Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

চলন্ত ট্রেনে এ বার বাইরের খাবারও

রেলের পরিষেবা নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। এর মধ্যে সব থেকে বেশি নালিশ খাবারের মান নিয়ে। পরিস্থিতি চরমে ওঠে শীতের সময়ে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

অনমিত্র সেনগুপ্ত
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:১৪
Share: Save:

যাত্রাপথে খাবার নিয়ে হাজার নালিশ দূর করতে এ বার নড়েচড়ে বসল রেল মন্ত্রক। আইআরসিটিসি ছাড়াও একাধিক নামী সংস্থা যাতে দূরপাল্লার ট্রেনে খাবার পরিবেশন করতে পারে, সে জন্য আসন্ন বাজেটে স্পষ্ট নীতি ঘোষণার কথা ভাবছে মন্ত্রক। সূত্রের খবর, রেলের নিজের খাবার পরিবেশনের সঙ্গে বেসরকারি ব্যবস্থার সমন্বয় রেখে কী ভাবে এগোনো যায়, সে কথাই থাকবে এই নীতিতে।

রেলের পরিষেবা নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। এর মধ্যে সব থেকে বেশি নালিশ খাবারের মান নিয়ে। পরিস্থিতি চরমে ওঠে শীতের সময়ে। উত্তর ও পূর্ব ভারতগামী ট্রেনগুলি কুয়াশার কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দেরিতে চলায় কার্যত না-খেয়ে থাকতে হয় যাত্রীদের। রাজধানী বা দুরন্ত-র মতো ট্রেনে খাবার দেওয়া বাধ্যতামূলক থাকায় বহু ক্ষেত্রেই স্রেফ চাল-ডাল ফুটিয়ে যাত্রীদের পরিবেশন করতে বাধ্য হন প্যান্ট্রি কর্মীরা।

কুয়াশার কাছে পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছে রেলও। মন্ত্রকের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘ট্রেন ১৮-২০ ঘণ্টা দেরিতে চললে কোনও ভাবেই খাবারের জোগান দিয়ে ওঠা যায় না।’’ দেড় বেলা খাবারের পরিবর্তে তখন চার বেলার খাবার দিতে হয়। প্যান্ট্রিতে এত খাবার নেওয়ার জায়গা থাকে না। আবার নিয়ম মেনে এর জন্য বাড়তি পয়সাও নেওয়া যায় না। ঠিকাদার সংস্থাগুলি তখন বাধ্য হয় খিচুড়ি পরিবেশনে।

কিন্তু রাজধানী বা দুরন্ত-র মতো প্রিমিয়ার ট্রেন ছাড়া অন্য ট্রেনগুলিতে পরিস্থিতি ভয়ানক হয়ে পড়ে। বিভিন্ন স্টেশনগুলিতে থাকা বেস কিচেনগুলিই তখন ভরসা হয়ে দাঁড়ায়। কিন্তু তাতেও চাহিদা অনুযায়ী জোগান জেওয়া যায় না। আরও অভিযোগ— দেরির ট্রেনে যে খাবার দেওয়া হয়, তার মান ও পরিমাণও হয় খুবই নিম্ন মানের।

দীর্ঘ দিনের এই সমস্যা মেটাতে উদ্যোগী হয়েছে রেল। ঠিক হয়েছে প্যাকেটজাত খাবার পরিবেশনের অভিজ্ঞতা রয়েছে যে সব বেসরকারি সংস্থার, তাদের কিছু সংস্থাকে রেলে খাবার পরিবেশনের বরাত দেওয়া হবে। বর্তমানে বিভিন্ন স্টেশনে ফোন করে বাইরের খাবার আনিয়ে নিতে পারেন যাত্রীরা। নতুন ব্যবস্থায় রেলের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থাকেও দূরপাল্লার চলন্ত গাড়িতেই খাবার বিক্রি করার সুযোগ দেওয়া হবে। যাত্রী কোন খাবার কিনে খাবেন, সেই সিদ্ধান্ত তাঁদের উপরেই ছেড়ে দিতে চাইছে রেল মন্ত্রক।

প্রাথমিক ভাবে যে ট্রেনগুলিতে টিকিটের সঙ্গে খাবারের দাম নেওয়া হয় না, সেগুলিতেই ওই ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে রেল। ফলাফল দেখে তার পর তা প্রিমিয়ার ট্রেনে চালু করার বিষয়ে ভাবছে রেল। মন্ত্রকের পরিকল্পনা হল, আগামী ছয় মাসের মধ্যে ওই ব্যবস্থাকে ঝালিয়ে নিয়ে ফাঁক ফোকর খুঁজে দেখা, যাতে আগামী শীতের আগেই রেল ও বেসরকারি ব্যবস্থার মধ্যে সমন্বয় করে ফেলা সম্ভব হয়। পাশাপাশি ওই সময়ের মধ্যে আইআরসিটিসি-র বেস কিচেনগুলির সঙ্গে সরাসরি বেসরকারি সংস্থার গাঁটছড়া বেঁধে খাবার সরবরাহ করা যায় কি না, সেটাও খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE