একদা কলকাতার বাসিন্দা ও রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা কেশব বলিরাম হেডগেওয়ারের কথা ধরেই মহাত্মা গাঁধীর সার্ধশতবর্ষে শ্রদ্ধার্ঘ্য জানালেন সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ‘‘আমাদের সকলের মহাত্মা গাঁধীর জীবনদৃষ্টি অনুসরণ করা উচিত।’’ অতঃপর ইতিহাসের স্মৃতি টেনে দাবি করেছেন, সঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা হেডগেওয়ার গাঁধীকে ‘পুণ্যপুরুষ’ আখ্যা দিয়েছিলেন।
নাগপুরের দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারের ছেলে হেডগেওয়ার ছিলেন কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন ছাত্র, অনুশীলন সমিতির প্রতি আকৃষ্ট। ১৯২০ সালে কলকাতায় কংগ্রেসের অধিবেশনেরও সদস্য তিনি। ইতিহাসবিদ দীপেশ চক্রবর্তী বললেন, ‘‘জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে তখন অনুশীলন সমিতি, কংগ্রেস, সমাজবাদী প্রতিটি সুতোই বাকিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখত। হিন্দু মহাসভার অধিবেশনে লালা লাজপত রায়, মতিলাল নেহরু, মদনমোহন মালব্যের মতো কংগ্রেস নেতারা উপস্থিত থাকতেন। হেডগেওয়ারের কথায় তাই অবাক হওয়ার কিছু নেই।’’
অর্থাৎ বলতে চাইছেন যে, ‘কংগ্রেস এবং অন্য কেউ কিছু করেনি, আমার দলের মহামানব এসেই দেশকে বাঁচালেন’ গোছের রাজনৈতিক বয়ানের চল তখন ছিল না? শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ হেসে বললেন, ‘‘হেডগেওয়ার ১৯৩৪ সালেই বলে দিয়েছিলেন, রাজনীতি বিষয়ে সঙ্ঘ উদাসীন। অন্য দলের সঙ্গে তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা নেই, সে খাদির সমর্থক এবং অস্পৃশ্যতা বর্জনের বিরোধী নয়। তখনকার কংগ্রেস আর সনিয়া-রাহুলের কংগ্রেস যেমন এক নয়, হেডগেওয়ারের সঙ্ঘ আর আজকের সঙ্ঘও এক নয়।’’