উরির সেনা ছাউনিতে হামলার পর জাতীয়তাবাদের ঝড় তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল করে দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে বলেছিলেন, ‘রক্ত আর জল এক সঙ্গে বইতে পারে না!’ একই সঙ্গে ইসলামাবাদকে শিক্ষা দিতে মোদী সরকার জানিয়েছিল— সর্বাধিক সুবিধাপ্রাপ্ত দেশ বা ‘মোস্ট ফেভার্ড নেশন’ (এমএফএন)-এর তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে পাকিস্তানকে।
এগারো মাস অতিক্রান্ত। সিন্ধু জলচুক্তি বাতিল দূরস্থান, এই নিয়ে দু’দেশের যৌথ বৈঠক হয়েছে ইতিমধ্যে। এমএফএন-এর তকমা সরানোর কোনও নামগন্ধ করেনি কেন্দ্র। সম্প্রতি বাণিজ্য বিষয়ক সংসদীয় কমিটির পক্ষ থেকে দ্বিতীয় বিষয়টি নিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের কাছে। সমাজবাদী পার্টির নেতা রামগোপাল যাদবের নেতৃত্বাধীন ওই কমিটি সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে এ ব্যাপারে কোন নীতি নিয়ে চলছে কেন্দ্র? এ কথাও জানতে চাওয়া হয়েছে, যে যদি তকমা প্রত্যাহার করে নেওয়া না-ও হয়, কেন ইসলামাবাদের উপর যথেষ্ট চাপ তৈরি করা হচ্ছে না যাতে তারাও আমাদের একই মর্যাদা দিতে বাধ্য হয়? একটি রিপোর্টও লোকসভায় জমা দিয়েছে ওই কমিটি।
কোনও সন্তোষজনক ব্যাখ্যা কেন্দ্র দিতে পারেনি বলেই সূত্রে জানা গিয়েছে। কারণ সংঘ পরিবার কট্টর লাইন নিয়ে চললেও, কেন্দ্রের পক্ষে চোখ রাঙানোর বাইরে কিছু করা সম্ভব নয়। তার কারণ, ভারত এই চুক্তি বাতিল করে দিলে কাশ্মীরে জটিলতা বাড়বে বই কমবে না। পাকিস্তান আন্তর্জাতিক মহলেও প্রচার করবে যে, ভারতের জন্য পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষ জল পাচ্ছেন না। সব চেয়ে বড় কথা, এর ফলে চিনের হাতে নতুন অস্ত্র তুলে দেওয়া হবে।
কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, আওয়াজ তোলা এক জিনিস, আর সেটা বাস্তবায়িত করা অন্য। ভারতের মোট আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ১ শতাংশও পাকিস্তানের সঙ্গে হয় না। কিন্তু ভূরাজনৈতিক ভাবে এর গুরুত্ব যথেষ্ট ভারতের কাছে। প্রথমত পাকিস্তানকে এমএফএন-এর মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অনুমোদিত। দ্বিতীয়ত, এই ‘উদারতার’ পরিচয় দিয়ে দক্ষিণ পশ্চিম এশিয়ায় নিজেদের ভাবমূর্তি তুলে ধরার বিষয়ও রয়েছে।
বিরোধী শিবির তাই মনে করছে, গর্জনই সার।
(এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় যে মানচিত্র ব্যবহার করা হয়েছিল, তাতে গুরুতর ত্রুটি ছিল। এই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটির জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy