মোদী জমানায় শেষ বার মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন সরকারের জমি নীতির বিরুদ্ধে। আজ ফের পথে নামলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী। এ বারের প্রতিবাদ, দেশে অসহিষ্ণুতার পরিবেশ তৈরি করার পিছনে নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর সহযোগীদের ভূমিকা নিয়ে। জমি অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে অভিযানের সময় যেমনটি দেখা গিয়েছিল, ঠিক তেমনই শরীরী ভাষা। তেমনই ক্ষিপ্র গতি!
এ বারে বাড়তি যেটা, তা হল সনিয়ার আত্মবিশ্বাস। যার অনেকটাই তৈরি হয়েছে জমি প্রশ্নে নরেন্দ্র মোদীকে পিছু হটতে বাধ্য করতে পেরে। বাড়তি আত্মবিশ্বাসের আরও একটি বড় কারণ, প্রতিবাদের জমিটা প্রায় তৈরিই হয়ে রয়েছে। সনিয়া বুঝতে পারছেন, দেশ জুড়ে অসহিষ্ণু পরিবেশ নিয়ে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে শিক্ষিত ও বিশিষ্ট জন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে। কবি-সাহিত্যিক থেকে ঐতিহাসিক, শিল্পী থেকে শিল্প-কর্তারাও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন, সতর্ক করছেন। মুখ খুলেছেন খোদ রাষ্ট্রপতিও। পরিস্থিতি না সামলালে বিনিয়োগ ও উন্নয়ন ধাক্কা খাবে বলে অশনিসঙ্কেত দিচ্ছে আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থাগুলিও। আর তাতেই ভরপুর অক্সিজেন পেয়ে সনিয়া অসন্তোষের আঁচটাকে আজ রাজনৈতিক প্রতিবাদের চেহারা দিলেন। সদলবল রাইসিনার চুড়োয় গিয়ে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করলেন। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ আনলেন মোদী সরকারের বিরুদ্ধে। তার পর রাইসিনায় দাঁড়িয়েই অসহিষ্ণু পরিবেশের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আরএসএসকে কাঠগড়ায় তুলে তীব্র আক্রমণ করলেন সনিয়া- রাহুল। কংগ্রেসের পাশে আনতে চাইলেন দেশের তাবৎ ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ ও দলের নেতা-সাংসদদের নিয়ে আজ বিকেলে সংসদ চত্বর থেকে রাষ্ট্রপতি ভবনের উদ্দেশে হাঁটা লাগান সনিয়া-রাহুল। রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপি পেশ করে বেরিয়ে সনিয়া বলেন, ‘‘গোটা দেশে ভয়, হুমকি ও অসহিষ্ণুতার পরিবেশ কায়েম হয়েছে। এটা আদৌ কোনও বিক্ষিপ্ত ঘটনা নয়। এর নেপথ্যে রয়েছেন সরকার ও তাদের মতাদর্শের সঙ্গে যুক্ত কিছু লোক। যাঁরা দেশের বর্ণময় সংস্কৃতিকে নষ্ট করতে চাইছেন। ভেবেচিন্তে ছক কষেই এ সব করা হচ্ছে। এবং তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যে রকম নীরব, তাতেই পরিষ্কার যে এ ব্যাপারে তাঁর সম্মতি রয়েছে।’’