজপথই খেলার মাঠ রাঁচিতে

রবিবার সকাল হলেই ঝাড়খণ্ডের রাজধানীর ব্যস্ততম রাজপথ বদলে যাচ্ছে খেলার ময়দানে!

সড়কই এখনও ভলিবল কোর্ট। রাঁচির ‘রাহাগিরি’তে। —নিজস্ব চিত্র

সড়কই এখনও ভলিবল কোর্ট। রাঁচির ‘রাহাগিরি’তে। —নিজস্ব চিত্র

আর্যভট্ট খান
রাঁচি শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৬ ০৩:১৭
Share: Save:

রবিবার সকাল হলেই ঝাড়খণ্ডের রাজধানীর ব্যস্ততম রাজপথ বদলে যাচ্ছে খেলার ময়দানে!

দূষণ রুখতে ছুটির দিন সকালে ওই রাস্তায় সাইকেল ছাড়া অন্য যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল প্রশাসন। রাস্তা ফাঁকা পেয়ে সেখানেই খেলায় মাতলেন শহরবাসীর একাংশ! ক্রিকেট, ভলিবল, যোগব্যয়াম, সাইকেল চালানো, রোলার স্টেটিংয়ের মতো হরেক কিসিমের খেলা চলছে।

মাসখানেক ধরে রবিবার সকালে রাঁচি মেন রোডের ছবিটা এমনই। রাঁচি পুরসভার দূষণ-বিরোধী এই উদ্যোগের নাম ‘রাহাগিরি’। পরে তাতে সামিল হয় কয়েকটি অন্য সংস্থাও। নগর কমিশনার প্রশান্ত কুমার বলেন, “দেশের কয়েকটি শহরেও রাহাগিরি করা হয়। রাঁচিতে এক মাসের মধ্যে এই উদ্যোগ খুব জনপ্রিয় হয়েছে। শহরের সব থেকে ঘিঞ্জি ও দূষিত রাস্তায় দূষণের প্রভাব এতে কমবে বলে মনে হয়।”

রবিবার ভোরে রাঁচির প্রাণকেন্দ্র আলবার্ট এক্কা চকের সামনে ব্যয়ামের ক্লাস বসে। বছর পঞ্চাশের ভারতী পাণ্ডে বলেন, “এক মাস ধরে রাহাগিরিতে আসছি। নাতি, নাতনিদের বয়সী ছেলেমেয়েদের সঙ্গে ব্যয়াম শিখছি। হাঁটুর ব্যথাটাও অনেক কমেছে।” কিছু দূরেই ক্রিকেটে খেলতে ব্যস্ত মাধুরী তিওয়ারি। তাঁর স্বামী মুকেশ কুমার পাশেই ভলিবল খেলছেন। মুকেশ বললেন, “মাধুরী ক্রিকেট-ভক্ত জানতাম। কিন্তু ব্যাট হাতে রাস্তায় নেমে পড়বে ভাবিনি।”

রাস্তার পাশেই সাইকেল ও রোলার স্কেটিং ক্লাব। পরিচয়পত্র জমা রেখে এক ঘন্টার জন্য বিনামূল্যে সাইকেল নিয়ে যাচ্ছেন অনেকেই। ক্লাবের সদস্য সৌরভ কুমার বলেন, “যত দিন যাচ্ছে ততই সাইকেল চালকের সংখ্যা বাড়ছে। সাইকেল কুলিয়ে উঠতে পারছি না।”

লরেটো কনভেন্টের ছাত্রী অনুপমা আচার্য বলে, “এক মাসে রাহাগিরিতে স্কেটিং শিখেছি। এটা এখন নেশা হয়ে গিয়েছে।” কাছেই রাস্তার ডিভাইডারকে নেট করে ভলিবল খেলছিলেন এক দল তরুণ। যানবাহন সামলানোর ঝক্কি না থাকায় এক মনে খেলা দেখেছিলেল ট্রাফিক পুলিশকর্মীরা। পিচঢালা রাস্তায় আলপনা দিতেও দেখা যায় কয়েক জনকে।

রাঁচির ট্রাফিক এসপি মনোজ রতন চৌথে জানান, শহরের প্রধান রাস্তা রবিবার ভোরে বন্ধ রাখার জেরে কারও কোনও অসুবিধা য়াতে না হয় সে দিকেও পুলিশের নজর রয়েছে। তিনি বলেন, “বিকল্প রাস্তা দিয়ে কী ভাবে যাতায়াত করতে হবে তা শহরবাসীকে জানানো হয়েছে। মেন রোড লাগোয়া বাসিন্দাদের জরুরি প্রয়োজন ছাড়া গাড়ি বের না করতে অনুরোধ করা হয়েছে। তাঁদের তরফে সাড়াও মিলেছে।”

বছর চল্লিশের কয়েক জন ‘যুবক’কে পিট্টু খেলতে দেখা গেল। এক জন বললেন, ‘‘ছোটবেলার পিট্টু খেলা এখানে ফিরে পেয়েছি। আজকের প্রজন্ম পিট্টু খেলার কথা জানে না। তাদেরও শেখাচ্ছি। অনেক পুরনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হচ্ছে। তার মজাই আলাদা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ranchi Highway Games Sports
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE