Advertisement
E-Paper

উত্তেজনা কমাতে কথা হয়েছে দু’পক্ষের, দাবি করলেন আজিজ

সীমান্তে গোলাগুলির মাঝে ও-পার থেকে হঠাৎই সমঝোতার সুর! উরি হামলা ও তার পরে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতের প্রত্যাঘাত— দু’সপ্তাহ ধরে কার্যত চরমসীমায় পৌঁছে গিয়েছিল ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। যার জেরে দু’দেশের সীমান্তে বাড়ছিল সেনা সমাবেশ। উঁকি দিয়েছিল যুদ্ধের আশঙ্কা। কাশ্মীরের পুঞ্চ সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখায় আজও দু’পক্ষের গুলির লড়াই চলেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৬ ০৪:১২

সীমান্তে গোলাগুলির মাঝে ও-পার থেকে হঠাৎই সমঝোতার সুর!

উরি হামলা ও তার পরে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতের প্রত্যাঘাত— দু’সপ্তাহ ধরে কার্যত চরমসীমায় পৌঁছে গিয়েছিল ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক। যার জেরে দু’দেশের সীমান্তে বাড়ছিল সেনা সমাবেশ। উঁকি দিয়েছিল যুদ্ধের আশঙ্কা। কাশ্মীরের পুঞ্চ সেক্টরে নিয়ন্ত্রণরেখায় আজও দু’পক্ষের গুলির লড়াই চলেছে।

এই উত্তেজনার মধ্যে হঠাৎ শান্তির বার্তা। পাক প্রধানমন্ত্রীর বিদেশনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা সরতাজ আজিজ দাবি করেছেন, ‘‘পরিস্থিতির অবনতি রুখতে দু’দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল ও নাসির জনজুয়া টেলিফোনে কথা বলেছেন। উরির ঘটনার পর এই প্রথম দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা হল। উভয় পক্ষই সীমান্তে উত্তেজনা কমাতে রাজি হয়েছে।’’ তবে ওই কথা কবে হয়েছে বা এ জন্য কে প্রথম উদ্যোগী হয়েছেন, সে বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি তিনি।

পাক কূটনীতিকের দাবি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি নয়াদিল্লিও। যদিও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গতকাল শান্তির বার্তা দেওয়ার পরে আজ সরতাজের ওই বয়ান যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে কূটনীতিকরা। তাঁদের মতে, যুদ্ধ যে সমস্যার সমাধান নয়, দু’পক্ষই জানে সে কথা। তাই চোখরাঙানির পরে এ বার স্থিতাবস্থায় ফিরতে চাইছে দু’দেশ। সেই কারণে ‘‘ভারত অন্যের ভূখণ্ডের জন্য লালায়িত নয়। আমরা কখনও কোনও দেশকে আক্রমণ করিনি।’’— মোদী এ কথা বলার পরে আজ মুখ খুললেন পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ-ঘনিষ্ঠ সরতাজ আজিজ।

অবশ্য ভারতকে খোঁচা দিতেও ছাড়েননি সরতাজ। তিনি বলেন, ‘‘পাকিস্তান নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা কমাতে চায়। কেননা আমরা শুধু কাশ্মীর নিয়ে আগ্রহী। ভারতই সীমান্তে উত্তেজনা বাড়িয়ে কাশ্মীর সমস্যাকে এড়িয়ে যেতে চাইছে।’’ শান্তির বার্তা দিলেও সে দেশের মোল্লাতন্ত্র, সেনা ও আইএসআই-কে তুষ্ট রাখতে সরতাজ এই মন্তব্য করেছেন বলে মনে করছেন দিল্লির কূটনীতিকরা। তাঁদের কথায়, কাশ্মীর নিয়ে এটুকু সরতাজ আজিজকে বলতেই হবে। ঠিক যে ভাবে সঙ্ঘ পরিবারকে তুষ্ট রাখতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে প্রচারে নামতে হয়েছে বিজেপি-কে।

সরকারি ভাবে আজিজের মন্তব্যের কোনও প্রতিক্রিয়াই জানায়নি দিল্লি। উল্টে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে বলা হয়েছে, বারামুলার মতো হামলা কী ভাবে রোখা যায়, তা নিয়েই আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন ডোভাল। পাকিস্তানের প্রত্যাঘাতের সম্ভাবনা মাথায় রেখে সেনার তিন প্রধানের সঙ্গে আলোচনা করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরও।

তবে সরতাজের দাবি যদি সত্যি হয়, তা হলে সেই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন কূটনীতিকরা। তাঁদের মতে, দুই পরমাণু শক্তিধর দেশই জানে যুদ্ধ কোনও বিকল্প নয়। তা ছাড়া ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে চাপ বাড়াচ্ছে আমেরিকা। সরব রাষ্ট্রপুঞ্জও। রাশিয়া, চিন, বাংলাদেশ বা মলদ্বীপের মতো দেশগুলিও আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার জন্য মুখ খুলতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষই বুঝতে পারছে যুদ্ধ লাগলে উন্নয়ন, অর্থনীতি ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা মুখ থুবড়ে পড়বে। আর্থিক নৈরাজ্য সৃষ্টি হবে। যার দায় নিতে হবে সংশ্লিষ্ট সরকারকে। কূটনীতিকরা তাই বলছেন, আস্তিন গোটানোর পালা সাঙ্গ করে এ বার হাত ধরা শুরু করুক দুই দেশ। তাতে উভয়েরই লাভ।

Sartaj Aziz pakistan india
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy