Advertisement
০৪ মে ২০২৪
CV Ananda Bose

রাজ্যপালের বক্তব্য জানতে নোটিস দিল সুপ্রিম কোর্ট

২০২২-এর জুনে বিধানসভায় পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধনী বিল পাশ হয়েছিল। এই বিলে রাজ্যপালের বদলে মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়।

CV Ananda Bose.

রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৪৭
Share: Save:

বিধানসভায় পাশ হওয়ার পরেও পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধনী বিলে সই না করে, হাত গুটিয়ে বসে থাকা নিয়ে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের দফতরের বক্তব্য জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট।

২০২২-এর জুনে বিধানসভায় পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধনী বিল পাশ হয়েছিল। এই বিলে রাজ্যপালের বদলে মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়। তার পরে প্রায় দু’বছর কাটতে চললেও রাজ্যপাল বিলে অনুমোদন দেননি। আজ প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের প্রধান সচিবকে নোটিস জারি করে চার সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়েছে। রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতর ও কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্যও জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত।

এমনিতেই উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাত চলছে। সেই নিয়ে মামলাও সুপ্রিম কোর্টে এসেছে। উপাচার্য নিয়োগের জন্য পাঁচ জনের সার্চ কমিটি গঠনের ব্যবস্থা করেও রাজ্য সরকার বিধানসভায় বিল পাশ করিয়েছিল। রাজ্যপাল সেই বিলেও সই করেননি। এর মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট বিলে সই না-করা নিয়ে রাজ্যপালের বক্তব্য জানতে চাওয়ায় নবান্ন বনাম রাজভবনের দ্বন্দ্ব নতুন মোড় নিল।

শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, সাম্প্রতিক অতীতে বেশ কয়েকটি বিরোধী শাসিত রাজ্যে রাজ্যপালদের সঙ্গে সরকারের বিরোধ বেঁধেছে, বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলে সই না করা নিয়ে। কেরল, পঞ্জাব, তেলঙ্গানা, তামিলনাড়ুর মতো বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলি এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। গত বছর এপ্রিলে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যপালদের বার্তা দিয়েছিল, সংবিধানের ২০০-তম অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাজ্যপালের দায়িত্ব হল যত শীঘ্র সম্ভব বিলে অনুমোদন দেওয়া।

তার পরে নভেম্বরেও তামিলনাড়ু, পঞ্জাবের রাজ্যপালদের ক্ষেত্রে বিল আটকে রাখা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ আপত্তি তুলেছে। শীর্ষ আদালত বলেছে, রাজ্যপাল রাজ্যের প্রতীকী প্রধান। তিনি বিধানসভার আইন তৈরির প্রক্রিয়ায় বাধা দিতে পারেন না। আজ সুপ্রিম কোর্ট পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের বক্তব্য জানতে চাওয়ার পরে এই মামলার আইনজীবী অরুণাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই মামলায় সেই রাজ্যপালের ক্ষমতা সংক্রান্ত বৃহত্তর বিষয়ে চলে গেল। কারণ রাজ্যপালের অনুমোদনের জন্য বিল পাঠানো হলে, তাঁর সামনে তিনটি বিকল্প রয়েছে। এক, তিনি বিলে অনুমোদন দিতে পারেন। দুই, বিল পুনর্বিবেচনার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে ফেরত পাঠাতে পারেন। তিন, রাষ্ট্রপতির কাছে বিল পাঠাতে পারেন। এ ক্ষেত্রে রাজ্যপাল কোনওটিই না করে বিলে সই না করে বসে রয়েছেন।’’

সি ভি আনন্দ বোস বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল আটকে রাখায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-র নেতা সায়ন মুখোপাধ্যায় কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন। সেই মামলায় গত সেপ্টেম্বরে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যপালের দফতরের হলফনামা চেয়ে বিলের অবস্থা জানতে চেয়েছিল।

কিন্তু অক্টোবরে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবগণনমের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছিল, আগের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ কার্যকর হবে না। রাজ্যপালকে হলফনামাও দিতে হবে না। কলকাতা হাই কোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধেই সায়ন শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁর আইনজীবী তার পরে আর এই মামলার শুনানি না হওয়ায় সায়ন সুপ্রিম কোর্টে যান। তাঁর আইনজীবী অরুণাংশু চক্রবর্তী জানান, অক্টোবরের পরে হাই কোর্টে এই মামলার শুনানিও হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের শুনানির পরে তিনি বলেন, ‘‘আমরা শুধু মাত্র হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ অন্য বেঞ্চের রায় কার্যকর করায় বাধা দিতে পারে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছিলাম। সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যপালের বক্তব্য জানতে চাওয়ায় মামলাটি মূল বিষয়ে চলে গেল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

CV Ananda Bose Supreme Court of India West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE